প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৩ ১৭:০৪ পিএম
আপডেট : ১৯ মে ২০২৩ ১৭:০৬ পিএম
শারীরিক সমস্যার পরও দমে যাননি। সাধারণ স্বাভাবিক মানুষের মতো ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা আছে। স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হবেন। স্বপ্ন থাকলেও অন্যদের মতো তাদের পথ সুগম ছিল না। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায় বাধা। সমস্যার সমাধান ফিজিক্যাল ডিজঅ্যাবল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট।
আরও পড়ুন - অপ্রতিরোধ্য সেভিয়ার সামনে রোমা
বিসিবি আয়োজিত প্রথমবারের মতো ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড টুর্নামেন্টে স্বপ্নপূরণ হয়েছে অনেকের। তাদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ শাকিল। চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড দলের হয়ে খেলেছেন। ছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। টুর্নামেন্টে নিজের জাত চেনানোর আগের পথটা ছিল কঠিন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে উঠে আসা শাকিল অন্যদের মতো সুস্থ স্বাভাবিক হিসেবেই দেখেন পৃথিবীর আলো। তার বয়স যখন ৬-৭ মাস, তখনই এক দুর্ঘটনায় ভেঙে যায় কোমরের হাড়। তখন থেকেই ঠিকঠাক হাঁটতে পারেন না। ঠিকঠাক হাঁটতে না পারলেও ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা ছিল। সেই ভালোবাসায় ক্রিকেটে এসেছেন। এলাকায় স্বাভাবিক ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছেন। স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হবেন। কিন্তু শারীরিক সমস্যাটা তার জন্য হয়ে ওঠে বাধা। সে কারণে সাহস হয়নি পেশাদার ক্রিকেটে নিয়মিত হওয়ার। পথটা বদলে দিয়েছে ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড টুর্নামেন্ট।
কীভাবে পেলেন এর খোঁজ? সেই প্রশ্নের উত্তরে শাকিল বলেন, ‘এলাকায় আমার মতো একজন ছিলেন নাসিম ভাই বলে। তিনি আমাকে জানান, ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড দলে ট্রায়াল দিতে। সেখান থেকেই সুযোগ এসেছে।’
গত বছরের মার্চে কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্টে শিরোপা ওঠে বাংলাদেশের হাতে। ওই টুর্নামেন্টের পর প্রধানমন্ত্রী পুরো দলকে উপহার দেন ৫ লাখ টাকা। সেটাও শাকিলের জন্য কাজ করেছে অনুপ্রেরণা হিসেবে।
বিসিবির অধীনে এই টুর্নামেন্ট খেললেও বাংলাদেশ জাতীয় ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড দলেও আছে শাকিলের নাম। দলটির হয়ে সফর করেছেন ভারতেও। জাতীয় দলের অর্থায়নে নেই বিসিবি। অন্যান্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় খেলতে যান তারা।
সারা বছর না হলেও নানা সময় নানা টুর্নামেন্ট হয় বটে, তবে সেসব থেকে পাওয়া অর্থ একেবারেই কম। বিসিবির অধীনে এই টুর্নামেন্ট থেকেই যে চ্যাম্পিয়ন বিপিএপিসি দল পেল ৫০ হাজার আর রানারআপ ইউনিসার্ভ পেল ৩০ হাজার টাকা। তাতে আর যাই হোক ক্রিকেটের মতো ব্যয়বহুল খেলা চালানো কঠিন। শাকিলের চাওয়া খেলাটা যেন মাঠে গড়ায় সারা বছর।
শাকিলের সুরে কথা বললেন ফাইনালে ২২ রান আর ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হওয়া মাহফুজুর রহমানও। তার আশাবাদ, ‘বিসিবির অধীনে এবারই প্রথম এই টুর্নামেন্ট হলো। আশা করছি এখন থেকে সারা বছরই খেলায় থাকতে পারব।’