প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৩ ১২:২৯ পিএম
ম্যাচের প্রকৃতিটাই এমন। হারলেই বিদায়। আগের ম্যাচটাও এমনই ছিল। মালদ্বীপের ক্লাব ঈগলসের বিপক্ষে ম্যাচটা আবাহনী শেষ সময়ের ভেলকিতে জিতেছিল ২-১ গোলে। তার আগে অবশ্য কোচ মারিও লেমোস জানিয়েছিলেন, ম্যাচটা তার দলের কাছে ‘ফাইনাল’।
আরও পড়ুন :হাথুরুসিংহের পথেই হাঁটলেন কাবরেরা
প্রাথমিক পর্বের সে ম্যাচ যদি ফাইনাল হয়, তাহলে তো আজকের ম্যাচটা আরও বেশি করে ‘ফাইনাল’ হওয়া উচিত। মোহনবাগানের বিপক্ষে ম্যাচটা জিতলেই যে মিলে যাবে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বের টিকিট ২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো!
তবে এ ম্যাচের জন্য আবাহনীকে ঝক্কিটা কম পোহাতে হয়নি। ভিসা পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে বেশ। সে অপেক্ষা শেষ হয়েছে গত রবিবার। দলকে তাই কলকাতা যেতে হয়েছে গতকাল সোমবার, ম্যাচের ৩৬ ঘণ্টা আগে। কলকাতা নেমে দম ফেলারও ফুরসত নেই তাদের। বেলা আড়াইটায় সংবাদ সম্মেলন, এরপরই নেমে পড়তে হয়েছে অনুশীলনে। ম্যাচ যে আর এক দিন পর!
লক্ষ্য একটাই, মোহনবাগানের বিপক্ষে একটা জয়। কাজটা সহজ নয়। গেল আসরে এই প্লে অফেই আবাহনী মুখোমুখি হয়েছিল এই মোহনবাগানের। সেই ম্যাচটায় আবাহনী বিদায় নিয়েছিল ৩-১ গোলে হেরে। সে ম্যাচের আগে দলের প্রাণভোমরা দরিয়েলতন গোমেজ পড়েছিলেন চোটে, মাঝমাঠ থেকে আবাহনী খোয়ায় ইমন বাবু আর হৃদয়কেও।
এবারের দ্বৈরথের আগে অবশ্য আবাহনী বেশ চনমনে। ঈগলসের বিপক্ষে ওই শ্বাসরুদ্ধকর জয়ের পর তো বটেই। মোহনবাগানের মুখোমুখি হওয়ার আগে দলটি নিয়ে কোচ মারিও লেমোসের মূল্যায়ন, ‘জেসন কামিন্স, হুগো বুমো, লিস্টন কোলাচো যারা আক্রমণভাগে খেলে, তাদের সবাই দারুণ খেলোয়াড়। তাদেরকে আমাদের ভালোভাবে পাহারায় রাখতে হবে। তাদের স্পেস ছেড়ে দেওয়া যাবে না, কারণ সেটা হলে তাদের যে মানের খেলোয়াড় আছে, তাতে আপনাকে তার মাশুল গুনতে হবে।’
ঈগলসের বিপক্ষে ম্যাচে আবাহনীকে বেশ আক্রমণ শানাতে দেখা গিয়েছিল। তবে মোহনবাগানের শক্তিমত্তার কথা মাথায় রেখেই কোচ মারিও লেমোস খানিকটা রক্ষণাত্মক কৌশলে এগোনোর ইঙ্গিত দিলেন। তার কথা, ‘ঈগলস ম্যাচ থেকে এই ম্যাচটা একটু ভিন্নই হতে যাচ্ছে। কারণ ওরা নিজেদের মাঠে খেলছে, দুটো দল আলাদা, তারা আরও বেশি আক্রমণাত্মক। তো আমাদের রক্ষণাত্মকভাবে আরও বেশি নিখুঁত হতে হবে। একটু বেশি নিচে নামতে হবে। ঈগলস ম্যাচের মতো বেশি বেশি ঝুঁকিও নেওয়া চলবে না এ ম্যাচে।’
সব মিলিয়ে মোহনবাগানকে বেশ নিখুঁতই মনে হচ্ছে আবাহনী কোচের। তার কথা, ‘তারা আইএসএল চ্যাম্পিয়ন, দারুণ সব খেলোয়াড়ে ভরা তাদের দল, আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জটা বিশালই হবে।’
ম্যাচের আগে মোহনবাগান শিবিরে অসন্তোষের কথাও জানাচ্ছিল কলকাতার সংবাদমাধ্যম। আবাহনী এএফসি কাপের ঠিক আগে দলে ভিড়িয়েছে বেশ কিছু বিদেশি খেলোয়াড়কে, আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের অসন্তোষের কারণ ছিল সেটাই। যদিও আবাহনীকর্তা সত্যজিত দাস রুপু জানিয়েছিলেন, নিয়ম মেনেই দলে ভেড়ানো হয়েছে সবাইকে।
তবু সংবাদ সম্মেলনে বিদেশি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল কোচ লেমোসকে। তবে আবাহনী কোচের কথা, ‘দলে এত বিদেশি কেন, এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল আমাকে। এএফসি কাপে প্রতিটা দল ছয়জন বিদেশি খেলাতে পারে। তো আমরাও এ কারণেই দলে এত বিদেশি ভিড়িয়েছি।’
জনাথন রেইসকে এএফসি কাপের ঠিক আগে দলে ভিড়িয়েছিল আবাহনী। ঈগলস ম্যাচে অবশ্য তাকে স্কোয়াডে রাখা হয়নি। সেই তাকে মোহনবাগান ম্যাচে পাচ্ছে দলটি।
আজ রাত সাড়ে সাতটায় বিশ্বভারতী স্টেডিয়ামে আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হবে আবাহনী। তার আগে পুরো শক্তির দলকেই পাচ্ছেন কোচ লেমোস।