শেষ আট ম্যাচে গড় ৮.১৩!
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৩ ১৫:৫৬ পিএম
শেষ কিছুদিন ধরেই আফিফ হোসেনের ব্যাটে রান ছিল না। যে কারণে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে আর ইংল্যান্ডে দুই সিরিজে দলে রাখা হয়নি। ছোট্ট বিরতি শেষে আবারও আফিফ ফিরেছেন জাতীয় দলে। তবে তিনি ফিরলেও তার ব্যাটে রান ফেরেনি। আফগানিস্তান সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচেও বিদায় নিয়েছেন দুই অঙ্কে পৌঁছার আগেই।
আরও পড়ুন : ফারুকির ফাঁদে বাংলাদেশ
প্রথম ম্যাচের কথাই ধরুন। বাংলাদেশ ধুঁকছিল তখন। মুশফিকুর রহিমের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন আফিফ। তবে রশিদ খানের স্পিনে কাবু হয়ে ফেরেন সহসাই। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশের পরিস্থিতিটা তেমনই ছিল, বেসামাল। আফিফ এবারও হন ব্যর্থ। আগের ম্যাচে তা-ও ৮টা বল খেলেছিলেন। শনিবার তাও পারেননি। ফিরেছেন রশিদ খানের প্রথম বলেই।
আফিফের ব্যাটে এমন রানখরা অবশ্য নতুন কিছু নয়। গত বছর আগস্টে বাংলাদেশের জিম্বাবুয়ে সফরে তিনি পেয়েছিলেন সবশেষ ফিফটিটা। এরপর থেকে তার ব্যাটে রান যেন ফোনের ডিজিট। ৬, ০, ৮, ৯, ২৩, ১৫, ৪, ০। সর্বোচ্চ রান ২৩; গড়টাও তাই যাচ্ছেতাই, ৮.১৩।
সব ফরম্যাট মিলিয়ে এই ব্যাটারের সবশেষ ফিফটিটা গেল সেপ্টেম্বরে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৭৭ রানের ইনিংস। ওয়ানডের সঙ্গে যদি টি-টোয়েন্টিকেও ধরা হয়, তাহলেও তার পরিসংখ্যানটা পড়তির দিকেই। সব ফরম্যাট মিলিয়ে সবশেষ ১০ ইনিংসে তার রান মোটে ৮২।
ক্যারিয়ারের শুরুটা অবশ্য এমন ছিল না তার। শুরুর ১৬ ওয়ানডে ইনিংসে তার ব্যাট থেকে ৪৩.৭২ গড়ে এসেছিল ৪৮১ রান। এই রানের সিংহভাগই তিনি করেছেন সাত নম্বরে ব্যাট করে। সাতে ব্যাট করে ১৭ ইনিংসে তিনি ২৬.৮৫ গড়ে করেছেন ৩৭৬ রান, এ রান তিনি করেছেন ৮৪.৬৮ স্ট্রাইক রেটে।
তবে তার সেরা ইনিংসটা এসেছে ৬-এ নেমে। গেল বছর আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ছয়ে নেমে খেলেছিলেন অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংস। তিন ইনিংস খেলে এ পজিশনে তিনি করেছেন ১৩৯ রান। আউট হয়েছেন একবার, তাই গড়টাও ওই ১৩৯-ই, এ রান তিনি করেছেন ১০৩ স্ট্রাইক রেট নিয়ে। এমনসব তথ্য-উপাত্ত সাক্ষ্য দিচ্ছে, পজিশন দুটোয় নেহাত খারাপ করেননি আফিফ।
এরপরও অবশ্য লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করা তার পছন্দের জায়গা ছিল না। যে কারণে শেষবার দল থেকে জায়গাও হারাতে হয়েছিল তাকে। তবে ফিরে এসে সেই সাতেই ব্যাট করতে হয়েছে তাকে। ‘বিরতিটা’ অবশ্য দুঃসময়টা পেছনে ফেলতে সাহায্য করেনি তাকে। আফগানদের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডেতেই ওভাবে দ্রুত সাজঘরে ফেরা বলছে তাই।
স্পিনে দুর্বলতা ছিল আগেই। বিশেষ করে লেগস্পিনে। ডানহাতি লেগিদের বিপক্ষে পুরো ক্যারিয়ারে ৯০ ছোঁয়া স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করলেও তিনি আউট হয়েছেন ১৩ বার, গড়টা বিশের আশপাশে। পুরোনো সে ‘রোগ’ এই সিরিজেও ভুগিয়েছে তাকে, আউট হয়েছেন সেই ডানহাতি লেগস্পিনেই। ব্যাটে রান ফেরেনি, আউটও হয়েছেন সেই পুরোনো দুর্বলতা থেকেই, যার মানে দাঁড়াচ্ছে, আফিফের সমস্যাটা রয়েই গেছে এখনও।
বিশ্বকাপের আর ১০০ দিনও বাকি নেই। এশিয়া কাপও আছে তার আগে। বড় এই দুই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে একাদশের বেশ কিছু জায়গা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে বাংলাদেশ দলে। সাত নম্বর জায়গাটা তারই একটা। সবশেষ আফিফও পরীক্ষায় উতরে যেতে পারলেন না। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে যা দলকে অশনিসংকেতই দিচ্ছে বৈকি!