প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৩ ১০:০৭ এএম
বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আছেন ২১ ক্রিকেটার। চুক্তিবদ্ধ সবাইকে কী নিয়মিত দেখা যায় দলে? এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই হয়তো বলবেন– হ্যাঁ। কিন্তু উত্তরটা হল– না। চুক্তিবদ্ধ ২১ ক্রিকেটারের মধ্যে তিনজনকে দেখা যাচ্ছে না জাতীয় দলে। তারা হলেন– মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নুরুল হাসান সোহান ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
আরও পড়ুন : শোক দিবসে বিসিবির যত আয়োজন
জাতীয় দলের জার্সিতে অনিয়মিত এই তিন ক্রিকেটার কী বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকবেন? সেই প্রশ্নই জেগেছে এখন ক্রিকেট পাড়ায়। বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, আপাতত সেই ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
২০২২ সালে টেস্টকে বিদায় জানান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। একই বছর টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েন। গত বছর টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়া রিয়াদকে চলতি বছরের জন্য শুধু বিসিবির ওয়ানডে চুক্তিতে রাখা হয়েছে। ওয়ানডে ফরম্যাটের চুক্তিতে থাকলে চলতি বছরের মার্চ থেকে দলের সঙ্গে নেই রিয়াদ। তাকে বাদ দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল ‘বিশ্রাম’ দেওয়া হয়েছে।
সেই ‘বিশ্রাম’ শেষে এখনও তার ফেরা হয়নি জাতীয় দলে। এশিয়া কাপে খেলা হবে না তার। বিশ্বকাপ দলেও তাকে পাওয়া যাবে কি না সেটা নিয়েও আছে আশঙ্কা। এশিয়া কাপের দলে সুযোগ না পাওয়া রিয়াদ জাতীয় দলের বাইরে আছেন পাঁচ মাস। মাঝে এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে ডাক পেলেও মেলেনি এশিয়া কাপে খেলার টিকিট।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের চেয়ে শোচনীয় অবস্থা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও নুরুল হাসান সোহানের। আবাহনীকে ডিপিএল শিরোপা জেতানো অধিনায়ক সৈকত চলতি বছর জাতীয় দলের হয়ে খেলেননি কোনো ম্যাচ। এমন কী কোনো সিরিজের দলেও ডাক পাননি।
এশিয়া কাপের আগে প্রাথমিক দলে চুক্তিবদ্ধ সকল ক্রিকেটারের ডাক পড়ে। সেই সুবাদে সৈকত ছিলেন এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে। চলতি বছর জাতীয় দলের জার্সিতে কোনো ম্যাচ না খেলা সৈকতের নাম আছে বিসিবির টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে।
সৈকতের মতো দলে জায়গা হারান নুরুল হাসান সোহান। ২০২২ সালে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। চলতি বছরে বিসিবির টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে ফরম্যাটের চুক্তিতে তার নাম আছে।
সৈকতের মতো সোহানকেও চলতি বছর দেখা যায়নি বাংলাদেশ দলের জার্সিতে। এমন কী সৈকতের মতো তাকেও ডাকা হয়নি কোনো দলে। কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার হলেও এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে জায়গা মেলেনি তার।
সাধারণত আগের বছরের পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে নতুন বছরের কেন্দ্রীয় চুক্তি করে বিসিবি। ফলে চলতি বছরের কেন্দ্রীয় চুক্তির জন্য বিবেচ্য হয়েছে ২০২২ সালের পারফরম্যান্স। গত বছর তিন ক্রিকেটারকে প্রায় নিয়মিত দেখা গেছে জাতীয় দলের জার্সিতে। চলতি বছর অবশ্য দল থেকে ব্রাত্যই হয়ে পড়েছেন এই তিন ক্রিকেটার।
তাদের মতো একরকম ব্রাত্য তালিকায় আছে পেসার খালেদ আহমেদের নাম। তাসকিন আহমেদের ইনজুরির কারণে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে খেলার সুযোগ মেলেছিল তার। বাকি ম্যাচগুলোতে একাদশে জায়গা না মিললেও দলের সঙ্গে ছিলেন খালেদ।
এমন অনিয়মিত কিংবা পারফর্ম না করা ক্রিকেটাররা যাতে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে না থাকে সেই জন্য ছয় মাস পর চুক্তি রিভিউ করার কথা ছিল বিসিবির। সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এই ধরনের কোনো কাজ করেনি বিসিবি।
বিষয়টি নিয়ে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের সঙ্গে যোগাযোগ করে হলে তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, ‘চুক্তিতে থাকলে দলে থাকতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই। তাদের চুক্তি নিয়ে আপাতত কিছু ভাবা হচ্ছে না।’
চুক্তিতে থাকার পরও দলে জায়গা না পাওয়া ক্রিকেটারদের তালিকায় আছে শেখ মাহেদির নাম। বিপিএলে কাঁধের চোটে পড়ায় অবশ্য তাকে পাওয়া যায়নি। সেই চোট কাটিয়ে এশিয়া কাপের দলে ফিরেছেন এই অলরাউন্ডার। চুক্তিতে থাকা ২১ ক্রিকেটারের মধ্যে সবচেয়ে কম মাত্র এক ম্যাচ খেলেছেন পেসার খালেদ আহমেদ।
তার সমান একটি মাত্র ম্যাচ খেলেছেন ওপেনার জাকির হাসান। ইনজুরি বাধা না হলে চলতি বছর জাতীয় দলের জার্সিতে তার নামের পাশে থাকতে পারত আরও বেশ কয়েকটি ম্যাচ।