ব্রাজিল-জার্মানির হয়েছেটা কী

বিশ্বকাপ শিরোপায় একে অন্যকে ছাড়িয়ে যেতে টেক্কা দেবেন; তা না দল দুটি ঘুরপাক খাচ্ছে হারের বৃত্তে। রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল ও চারবারের বিশ্বকাপজয়ী জার্মানির বর্তমান অবস্থাটা এমনই। ব্যর্থ কাতার বিশ্বকাপের পর থেকেই হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে দল দুটি।

আরও পড়ুন : জেল থেকে আলভেজ

এ সময় ফিফার তিন প্রীতি ম্যাচের দুটিতেই হেরেছে ব্রাজিল। অন্যদিকে জার্মানরা সবশেষ ১১ ম্যাচে জয় পেয়েছে মোটে ৩টিতে। এখন প্রশ্ন হলো- সাবেক দুই বিশ্বকাপজয়ীর হয়েছেটা কী? কেন বারবার এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সে চিন্তার ভাঁজ বাড়াচ্ছে দল দুটি।

ব্রাজিলের মূল সমস্যাটা টিম কম্বিনেশনে। নেইমারবিহীন দলকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারছেন না আপৎকালীন কোচ র‌্যামন মেনেজেস। তিনি হাঁটছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে। তাতে দলে থিতু হতে পারছেন না অ্যান্টনি-রাফিনিয়ার মতো উদীয়মান তারকারা।

অন্যদিকে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে দারুণ সময় পার করা অ্যালেক্স সানদ্রো, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, মার্টিনেল্লি না থাকায় মধ্যমাঠে এর প্রভাব পড়ছে। তা ছাড়া নেইমার না থাকায় মনোবলেও যথেষ্ট ঘাটতি আছে দলটির। তবে এসব একপাশে রেখে ব্রাজিলের মূল সমস্যাটা কোচে।

তিতে দায়িত্ব ছাড়ার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও একজন কোচ নিয়োগ দিতে পারেনি ব্রাজিল। সে জায়গায় বেশ কিছু নাম শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত করা যায়নি কাউকেই। শোনা গেছে কোচ হওয়ার তালিকায় ছিলেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি, হোসে মরিনহো ও জিনেদিন জিদানের নাম। তবে কেউই তেমন আগ্রহ দেখাননি ব্রাজিলের কোচ হতে। বাধ্য হয়ে তাই মেনেজেসেই কাজ চালাতে হচ্ছে ব্রাজিলকে। অন্যদিকে তারকাঠাসা দল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্রাজিল কোচ। বিশ্বকাপের পর তিন প্রীতি ম্যাচে মোট ১১ জনকে অভিষেক করিয়েছেন মেনেজেস। সব মিলিয়ে অনেকটা পরিকল্পনাবিহীনই এগোচ্ছে ব্রাজিল। যার দায় চুকাতে হয়েছে মরক্কো ও সেনেগালের বিপক্ষে হেরে। দ্রুত এ বিষয়গুলো সমাধান না করলে সামনে দলটির জন্য আরও বড় বিপদই অপেক্ষা করছে।

জার্মানদের সমস্যাটা অন্য জায়গায়। রাশিয়া বিশ্বকাপের পর কাতার বিশ্বকাপেও প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিতে হয় তাদের। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচেও ফলটা একই। সবশেষ পাঁচ ম্যাচের মাত্র একটিতে জিতেছে জার্মানি। সেটিও আবার পেরুর বিপক্ষে।

এই ম্যাচগুলোর তিনটিতেই হেরেছে তারা, ড্র করেছে একটি। মঙ্গলবার রাতে কলম্বিয়ার বিপক্ষেও ২-০ গোলে হারতে হয়েছে জার্মানিকে। এমন পরিস্থিতিতে চাকরি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন দলটির কোচ হানসি ফ্লিক।

তবে এসব পেছনে ঠেলে ঘরের মাঠে ইউরোর আগে ঘুচিয়ে ওঠার কথা শুনিয়েছেন ফ্লিক, ‘এই পর্বে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানো প্রয়োজন। সেপ্টেম্বরে আমাদের ভিন্ন পারফরম্যান্স করে দেখাতে হবে। আমরা ভিন্ন একটি দলকেই তখন দেখতে পাব। ফলও আসা শুরু করবে। আমরা নিশ্চিত যে আমাদের ভালো দল এবং ভালো খেলোয়াড় আছে।’

এখন অপেক্ষা কথা ও কাজের মিল দেখানোর। এসব নিয়ে ভেবে নিশ্চয় সময়টা কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন ব্রাজিল ও জার্মানির কোচ। সেই সঙ্গে ঘুরে দাঁড়াবে আগামীতে।