× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এবার একটু মানসিক শান্তি চাই

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৩ ১০:১৩ এএম

আপডেট : ০৯ জুন ২০২৩ ১০:১৯ এএম

এবার একটু মানসিক শান্তি চাই

ইউরোপ ছাড়ছেন লিওনেল মেসি। তবে তার আগে শেষ একটা আশায় ছিলেন বার্সেলোনায় ফেরার। শেষমেশ অবশ্য তা আর সম্ভব হয়নি। কেন হয়নি? তার পেছনে কী কারণ ছিল? ইউরোপ ছেড়ে যাচ্ছেন কেন? এসব তো আছেই, আরও অনেক কারণ নিয়েই সম্প্রতি মেসি কথা বলেছেন স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো ও স্পোর্তের সঙ্গে। সেই সাক্ষাৎকারের সারসংক্ষেপ প্রতিদিনের বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

মেসির এখন কেমন লাগছে?

ভালোই। অদ্ভুত একটা মৌসুম শেষ হলো; বিশ্বকাপ হলো মাঝপথে, যেটা সব পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। এখন স্রেফ জাতীয় দলের খেলা আর আসন্ন ছুটিটা নিয়ে ভাবছি।

আরও পড়ুন : ইউরোপ ছেড়ে আমেরিকায় মেসি

মৌসুম শেষ মানে প্যারিসেও আপনার শেষ, সংখ্যাগুলো মন্দ নয়। পিএসজির যাত্রাটা শেষ করে আপনার অনুভূতি কী?

মিশ্র অনুভূতি। প্রথম বছরটা খুব কঠিন ছিল। দ্বিতীয় বছরটার প্রথম ছয় মাস ক্লাবে, শহরটাতে আমার পরিবার নিয়ে খুব ভালো লাগছিল। মাঝে বিশ্বকাপ এলো, যা আমার মনে হয় সব ক্লাবেই কিছু না কিছু প্রভাব ফেলেছে। মৌসুমটা ভিন্নভাবে শেষ করতে চেয়েছিলাম। তবে দুই বছর শেষ, যা আমার জন্য কিছুটা কঠিন ছিল, এখন এটা অতীত।

বার্সা নিয়েও কথা বলতে এসেছি আমরা। কেমন মিস করেছেন বার্সাকে? 

হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি বলছিলাম, সব কিছু মিলিয়ে প্রথম বছরটা প্যারিসে অনেক কঠিন কেটেছে। তবে আমি বার্সার খোঁজখবর রেখেছি, ম্যাচ দেখেছি, পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করেছি।

লিগ জেতার পর সব বার্সা সমর্থকের মতো খুশি হয়েছিলেন নিশ্চয়ই!

হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি সব বার্সেলোনা সমর্থকের মতোই বার্সার জয় চেয়েছি। প্রথম বছরেও আমি জাভির সঙ্গে কথা বলেছি, ম্যাচ নিয়ে, পরিস্থিতি নিয়ে… সত্যটা হচ্ছে আমরা অনেক কথা বলেছি, আমি বার্সার খোঁজখবর রেখেছি নিয়মিত।

ফেরার সম্ভাবনা ছিল, কথা হচ্ছিল এ নিয়ে। আপনি কি আপনার সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিয়েছেন?

হ্যাঁ, সত্যটা হচ্ছে, আমি সব সময়ই ফিরতে চেয়েছি, এ নিয়ে রোমাঞ্চিতও ছিলাম। কিন্তু অন্যদিকে, এর আগে আমার যা অভিজ্ঞতা হয়েছিল, যেভাবে আমার ক্লাব ছাড়তে হয়েছিল, একই পরিস্থিতিতে আরও একবার পড়তে চাইনি আমি, কী হয় তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে আরেকজনের হাতে নিজের ভাগ্য তুলে দেওয়া, সেটা চাইনি। নিজের সিদ্ধান্তটা নিজে নিতে চেয়েছি, নিজের, পরিবারের কথা ভেবে। লা লিগা সবকিছু মেনে নেওয়ার পরও অনেক কিছু বাকি ছিল; খেলোয়াড় বেচতে হতো, বেতন কমাতে হতো… এমনটা আমি চাইনি। বার্সেলোনায় এর আগেও আমার ক্যারিয়ারে এমন অনেক অভিযোগই কাঁধে নিতে হয়েছে, যাতে আমার হাত ছিল না মোটেও, আমি এসব দেখতে দেখতে ক্লান্ত ছিলাম, এমন কিছুর মধ্য দিয়ে আবারও যেতে চাইনি।

বার্সায় ফিরতে পারলে খুব ভালো লাগত, কিন্তু এটা হচ্ছে না। আর জীবনের এমন সময়ে এসে দাঁড়িয়েছি, যখন এসে সব গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে চলে যেতে চাইছি, পরিবার নিয়ে আরও ভাবতে পারব তাহলে।

এসব কারণের ভেতর কোনটা আপনাকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে?

নিজের সিদ্ধান্তটা নিজে নিতে চেয়েছি। আবারও অপেক্ষা করতে চাইনি, যা দুই বছর আগে হয়েছিল। বিশ্বকাপ জেতার পর আমার সবকিছু অর্জন করা হয়ে গেছে, এজন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ; এরপর থেকে যা আমি সবচেয়ে বেশি চাইছিলাম, তা হচ্ছে মানসিক প্রশান্তি। 

পরিবার আপনাকে কী বলেছে? তারা তো সময় পেলেই বার্সেলোনায় চলে আসে!

আমার পরিবার রোমাঞ্চিত ছিল। তবে বাস্তবতা বোঝার পর সে রোমাঞ্চ উবে গিয়েছিল। তবে তারা ফিরতেই চাইছিল। আমরা তো কখনও বার্সেলোনা ছাড়তেই চাইনি, এটা বেশ কঠিন ছিল। তবে তারা আমাকে সমর্থন দিয়েছে, এটা এমন একটা সিদ্ধান্ত যা নিতে হয়েছে পারিবারিকভাবে, আমার একার সিদ্ধান্ত এটা নয়। 

ক্লাব থেকে বলা হচ্ছিল আপনার ওপরই আপনার ফেরা ৯৯ শতাংশ নির্ভর করছে। বিষয়টা কীভাবে দেখেছেন?

আমি সবকিছুই শুনেছি। লা লিগা অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু এটা সত্যি নয় যে সবকিছু আমার ওপর নির্ভর করছিল, কারণ সেখানে অনেক কিছুর অভাব ছিল; অনেক লম্বা একটা গ্রীষ্ম পড়ে আছে সামনে, আমি আবারও ওসবের মধ্য দিয়ে যেতে চাইনি। তাই আমি আগে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি। এখন শান্ত মনে ছুটি, ভবিষ্যৎ, আর তার পরিকল্পনা করতে পারব।

গণমাধ্যমে যে খবর আসছিল, সেটা কি আপনাকে চাপে ফেলেছে?

অনেক কথাই বেরিয়ে এসেছে; তবে না, সেসব আমাকে প্রভাবিত করেনি। অনেক খবর আসছিল, কেউ কেউ তো আমাকে সৌদি আরবেও পাঠিয়ে দিচ্ছিল, কারণ বার্সেলোনা নাকি বিষয়টাকে হালকাভাবে দেখছিল! পরের দিনই তারা খবর বদলে দিয়েছে একেবারে!

প্যারিসের দুটো বছরও কি এই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে?

কিছুটা। এই দুই বছর আমি সুখী ছিলাম না, নিজেকে উপভোগ করিনি, যা আমার পরিবারে প্রভাব ফেলছিল। বার্সেলোনায় বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যেতাম, কিন্তু এখানে তা খুবই কম করেছি, তাদের সঙ্গে অনেক কম কাজ করেছি। এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছি, তাদের সঙ্গে সময়টা একটু বেশি কাটাতে, প্রতিটা দিন উপভোগ করতে।

হোয়ান লাপোর্তা বা জাভি কি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন? আপনাকে ফেরানো নিয়ে কি কোনো কথা হয়েছে?

আসলে সভাপতির সঙ্গে আমার খুব সামান্যই কথা হয়েছে, এক কি দুইবার। জাভির সঙ্গে কথা হয়েছে বেশ। সে ক্লাবে আসার পর থেকেই। আমার সম্ভাব্য ফেরা নিয়েও কথা হয়েছে অনেক। 

এই পুরোটা সময় ন্যু ক্যাম্পে আপনার নামে স্লোগান দিয়েছে সমর্থকরা, এমনকি বার্সেলোনার কনসার্টেও। আপনার কেমন লেগেছে বিষয়টা?

আমার জন্য এটা দারুণ ছিল, উপভোগ করেছি। আমি যেভাবে বার্সা ছেড়েছি, তা অদ্ভুত ছিল। এখন বুসকেটস, জর্দি আলবাকে যেভাবে বিদায় দেওয়া হয়েছে, তেমন একটা বিদায়ই চেয়েছিলাম আমি। 

আর্থিক বিষয়টা আপনার সিদ্ধান্তে কতটা প্রভাব ফেলেছে? বলা হচ্ছিল আপনি ফ্রিতে হলেও বার্সেলোনায় খেলবেন।

সত্যটা হচ্ছে, আর্থিক বিষয়টা কোনো সমস্যাই ছিল না আমার জন্য। চুক্তি নিয়ে আমরা কথাই বলিনি। একটা চুক্তি এসেছে বটে, কিন্তু সেটা আনুষ্ঠানিক, লিখিত, স্বাক্ষরিত প্রস্তাব নয়; কারণ সেখানে অনেক কিছুর অভাব ছিল, আমরা জানতামও না আমাকে তারা দলে ভেড়াতে পারবে কি না। আমাদের ইচ্ছা ছিল, কিন্তু আমরা এ নিয়ে এগোতে পারলাম না, আমাদের টাকা নিয়ে কোনো কথাই হয়নি। অর্থের বিষয় হলে তো আমি সৌদি আরবেই যেতে পারতাম! অনেক অর্থই তো পেতাম! কিন্তু সত্যটা হচ্ছে, আমার সিদ্ধান্তটা আর্থিক কারণে নেইনি।

আপনার কি মনে হয় বার্সা আপনাকে পেতে সবকিছু করেছে?

আমি জানি না, এটা তাদের ব্যাপার। আমি জানি যে সভাপতি জাভির সঙ্গে কথা বলেছেন। লা লিগা থেকে সিদ্ধান্ত এলো। কিন্তু আমি আপনাকে বলি, এরপরও অনেক কিছুই বাকি ছিল। এটা স্বাভাবিক, কারণ ক্লাবের বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে সেভাবেই আমি তা মেনে নিয়েছি।

বার্সার সঙ্গে আপনার সম্পর্কটা কি একটা ক্ষতের মতো, যেখান থেকে রক্ত বন্ধ হয়নি?

হ্যাঁ, মোটামুটি তেমনই। প্রিয় মানুষগুলোর সামনে থেকে বিদায় বলতে না পারাটা… আমার মনে হয় এটা আমার প্রাপ্যই ছিল। 

এই ক্ষত নিয়েও কি কোনো দিন অন্য কোনো ভূমিকায় বার্সেলোনায় ফিরতে চান?

হ্যাঁ, অবশ্যই! ক্লাবের কাছেই তো আমি থাকতে চাই। আমি জানি না কখন হবে সেটা; কিন্তু আমি ক্লাবে অবদান রাখতে চাই, সাহায্য করতে চাই এই ক্লাবটাকে, কারণ আমি ক্লাবটাকে ভালোবাসি।

মেসি তো বার্সেলোনায় ফিরবেন না, তাহলে যাবেন কোথায়? সৌদি আরব, মিয়ামি না অন্য কোথাও?

আমি সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিয়েছি যে, আমি মিয়ামিতে যাচ্ছি। এখনও ১০০ ভাগ হয়নি চুক্তিটা, কিছু বিষয় চূড়ান্ত হওয়া বাকি, কিন্তু আমরা ওখানেই যাচ্ছি।

আপনি বললেন মনোযোগের বাইরে চলে যেতে চান? এর মানে কী? পাদপ্রদীপের আলো থেকে সরে যাওয়া নাকি বড় প্রতিযোগিতা থেকে?

ইউরোপের বাইরে। ইউরোপের দলেরও প্রস্তাব ছিল, কিন্তু আমি সেসব ছুঁয়েও দেখিনি; কারণ আমার মনে শুধু ছিল বার্সেলোনাই। সেটা হয়নি শেষমেশ। এরপর ইউরোপের বাইরে চলে যাওয়াটাকেই শ্রেয় মনে করেছি, বিশেষত বিশ্বকাপ জেতার পর। ক্যারিয়ারের শেষপর্যায়ে আছি, যুক্তরাষ্ট্রের লিগে ভিন্নভাবে খেলে, উপভোগ করে, আরও বেশি মানসিক প্রশান্তি- আমি এটাই চেয়েছিলাম।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা