বিসিসিআই সভাপতি জানালেন তিনি নেই
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৩ ১৬:১৬ পিএম
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৩ ১৬:৫৯ পিএম
সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছিলেন কুস্তিগিররা। ভিনেশ ফোগত, সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়াসহ আন্দোলনকারী কুস্তিগিরদের অর্জিত সব পদক গঙ্গায় বিসর্জন দিতে যাচ্ছিলেন, সেবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের সভাপতি নরেশ টিকাইয়ত।
আরও পড়ুন : পিএসজি অধ্যায়ের শেষটাও তেতো মেসির
তিনি পাঁচ দিন চেয়ে নিয়েছিলেন। এবার তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন ক্রিকেটাররাও। দেশের আইনকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলে কুস্তিগিরদের সমর্থন করেছেন ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যরা।
যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত রেসলিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি তথা বিজেপি সংসদ সদস্য ব্রিজ ভূষণ সিংকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সংসদ ভবনের সামনে গত সোমবার বিক্ষোভ করার চেষ্টা করছিলেন কুস্তিগিররা। গত চার মাস ধরে আন্দোলন করছেন তারা। কুস্তিগিরদের প্রথম থেকে দাবি ছিল, আন্দোলনে যেন পাশে থাকেন ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের জনপ্রিয়তা কুস্তিগিরদের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করবে বলে আশাবাদী ছিলেন তারা। তবে বিসিসিআইয়ের চুক্তির কারণে হোক বা অন্য কারণে কুস্তিগিরদের হয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেননি ক্রিকেটাররা। শুক্রবার ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের সদস্যরা বিবৃতি দিয়ে কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে প্রথমে দলের প্রতিটি সদস্য থাকলেও শেষদিকে বিবৃতি থেকে পিছিয়ে এসেছেন বিসিসিআই সভাপতি রজার বিনি।
বিশ্বকাপজয়ী সদস্যরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের চ্যাম্পিয়ন কুস্তিগিরদের মারধরের অপ্রীতিকর দৃশ্য দেখে আমরা ব্যথিত এবং বিরক্ত। সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন যে তারা তাদের কষ্টার্জিত পদক গঙ্গায় ফেলে দেওয়ার কথা ভাবছেন। এই পদকগুলো তো শুধু পদক নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বছরের পর বছর প্রচেষ্টা, ত্যাগ, সংকল্প এবং দৃঢ়তা। এই পদক শুধু তাদের নিজস্ব নয়, জাতির গর্ব ও আনন্দ। আমরা তাদের তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। আশা করি তাদের অভিযোগ দ্রুত শোনা হবে এবং সমাধান করা হবে। দেশের আইনকে প্রাধান্য দিন।’
গত সোমবার ভিনেশ, সাক্ষী, পুনিয়াসহ আন্দোলনকারী কুস্তিগিরদের আটক করেছিল দিল্লি পুলিশ। কুস্তিগিরদের আন্দোলনের সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন রাজনীতিককেও আটক করা হয়েছিল। পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যন্তর-মন্তরে যেখানে তাঁবু খাটিয়ে কুস্তিগিররা প্রতিবাদ করছিলেন, সেসব সরিয়ে দিয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে দিল্লি পুলিশের আচরণ নিয়েও মুখ খুলেছেন ’৮৩-এর বিশ্বকাপজয়ী সদস্যরা।
১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপজয়ী দলে ছিলেন কপিল দেব, সুনীল গাভাস্কার, বর্তমান বিসিসিআই সভাপতি রজার বিনি, রবি শাস্ত্রী, মহিন্দর অমরনাথ, দিলীপ ভেংসরকার, কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত, কীর্তি আজাদ, সৈয়দ কিরমানি, মদন লাল, সন্দ্বীপ পাতিল, বলবিন্দর সান্ধু, যশপাল শর্মা ও সুনীল ভালসন। তাদের মধ্যে কপিল, গাভাস্কার ও বিনি বিবৃতি জারি করে কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
ব্রিজভূষণকে গ্রেপ্তারের দাবিতে কীর্তি আজাদ বলেছিলেন, ‘দিল্লি পুলিশ যেভাবে আমাদের কুস্তিগিরদের সঙ্গে ব্যবহার করেছে তা নিন্দনীয়। কুস্তিগিররা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। আমাদের মহিলা কুস্তিগিররা কঠোর পরিশ্রম করছেন, ওরা দেশের জন্য খেলেন ও পদক জেতেন। ওদের সঙ্গে এভাবে আচরণ করা ঠিক নয়। আমি বলেছি পদক গঙ্গায় বিসর্জন না দিতে, কারণ ওটা দেশের সম্মান।’
কুস্তিগিরদের পাশে থাকার বার্তায় বিশ্বকাপজয়ী সতীর্থদের প্রতিবাদের সঙ্গে না থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বিসিসিআই সভাপতি রজার বিনি। ঠিক কী কারণে তিনি তাদের সঙ্গে নেই, সেই কারণও জানিয়েছেন বিনি। এএনআইকে সাক্ষাৎকারে বিনি জানান, কুস্তিগিরদের হয়ে যেই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে তাতে তিনি নেই। তিনি বলেন, ‘কিছু মিডিয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে যেই খবর ছড়িয়ে পড়েছে, পরিষ্কার করে বলতে চাই আমি কুস্তিগিরদের বর্তমান আন্দোলন নিয়ে কোনো বিবৃতি দিইনি। আমি বিশ্বাস করি, এই বিষয়ে যোগ্য ব্যক্তিরা ঘটনার তদন্ত করছেন। সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে আমি বিশ্বাস করি খেলাকে রাজনীতির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া উচিত নয়।’