× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সব সমালোচনাকে ‘শান্ত-মেজাজে’ জয়!

নেয়ামত উল্লাহ

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৩ ০৮:১২ এএম

আপডেট : ১৪ মে ২০২৩ ০৮:১৬ এএম

ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি বলে কথা। সেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। উল্লাসে ব্যাট তুললেন। হেলমেট খুলে হাসলেন। কাকে যেন ফ্লাইং কিসও দিলেন! ম্যাচ জেতানো ৯৩ বলে ১১৭ রানের ইনিংসে অনেক সমালোচনাকে এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দিলেন এই বাঁহাতি    ছবি : বিসিবি

ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি বলে কথা। সেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। উল্লাসে ব্যাট তুললেন। হেলমেট খুলে হাসলেন। কাকে যেন ফ্লাইং কিসও দিলেন! ম্যাচ জেতানো ৯৩ বলে ১১৭ রানের ইনিংসে অনেক সমালোচনাকে এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দিলেন এই বাঁহাতি ছবি : বিসিবি

১৬ জানুয়ারি ২০২৩। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে মুখোমুখি সিলেট সিক্সার্স আর ঢাকা ডমিনেটর্স। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বাউন্ডারি লাইনে পাঠালেন নাজমুল হোসেন শান্তকে, বাউন্ডারি লাইনে থাকা দর্শকরা কটু কথা শোনাতে থাকলেন তাকে। সে সবে কান দিলেন না তিনি, পুরো মনোযোগটা দিলেন ম্যাচেই; সীমানা দড়িতে ধরলেন একটা ক্যাচও।

আরও পড়ুন : ইনজুরিতে সাকিব, খেলবেন না শেষ ওয়ানডে

১২ মে ২০২৩। চেমসফোর্ডে ৩২০ রান তাড়ায় শান্ত ছুঁলেন সেঞ্চুরিটা, যা বাংলাদেশকে দিয়েছে ম্যাচ জয়ের টনিক। সেঞ্চুরি ছুঁয়ে রীতিমতো যেন ভাসতে চাইলেন আকাশে। উদযাপনে মিশে ছিল বাড়তি আগ্রাসন। আর গ্যালারি? হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশি দর্শক এসেছিলেন দলকে সমর্থন দিতে, তাদের কণ্ঠে ‘শান্ত! শান্ত!! শান্ত!!!’ উল্লাস ধ্বনি। 

কটু কথাগুলোকে স্তুতিতে রূপ দিয়ে শান্ত সময় নিয়েছেন মাত্র তিন মাস। 

খেলোয়াড় হলে না চাইলেও সমালোচনা সহ্য করতে হয়, শুনতে হয় দুয়োও। তবে সেসব মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, যখন সেসব দুয়োর পরিধি নিজের ওপর থেকে নিজের পরিবার পর্যন্ত চলে যায়, তখন সেটা না চাইলেও ভাবনায় একটা প্রভাব ফেলেই। শান্ত সেটা অকপটে স্বীকারও করেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে। এমন নয় যে তার ব্যাট হাসছিল না, শেষ কিছু দিনে তিনিই বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার। তবু গণ-সমালোচনা, টীকাটিপ্পনী হচ্ছিলই; সেসবে কান না দিয়ে পারফর্ম করে যাওয়াই তো পেশাদার খেলোয়াড়ের কাজ, শান্ত কাজটা বেশ পেশাদারত্বের সঙ্গেই পালন করেছেন, ওই প্রক্রিয়া ধরে পেয়ে গেছেন প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিও। 

সেঞ্চুরিটা যে পেয়েছেন, তা সহজ ছিল না মোটেও। তামিম ইকবালের বিদায়ের পর এলেন ক্রিজে, এরপর বিদায় নিতে দেখলেন লিটন দাসকে। এরপর শুরুতে সাকিব আল হাসানকে, এরপর তাওহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে করলেন প্রতি আক্রমণ। বাংলাদেশের ম্যাচটা কঠিন থেকে সহজতর হয়ে আসতে থাকল তাতে ভর করেই। আস্কিং রেট বাড়তে দেননি, তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ৮৩ বলে, বিদেশের মাটিতে যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় দ্রুততম। ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও উঠেছে তারই হাতে। 

শেষ কিছু দিনে সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার তিনি, অন্তত ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে তো বটেই। ওয়ানডে ক্রিকেটে এ সময় তিনি ফিফটি করেছেন তিনটি, সবশেষ ম্যাচে করলেন সেঞ্চুরিও। তার বিধ্বংসী রূপটা দেখা গেছে টি-টোয়েন্টিতে। ছয় ম্যাচে চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন তিনটি; গড় ৫৪, স্ট্রাইকরেটটাও বেশ, ১২০.৪৮।

এমন পারফরম্যান্সের পরও এর আগে শান্তকে সমালোচনা শুনতে হয়েছে মূলত তার ইন্টেন্ট নিয়ে, স্ট্রাইকরেট নিয়ে। শুক্রবারের ইনিংসটায় যেন সেসবেরও জবাব দিচ্ছিলেন। তিনি যখন ক্রিজে এলেন, বল মুভ করছে বেশ, আস্কিং রেটটা আটের ঘরে উঠি উঠি করছিল যেন। সেটা চড়ে বসেনি বলেই ম্যাচটা এসেছে বাংলাদেশের মুঠোয়। তা সম্ভব হয়েছে শান্তর ব্যাটে চড়েই।

পাওয়ার প্লেতে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন, পাওয়ার প্লে শেষে প্রান্ত বদল করেছেন নিয়মিতই। সে কারণেই আস্কিং রেটটা বাগে ছিল সব সময়ই। ৩৭তম ওভারে তিনি যখন ফিরছেন বাংলাদেশ তখন জয় থেকে ৬৩ রানের দূরত্বে। বাংলাদেশ ম্যাচটা জিতেছে তার কারণে। শেষ কয়েক মাসে এমন পরিস্থিতি নেহাত কম হলো না।

বয়সভিত্তিক পর্যায়ের সবগুলো ধাপে খেলেছেন, সব কটাতেই রান করেছেন, এরপর জায়গা হয়েছে জাতীয় দলে, এমন ক্রিকেটার বাংলাদেশে হাতে গুনে বলে দেওয়া যাবে। শান্ত সে বিরলপ্রায় প্রজাতির একজন। জাতীয় দলে ক্যারিয়ারের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি, রান পাচ্ছিলেন না নিয়মিত। যে কারণে সমালোচনার শুরু। তবু নির্বাচকরা ভরসা রাখছিলেন তার ওপর, যে প্রক্রিয়া মেনে তিনি এসেছেন দলে, তারপর তার ওপর ভরসাটা রাখাই যায়। শান্ত সে ভরসারই প্রতিদান দিচ্ছেন এখন। তবে প্রতিদান দেওয়া সবে শুরু, সেটা নিশ্চয়ই চাইবেন সবাই, তাতেই যে বাংলাদেশের কল্যাণ লুকিয়ে!

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা