প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৩ ২২:২৩ পিএম
আপডেট : ১৫ মে ২০২৩ ২২:২৮ পিএম
ডিপিএল শেষ। ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যস্ততা শেষে ক্রিকেটাররা আপাতত ছুটিতে। সদ্য শেষ হওয়া ডিপিএলের রবিন রাউন্ড লিগ, সুপার লিগ ও রেলিগেশন লিগ মিলিয়ে হয়েছে ৮৪ ম্যাচ। সবগুলো ম্যাচেই জয়ের লক্ষ্য ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর। কোনো ম্যাচে ছিল উত্তেজনা, কোনোটা আবার হয়েছে একপেশে।
আরও পড়ুন : ডিপিএলে কেমন ছিল জাতীয় তারকাদের পারফরম্যান্স
ম্যাচগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়িয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও ঢাকা লিওপার্ডসের মধ্যকার ম্যাচটি। লিগ পর্বের ওই ম্যাচের সমাধান এসেছিল একদম শেষ বলে। এ ছাড়া সুপার লিগে মোহামেডান ও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের লড়াইটাও ছিল উত্তেজনায় ভরপুর।
উত্তেজনাকর ম্যাচের বাইরে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল লিগ পর্বে মোহামেডান-শেখ জামাল লড়াই। ওই ম্যাচটি আলোচনায় ছিল মূলত সাকিব আল হাসানের কল্যাণে। ওই ম্যাচে সাকিব প্রথমবারের মতো খেলতে নামেন সদ্য শেষ হওয়া ডিপিএলে।
দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবরই উত্তেজনার শীর্ষে থাকত আবাহনী-মোহামেডান লড়াই। দুই দলের মর্যাদার ওই লড়াই এখন আর উত্তেজনা ছড়ায় না। এ দুই দল না পারলেও অন্য দলগুলো এর অভাব অবশ্য ঠিকই পূরণ করে দেয়। যার প্রমাণ লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও ঢাকা লিওপার্ডসের লড়াই। গত ১৩ এপ্রিল মিরপুরে মুখোমুখি হয় এ দুই দল।
আগে ব্যাট করে পারভেজ হোসেন ইমন, সাব্বির রহমান ও চিরাগ জানির হাফসেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ২৬৮ রানে থামে রূপগঞ্জ। অবনমিত হওয়া ঢাকা লিওপার্ডসের জন্য লক্ষ্যটা ছিল বেশ বড়ই। তবে দলটির পাকিস্তানি ক্রিকেটার উমর আমিনের সেঞ্চুরিতে জয়টা প্রায় মুঠোবন্দিই করেছিল লিওপার্ডস। ব্যাটিংয়ের সময় পায়ে ক্র্যাম্প করলে মাঠ ছাড়েন আমিন। যদিও দলের প্রয়োজনে আবারও ক্রিজে ফেরেন। মাঠে নেমে দলকে নেন প্রায় জয়ের কাছাকাছি।
এর আগে অবশ্য লিওপার্ডসের দুই ওপেনারের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। উমরের ঠান্ডা মাথার ১২৮ রানের ইনিংস দলকে জয়ের দিকে নেয়। সঙ্গী ছিলেন দলটির মিডল অর্ডার ব্যাটার সাব্বির হোসেন। তার ব্যাটে ছিল ৬৪ রান। ম্যাচের শেষ বলে জয়ের জন্য লিওপার্ডসের দরকার ছিল ২ রান। চিরাগ জানির করা বলে ব্যাটে ঠিকঠাক টাইমিং করতে পারেননি ব্যাটার সোহরাওয়ার্দী শুভ। টাইমিং না মেলায় দৌড়ে এক রান নেওয়ার চেষ্টা ছিল শুভর। কাভারে থাকা ইমনের দারুণ থ্রোতে সরাসরি স্টাম্প ভাঙলে রান আউট হন শুভ। তাতেই ১ রানে ম্যাচ জয় নিশ্চিত করে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
সুপার লিগে মোহামেডান-লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ম্যাচে ছিল দারুণ উত্তেজনা। সৌম্য সরকারের ১০২ রানে ভর করে ২৯৯ রানের বড় লক্ষ্য পাড়ি দেয় মোহামেডান। সৌম্যর সেঞ্চুরি আলোচনায় এলেও ম্যাচটা শেষ করেছিলেন মূলত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষদিকে ৪২ বলে তার ৬১ রানের ইনিংস সাদা-কালোদের জয় নিশ্চিত করে। জয়টা নিশ্চিত হয় ম্যাচ শেষ হওয়ার এক বল আগে। ৪ উইকেটের ওই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচ নম্বরে থেকে মৌসুম শেষ করে মোহামেডান। ওই ম্যাচে আগে ব্যাট করে সাব্বির রহমান ও ইরফান শুক্কুরের হাফসেঞ্চুরিতে ২৯৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। মোহামেডানের ব্যাটারদের দৃঢ়তায় জয়টা তাদের হাতছাড়া হয়।
ডিপিএলে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল লিগ পর্বে বিকেএসপির চার নম্বর মাঠের শেখ জামাল ও মোহামেডান লড়াই। ওই ম্যাচ মূলত আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে সাকিবের কল্যাণে। শুধু তাই নয়, ওই ম্যাচে সদ্য শেষ হওয়া ডিপিএলে প্রথম জয় পায় মোহামেডান। শেখ জামালের বিপক্ষে ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক ইমরুল কায়েস নন, অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড ছিল সাকিবের হাতে। অধিনায়কত্বের দায়িত্বভার কাঁধে থাকলেও পুরো ম্যাচে থাকেননি। ম্যাচ শেষ হওয়ার বেশ আগেই বিকেএসপি থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় চলে আসেন। তাতেই আলোচনায় উঠে আসে মোহামেডান-শেখ জামালের ওই লড়াই।
বল হাতে সাকিব ১০ ওভার বোলিং করে ৩১ রানে উইকেটশূন্য ছিলেন। ব্যাট হাতে করেন মাত্র ৫ রান। ওই ম্যাচে সাকিব বলার মতো কিছু করতে না পারলেও তার ছোঁয়ায় বদলে যায় মোহামেডান। ওই ম্যাচের পর লিগ পর্বের সব ম্যাচে জয় তুলে সুপার লিগে ওঠে দলটি।