প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৩ ০৯:৫২ এএম
নেতার দায়িত্বটাই বুঝি এমন! কৃতিত্বটা ভাগ করে দিতে হয় সবার সঙ্গে। আর হেরে গেলে দায়, সমালোচনার বুলেটটা তুলে নিতে হয় বুক পেতে, সবাইকে আড়াল করে। ফেডারেশন কাপের অবিশ্বাস্য ম্যাচের পর সে দৃষ্টান্তটাই স্থাপন করলেন মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদ আর আবাহনী কোচ মারিও লেমোস। আলফাজ জয়ের কৃতিত্বের পুরোটাই দিয়ে দিলেন শিষ্যদের, আর লেমোস বললেন এই হারের দায়ী আমি ছাড়া আর কেউ নয়।
আরও পড়ুন : হারিয়ে যাওয়া ফুটবল আনন্দের পুনর্জন্ম
আলফাজ শিষ্যদের প্রশংসার বানে ভাসিয়ে বললেন, ‘আসলে ম্যাচটা বোঝা যাচ্ছিল না কে জিতবে! সুলেমান দিয়াবাতে, অসাধারণ পারফরম্যান্স; মুজাফফরভের হাত ভেঙে গেছে, তারপরও সে দলের জন্য খেলেছে। এই প্রশংসার দাবিদার সম্পূর্ণ খেলোয়াড়রা। তারা তাদের সর্বস্ব উজাড় করে খেলেছে মোহামেডানের জন্য, এবং জিতেছে। এই জয়ের কৃতিত্বটা পুরোটা তাদেরই।’
এটাই সেরা ফাইনাল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মোহামেডানের নেপথ্য নায়ক দ্ব্যর্থহীন, এখানে মোহামেডান নয়, জিতেছে ফুটবলই। আলফাজের কথা, ‘অনেক আগে একটা ফাইনাল ছিল, যেটা আমি নিজে খেলেছিলাম। তবে আমি আজকের ম্যাচটাকেই এগিয়ে রাখব। আজকের খেলায় বাংলাদেশ ফুটবলে আবাহনী-মোহামেডানের যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তার জয় হলো। এই জয় শুধু মোহামেডানেরই নয়, ফুটবলেরই জয় হলো।’
একটু এদিক ওদিক হলে শেষ হাসিটা আবাহনীরও হতে পারত। আবাহনী ছেড়ে কথা বলেনি। তাই তো স্মরণকালের সেরা ফাইনালটাই দেখেছে কুমিল্লা! তবে লেমোসের অভিমত, তার দল হেরেছে তার ভুলেই, এই হারের দায় তার ছাড়া আর কারও নয়। তিনি বলেন, ‘এই হারের দায়ভার আমিই নিচ্ছি। আমাদের এই ম্যাচে জয় পাওয়ার কথা ছিল। আমরা শিরোপা জয়ের জন্য যোগ্য দল ছিলাম। তবে আমরা পারিনি।’
বিরতির পর আবাহনী যেন একটু রয়েসয়ে খেলছিল। লেমোসের চোখে ম্যাচটা তখনই ফসকে গেছে হাত থেকে। তার কথা, ‘সেকেন্ড হাফের শুরুর পনেরো মিনিট আমরা খুবই বাজে খেলেছি। আবাহনী অনেকটা ঘুমিয়ে পড়েছিল। এটাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের শুরুটা ভালো ছিল না। আমরা তাদের খেলায় ফেরার সুযোগ করে দিয়েছি। তারা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। এমন ম্যাচে কোনো দল একবার এগিয়ে গেলে তখন সেখান থেকে জয় পাওয়া অনেক কঠিন। দুই দলেরই সমান সুযোগ ছিল। টাইব্রেকার ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে।’
রাফায়েল আগুস্তোর পেনাল্টি ঠেকানোর পরই আবাহনী টাইব্রেকারে পিছিয়ে পড়ে। কোচ জানালেন, পুরোপুরি ফিট ছিলেন না তিনি, এরপরও নামানো হয়েছে তাকে। তিনি বলেন, ‘রাফায়েল আগুস্তো পুরোপুরি ফিট ছিলেন না। তবে সে আমাদের অধিনায়ক। তাই তাকে খেলানো হয়েছে। সে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। তবে দিনটা আমাদের ছিল না।’
তবে কোচ লেমোস মোহামেডানকে বাহবা দিতেও ভুললেন না। বললেন, ‘আমরাও ফাইনাল জয়ের কাছাকাছিই ছিলাম। হেরে গেছি শেষমেশ, এটাই বাস্তবতা। মোহামেডানকে অভিনন্দন।’