প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৩ ১৫:৩৪ পিএম
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৩ ১৫:৩৪ পিএম
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ফজলহক ফারুকির বলে আউট হন তামিম ইকবাল। গত বছর আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও তামিমের ছিল ফারুকি-জুজু। ঠিকঠাক সামলাতে না পারায় আফগানদের বিপক্ষে টানা চার ওয়ানডেতে ফারুকির বলে আউট হন।
আরও পড়ুন : দুই হারে সমস্যা দেখছেন না পোথাস
তামিমের মতো বাংলাদেশের পুরো দলের জন্যই জুজু হয়ে উঠেছেন ফজলহক ফারুকি। ১৫ ওয়ানডের ছোট্ট ক্যারিয়ারে ফারুকি পকেটে পুরেছেন ২৫ উইকেট, যার প্রায় অর্ধেক উইকেট বাংলাদেশের বিপক্ষেই। লাল-সবুজ জার্সিধারীদের বিপক্ষে ৫ ম্যাচে তার শিকার ১২ উইকেট। ছোট্ট এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে বাংলাদেশের বিপক্ষে কতটা ভয়ংকর হয়ে ওঠেন এই বাঁহাতি পেসার।
২০২২ সালে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে ঝলক দেখান ফজলহক ফারুকি। বাংলাদেশের বিপক্ষে শিকার করেন ৪ উইকেট। ধস নামান বাংলাদেশের ব্যাটিংলাইনে। আফিফ হোসেন ও মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচে জিতে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। পরের দুই ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে অবশ্য একটি করে উইকেট নেন। সিরিজের তিন ম্যাচে ফারুকির শিকার ছিলেন তামিম ইকবাল। প্রথম দফায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬ উইকেট নেন।
বাংলাদেশ সিরিজের পর ফারুকির ওপর প্রত্যাশার পারদ বেড়েছে। তবে ওই অনুযায়ী করতে পারেননি ঠিকঠাক পারফর্ম। ফের বাংলাদেশ সফরে এসে অবশ্য স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন ফজলহক ফারুকি। পুরো সিরিজ শেষের আগেই তার পকেটে এখন বাংলাদেশের ৬ উইকেট। দুই ম্যাচে তার শিকার সমান তিনটি করে উইকেট।
এমন বোলিংয়ের পর প্রশংসায় ভাসা ফারুকি কি বাংলাদেশের জন্য ধাঁধা? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। সুইং, গতির সঙ্গে উইকেটের সুবিধা নিয়ে বলে যুক্ত করতে পারেন মুভমেন্ট। তাতেই মূলত বাংলাদেশের বিপক্ষে সফল। এ ছাড়া নিয়মিত বলের লাইন পরিবর্তন করার সক্ষমতাও এগিয়ে রেখেছে ফারুকিকে। বলের লাইন পরিবর্তনের ওই সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ব্যাটারদের দুর্বল জায়গায় বল ফেলেন।
তার শক্তির এই জায়গাগুলো এ বাঁহাতি পেসারের জন্য সাফল্যের অন্যতম বড় নিয়ামক। বাংলাদেশের বিপক্ষে তার বোলিং বিশ্লেষণে সাবেক পেসার তারেক আজিজ বলেন, ‘ফারুকি নিজের পুরো সামর্থ্যটাই উজাড় করে দিয়েছেন। ব্যাটারদের পরীক্ষার মুখে ফেলতে বারবার পরিবর্তন করেছেন বলের লেন্থ।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘কিছুটা ব্যাক অব লেন্থে বল করেছেন ফারুকি। সঙ্গে কিছুটা সুইং ছিল। তাতেই মূলত ব্যাটাররা খেই হারিয়ে ফেলেছেন।’ বাংলাদেশি ব্যাটারদের ফাঁদে ফেলতে দুই ম্যাচে ৭ থেকে ৮ মিটার লেন্থের মধ্যে বল করেছেন ফারুকি। এটাকেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ফারুকির সাফল্যের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন তারেক আজিজ।
বিষয়টি নিয়ে সাবেক এই পেসার বলেন, ‘ফারুকি বেশিরভাগ বলই করেছেন ৭-৮ মিটার লেন্থে। লেন্থের এই পরিবর্তনের কারণে ব্যাটাররা বলের লাইন ঠিকঠাক বুঝতে পারেননি। বল মিস করে আউট হয়েছেন।’ তবে ব্যাটারদের বড় শটের প্রলোভন দেখিয়ে আউট করতে ভিন্ন টেকনিকের পথে হাঁটেন ফারুকি।
সে সময় বলের লেন্থ আরেকটু সামনে এগিয়ে নেন ফারুকি। তখনই বড় শটের প্রলোভনে পড়ে আউট হন বাংলাদেশি ব্যাটাররা। এই নিয়ে তারেক বলেন, ‘ফারুকি ব্যাটারদের ক্যাচ আউট করতে বলের লেন্থ একটু সামনে এগিয়ে নিয়েছেন। তখনই লিটন-নাঈমরা বড় শট করেছেন। সেটাই মূলত ক্যাচ আউট করে দিয়েছে তাদেরকে।’
তবে ফারুকির পাশাপাশি আফগানদের অন্য বোলারদের প্রশংসাও ছিল এই সাবেক ক্রিকেটারের কণ্ঠে। মুজিব উর রহমান ও রশিদ খানরাও নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন বলে জানান। মুজিব ও রশিদের প্রশংসায় তার ভাষ্য, ‘মুজিব বল বেশ ভালোভাবে ভেতরে ঢোকানোর চেষ্টা করেছেন। তাতে মূলত আউট হয়েছেন শান্ত। রশিদ বাংলাদেশি ব্যাটারদের ভালোমতো আটকে রেখেছেন নিজের বোলিং কৌশলের মাধ্যমে। ও নিজের লাইনের সঙ্গে গুগলি ও অন্যান্য ডেলিভারিতে বাংলাদেশি ব্যাটারদের আটকে রেখেছেন। সব মিলিয়ে পুরো বোলিং ইউনিটের কাছে বাংলাদেশ অসহায় ছিল।’
আফগানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডে হেরেছে বাংলাদেশ। এতে লিটন-সাকিবদের সিরিজ হার নিশ্চিত হয়েছে। আগামীকাল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল।