× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এবার আন্তর্জাতিক সাফল্যের খোঁজে বসুন্ধরা কিংস

আপন তারিক

প্রকাশ : ২৯ মে ২০২৩ ১০:১৪ এএম

আপডেট : ২৯ মে ২০২৩ ১৩:০৪ পিএম

  এবার আন্তর্জাতিক সাফল্যের খোঁজে বসুন্ধরা কিংস

ইমরুল হাসান। বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি। ঘরোয়া ফুটবলে সাফল্যের তরীতে ভাসছে ক্লাবটি। দেশের ফুটবলের সন্মানসূচক প্রায় সব ট্রফি এখন কিংসের শোকেসে। টানা চারবার লিগ শিরোপা জিতে নতুন রেকর্ড গড়েছে তারা। পুরুষদের পাশাপাশি নারী ফুটবলেও তাদের জয়জয়াকার। ক্লাব ফুটবলে প্রতিযোগিতায় বসুন্ধরার সঙ্গে টিকতেই পারছে না প্রতিপক্ষ।

আরও পড়ুন : হজ করতে দেশ ছাড়ছেন রিয়াদ

মাত্র ১০ বছরের মধ্যেই বসুন্ধরা কিংস সাফল্যের ঈর্ষনীয় আসনে। এই সাফল্যের রহস্য এবং সামনের দিনের লক্ষ্য এমন অনেক বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের মুখোমুখি হয়েছিলেন বসুন্ধরা কিংসের সাফল্যের রূপকার ইমরুল হাসান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আপন তারিক। 

প্রশ্ন : যাত্রার শুরু থেকেই বসুন্ধরা কিংস অপ্রতিরোধ্য, এবার রেকর্ডও গড়ল। এই দলের সভাপতি হিসেবে এটা আপনার জন্য কতটা তৃপ্তিদায়ক? 

ইমরুল হাসান : যেকোনো কিছুতেই চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা অবশ্যই আনন্দের এবং তৃপ্তিদায়ক। অভিষেক আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া আরও বেশি আনন্দের। অভিষেকেই ঢাকা লিগে পরপর চারবার শিরোপা জিতে রেকর্ড গড়া সত্যিই বাড়তি আনন্দের। আমরা অনেক আনন্দিত। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন। এটি আমাদের ভবিষ্যতে আরও ভালো করতে অনুপ্রেরণা জোগাবে। যেন আমরা আন্তর্জাতিকভাবে অন্তত ফুটবলে দেশের সম্মান বয়ে আনতে পারি।

বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান (মাঝে) 

প্রশ্ন : বসুন্ধরা কিংসের কোন বৈশিষ্ট্যটা আর সবার চেয়ে আলাদা করে দেয়? বসুন্ধরা কেন স্পেশাল?

ইমরুল : এটা আপনারা বলবেন (হাসি)। আমরা যেহেতু করপোরেট হাউস। করপোরেট হিসেবে যেভাবে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য চালাই, ঠিক সেভাবেই আমরা ক্লাব চালানোর চেষ্টা করি। আর তার জন্য একটি দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন, তা আমাদের আছে। আমি শুধু অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের লোকদের কথা বলছি না, আমাদের ক্লাবের কোচিং স্টাফ, খেলোয়াড়, সাপোর্টিং স্টাফ যারা রয়েছেন তারা সবাই দক্ষ জনশক্তির ভেতর অন্তর্ভুক্ত। সবার সংমিশ্রণ, অক্লান্ত চেষ্টা আর কঠোর পরিশ্রমের ফলে আমরা এখন এই জায়গায় দাঁড়িয়ে। সর্বোপরি বলতে, আমাদের বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজমেন্টের সব ধরনের সহযোগিতা আমরা পেয়েছি। সেটাই সবচেয়ে বড় শক্তি।

প্রশ্ন : ক্লাব হিসেবে আসছে দিনগুলোতে বসুন্ধরার চ্যালেঞ্জ কেমন হতে পারে? সেজন্য কি আপনার ক্লাব প্রস্তুত?

ইমরুল : একটা নতুন দল যখন সাফল্য পেতে থাকে, তখন পুরোনো দলগুলো অলিখিতভাবে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়ায়। দলগুলোও চাইবে তাদের হারানো দিন ফিরিয়ে আনতে। তারা আরও ভালো দল গড়বে, সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে তাদের সাফল্য পুনরুদ্ধারের জন্য। আমার মনে হয়, আগামী বছরগুলোতে এটা আমাদের আরও বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। কিন্তু আমরা আমাদের দক্ষ জনশক্তি নিয়ে আশাবাদী, তাদের অভিজ্ঞতা এবং নতুন নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে মাঠে ও মাঠের বাইরে যত ধরনের প্রতিবন্ধকতা আসবে সব প্রতিহত করে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব। 

প্রশ্ন : বাংলাদেশে তো ইতিহাস গড়া হলো- টানা লিগ চারবার শিরোপা জেতা, আগে কখনও কোনো ক্লাব করতে পারেনি। এই সাফল্য এশিয়ান পর্যায়ে ধরে রাখতে বসুন্ধরা কিংস কি ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে? 

ইমরুল : এটা দারুণ একটি প্রশ্ন। আমরা আসলে ঘরোয়া সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ট্রফি জিতেছি এবং লিগে পরপর চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে রেকর্ডও গড়েছি। এখন আমাদের মূল ফোকাস আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করার। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্লাব লেভেলে আমরা যদি দারুণ কিছু করতে পারি তাহলে কিন্তু বাংলাদেশের সম্মান অনেক বৃদ্ধি পাবে। এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়নস লিগের প্লে-অফ এবং এএফসি কাপ। ওখানে ভালো করার জন্য আমরা আরও কিছু বিদেশি খেলোয়াড় আনার চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করছি, দুর্দান্ত কিছু বিদেশি সংযোজন করে আমরা ক্লাবের ভারসাম্য আরও বৃদ্ধি করব। এএফসি বা প্লে-অফ যেখানেই খেলি না কেন, সম্মানজনক ফল আনার চেষ্টা করব।

প্রশ্ন : আগে যেমনটি ছিল, দীর্ঘদিন আবাহনী-মোহামেডানের ফ্যানবেজ ছিল। একটা ক্লাবের দাপট নিয়ে টিকে থাকার পেছনে থাকেন ভক্তরা। বসুন্ধরা কিংসের ফ্যানবেজ বা সমর্থকগোষ্ঠী তৈরি করতে আপনারা কী ভাবছেন?

ইমরুল : মোহামেডান ও আবাহনী দুটোই কিন্তু ঐতিহ্যবাহী দল। এই নাম দুটোই একটা আবেগের জায়গা। সারা দেশেই এদের সমর্থক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, এটা নিয়ে দ্বিমত নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এই সব সমর্থক এখন আর মাঠে এসে মোহামেডান-আবাহনীর খেলা দেখে না। আমরা বসুন্ধরা কিংস যখন আসি তখন আমাদের উদ্দেশ্য ছিল মাঠবিমুখ দর্শকদের মাঠে ফিরিয়ে আনা। আমরা ইতোমধ্যে সমর্থকগোষ্ঠী বাড়াতে বা তৈরি করতে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। যার মধ্যে বিভিন্ন জেলায় আমাদের সমর্থক দল আছে। দেখে থাকবেন, আমাদের খেলায় অন্তত, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে আমাদের ফ্যানস ক্লাবের পতাকায় অনেক দর্শক খেলা দেখতে আসে। ধীরে ধীরে আমাদের একটি ফ্যানবেজ তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আমাদের একটি বড় ফ্যানবেজ তৈরি হচ্ছে। আমরা যে ধরনের পারফর্ম করছি এটা যদি কন্টিনিউ করতে পারি, তাহলে এক দিন আবাহনী-মোহামেডানের সমপর্যায়ে চলে আসতে পারব, অন্তত সমর্থকদের দিক থেকে।

প্রশ্ন : যারা সামনে থাকে তারাই তো পথ দেখায়। আপনারা এখন সামনে আছেন। আপনি যে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের কথা বললেন, তারা কেউ কেউ তো পিছিয়ে আছে, কেউ আবার লড়ছে। এক্ষেত্রে বসুন্ধরা গ্রুপ বা বসুন্ধরা কিংস দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে কি ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে বা নিচ্ছে?

ইমরুল : আমরা ক্লাব হিসেবে সফলতা পাচ্ছি ঠিকই; কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের জাতীয় দল যদি সফল না হয়, তাহলে আমাদের সাফল্য কিন্তু মূল্যহীন হয়ে যাবে। সেজন্য আমরা ফুটবলে আরও অবদান রাখার চেষ্টা করছি। আপনারা জানেন, আমাদের এখানে স্পোর্টস কমপ্লেক্সের কাজ শুরু করেছি, সেটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমরা আমাদের নিজস্ব স্টেডিয়াম তৈরি করেছি। আমাদের একাডেমিক বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে, সেটি যদি আমরা শেষ করে ফেলতে পারি, অবকাঠামোর কাজটুকু— তাহলে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দল নিয়ে কাজ শুরু করব। বিদেশি কোচ দিয়ে বয়সভিত্তিক দলকে যদি দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দিতে পারি, তাহলে বসুন্ধরার পাইপলাইনে অনেক খেলোয়াড় আসবে। সেটা শুধু বসুন্ধরার জন্য নয়, বাংলাদেশও উপকৃত হবে। আমি আশা করছি আমাদের দেখাদেখি অন্য ক্লাবগুলোও এতে এগিয়ে আসবে। তবে এটা ঠিক, বর্তমান সময়ে বসুন্ধরার মতো আরও কিছু করপোরেট হাউসের এগিয়ে আসা উচিত। তারা যদি ফুটবলে আসে তাহলে বাংলাদেশের সামনে ভালো কিছু অপেক্ষা করবে।

প্রশ্ন : আপনি বাফুফেতেও আছেন। দেশের ফুটবলের বর্তমান পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

ইমরুল : সব কিছু মিলিয়ে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ফুটবল কিছুটা নেতিবাচক অবস্থানে আছে। তবে আমি এটাকে শরতের মেঘ হিসেবে দেখি, বিষয়টা সাময়িক। শরতের মেঘ আকাশে বেশি সময় থাকে না, কেটে যায়। আমি আশা করছি, এই শঙ্কার মেঘ কেটে সামনে একটা সুন্দর পরিছন্ন আকাশ দেখতে পাব।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা