× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এনালিনা; ভালোবাসার অন্য নাম

আপন তারিক

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১২:১৩ পিএম

এনালিনা; ভালোবাসার অন্য নাম

ভালোবাসা, শব্দটি উচ্চারণ করতেই মন কেমন যেন তোলপাড় করে ওঠে। ভালোবাসা অদ্ভুত এক অনুভূতি; এক অপ্রকাশিত ভালো লাগা! যার কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। পাওয়া না-পাওয়া দুটোর মধ্যেও ভালোবাসার বসবাস!

‘ভালোবাসতে শেখো, ভালোবাসা দিতে শেখো, তাহলে তোমার জীবনে ভালোবাসার অভাব হবে না। ভালোবাসা পাওয়ার চেয়ে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।’ এমন অমর বাণী সঙ্গী করেও পথ চলেন অনেকে। যারা ভালোবাসা উজাড় করে দিতেই ভালোবাসেন। ভালোবাসার ভেলায় ভেসে চলেছেন তেমনই এক জুটি। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের পরিচিত দুই মুখ এনায়েত উল্লাহ খান ও এলিনা সুলতানা!

বিয়ের এক যুগ পেরিয়েও উচ্ছল-উজ্জ্বল এই জুটি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রতিদিনের বাংলাদেশের মুখোমুখি হলেন এনায়েত-এলিনা। যাদের ভক্তরা আদর করে ডাকেন এনালিনা নামে! ব্যাডমিন্টন খেলতে খেলতেই তাদের পরিচয়। এরপর পরিণয়। ২০১১ সালের ৮ জুলাই দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে। অথচ সেই সময়ের কথা মনে পড়তেই এনায়েতের মুখে লাজুক হাসি, ‘ওর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা ২০০২ সালে, ওর কোচ পলাশ ভাই তাকে আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন। মজার ব্যাপার হলো, খুলনা থেকে ঢাকা স্টেডিয়ামে এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, এনায়েত ভাই কে? সেখান থেকেই শুরু। আমি তো এমন কথা শুনে হেসে দিয়েছিলাম সেদিন...।’

সেই হাসি আজও অমলিন। মাঝে অবশ্য প্রেমপর্ব বলে তেমন কিছু ছিল না তাদের মধ্যে। অন্তত সেটাই দাবি ব্যাডমিন্টনে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এলিনার, ‘ওর সঙ্গে সেভাবে প্রেমের ব্যাপার ছিল না। যা হয়েছে বিয়ের পর। ওকে আমি বিয়ের পরও এনায়েত ভাই বলে ডাকতাম! ও আমাকে পছন্দ করত, এরপর পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়েছে আমাদের।’ 

আরও পড়ুন: প্লে অফে ‘আপাত’ ব্যর্থ নতুন বিদেশিরা

আরও পড়ুন: রাতে ঢাকায় পা রাখছেন অ্যাথলেটিকসে স্বর্ণ জেতা ইমরানুর

ক্রীড়াঙ্গনের দুটো মানুষ যারা একই ইভেন্ট ব্যাডমিন্টন নিয়ে তারকা খ্যাতি পেয়েছেন, জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তাদের মধ্যে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব কাজ করেনি? সমাজ কীভাবে নিয়েছিল? ২০০১ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড এয়ারলাইনস চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জেতা এনায়েত বলছিলেন, ‘খেলার অঙ্গনে জুটি আসলে কমই আছে। হাশেম ভাই-ডানা আপা, হাতে গোনা জুটি। এটা ক্রীড়াঙ্গনে দারুণ ব্যাপার ছিল। দুজনই ব্যাডমিন্টনে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এক হয়েছিলাম আমরা। এটি গর্বের ব্যাপার ছিল।’

এনায়েত অবশ্য এলিনার প্রশংসাটাই বেশি করলেন। সুখী দাম্পত্যের রহস্য হয়তো এটাই। এলিনা বলছিলেন, ‘ও সব সময় আমার প্রশংসা করে, এটা বেশ ভালো লাগে। আর প্রতিটা মেয়েই তার হাজবেন্ডের কাছ থেকে এমনটা আশা করে। তার সব ভালো লাগাগুলো যেন তার সঙ্গীর ভালো লাগে। তবে সবকিছু যে ভালো লাগতে হবে তা-ও না!’

এমন কথার ফাঁকেই জানালেন, কী নিয়ে এখন ব্যস্ত আছেন দুজন? এনায়েত বলছিলেন, ‘আমাদের এনালিনা নামের একটা ব্যাডমিন্টন একাডেমি আছে। সেটার গাজীপুরে একটা শাখা আছে। সেটা ছাড়াও অফিসার্স ক্লাবে ট্রেনিং করাই। সঙ্গে ব্যবসা তো আছেই।’

এলিনা এখন ব্যস্ত শিক্ষক, ‘আমি মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফিজিক্যাল টিচার হিসেবে আছি। সকালেই উঠেই ব্যস্ততা শুরু, স্কুলে যাই। দুপুর ১২টার দিকে স্কুল শেষে বাসায় ফিরে পুরোটা সময় দিই দুই সন্তানকে। আর সন্ধ্যায় সময় পেলে ফিজিক্যাল অ্যক্টিভেটিজে ব্যস্ত থাকি। আমি বাংলাদেশ আনসারের সঙ্গেও যুক্ত আছি।’

আরও পড়ুন: মৌসুমের ‘সবচেয়ে কঠিন’ ম্যাচ পিএসজির

আরও পড়ুন: মার্সিসাইড ডার্বিতে লিভারপুলের টিকে থাকার জয়

সংসার শুরু করেছিলেন দুজনে। এখন তাদের জীবনে আরও দুইজন। পুত্র-কন্যা। এনায়েত জানাচ্ছিলেন, ‘আমার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে ওমর আলি খান আরশ ও কন্যা আশিকা। মেয়ে ক্লাস ফোরে। ছেলে ১ বছর ৮ মাস।’

তাদের বন্ধনটা মজবুত করেছে দুই সন্তান। সুখী দম্পতি হয়ে ওঠার রহস্যটা এনায়েত বলছিলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের প্রধান যে ব্যাপারটা দরকার, সেটি হলো বিশ্বাস। যেখানে বিশ্বাস থাকে না, সেটাকে আসলে সংসার বলা যায় না। একজনের আরেকজনের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত। সবচেয়ে বড় যে ব্যাপার, সেটা হলো সেক্রিফাইস, সেটিও থাকা উচিত। এসব কিছুর সঙ্গে বন্ধনটা মজবুত করে দেয় সন্তান।

এনায়েতের কথা শেষ হতেই এলিনা বলে উঠলেন, ‘বর্তমানে অনেক রকম মেয়ে আছেন। সঙ্গী বাছাই করতে গিয়ে অনেকে আর্থিক দিক প্রথম পছন্দ রাখেন। এক্ষেত্রে বলব, মেয়েদের সর্বপ্রথম যে দিকটা দেখা উচিত সেটি হলো সে বিশ্বস্ত কি না। হাজবেন্ডকে যদি সে বিশ্বাস করে আর হাজবেন্ড যদি সে বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারে তবে কোনো সংসারে আর প্রবলেম থাকবে না। টাকাপয়সা কারও কম থাকবে কারও বেশি থাকবে। এটা মেনে নিতেই হবে। ভালোবাসা আর বিশ্বাস এটা থাকতে হবে।’

এলিনা সেক্রিফাইসের একটা সংজ্ঞাও দিলেন, মানুষ ভুল করতেই পারে। তাকে একটা সুযোগ দিতে হবে। যদি কেউ ভুলবশত কোনো ভুল করে থাকে, তাকে একটা সুযোগ দেওয়া উচিত।

চারদিকে যখন ভাঙনের সুর, একুশ শতক পেরিয়ে যখন সম্পর্কের আয়ু কমেই চলছে তখন এভাবে ভাবতে যারা পারেন, তারাই তো হাসিখুশিতে পার করে দিতে পারেন একটা জীবন! যেমনটা এলিনা-এনায়েতের সংসার। রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় সংসার পেতেছেন দুজন। দুই সন্তান নিয়ে তাদের ঘরে যেন সুখ উপচে পড়ছে! ভালোবাসার ভেলায় ভেসে সুখের রাজ্যে দুজন। 

কে বলে ভালোবাসার সংজ্ঞা হয় না? এলিনা-এনায়েতের অন্য নামই তো ভালোবাসা!

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা