প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৪৩ পিএম
গোল ব্যবধান গড়ে দিয়েছে দুই জায়ান্টের শক্তিমত্তা ও সামর্থ্যের পার্থক্য? বায়ার্ন মিউনিখের রিপোর্টার ফিল রবারের মতে, ঠিক তেমন না। তবে গোল করার ক্ষমতা কিংবা দক্ষতা গড়ে দিয়েছে ব্যবধান। চ্যাম্পিয়নস লিগে ৩-০ গোলে এগিয়ে থাকা পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি সেখানেও যোজন এগিয়ে। ইউরোপসেরার শেষ চার নিশ্চিতের দ্বিতীয় লেগ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বলে হয়তো টমাস টুখেলের দল কিছুটা আশাবাদী। কিন্তু সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বলছে ভিন্ন কথা। দুলতে থাকা সেমির ভাগ্যে শেষ পেরেক ঠোকা হতে যাচ্ছে আজ মধ্যরাতে।
পরিসংখ্যানের খেরো খাতা কিংবা চ্যাম্পিয়নস লিগে দুই জায়ান্টের ইতিহাস, সবখানেই এগিয়ে সিটি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ ৫ ম্যাচের ফল দিচ্ছে সিটিজেনদের এগিয়ে থাকার বার্তা। সবশেষ ৫ ম্যাচের সবকটিতেই জিতেছে গার্দিওলার দল। ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে ২০ বার, বিপরীতে গোল হজম করেছে মোটে তিনটি। সেখানে ৫ ম্যাচের দুটিতে জয় পেয়েছে বায়ার্ন, হার দুটিতে। বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া বাভারিয়ানদের চোখরাঙানি দিচ্ছে মূলত গোল করার ক্ষমতা। আটটি গোল হজমের বিপরীতে এ সময় মোটে সাতটি গোল দিতে পেরেছেন টমাস মুলার-সাদিও মানেরা। প্রতিপক্ষের জালে বায়ার্ন সবশেষ ৩ গোল দিয়েছে তাও দুই মাস আগে।
আরও পড়ুন: রদ্রিগোর জোড়া গোলে সেমিতে রিয়াল
সানে ও মানের ঘুসিকাণ্ড, দলের ব্যর্থতা এবং নতুন কোচ—সব মিলিয়ে সময়টা মোটেও পক্ষে যাচ্ছে না বাভারিয়ানদের। জার্মান জায়ান্টরা সবশেষ দুই দেখার দুটিতেই সিটির কাছে হেরেছে, চ্যাম্পিয়নস লিগে কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বাভারিয়ানদের এটাই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হার। চলতি মৌসুমে জুলিয়ান নাগেলসমানের অধীনে উড়তে থাকা বায়ার্ন টুখেলের আন্ডারে এসে প্রথম লেগেই পিছিয়ে গেছে ৩ গোলের ব্যবধানে। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ চার নিশ্চিত করতে ঘরের মাঠে টুখেলের শিষ্যদের একটু বাড়তি কিছুই করতে হবে।
হিসাব বলছে, ইতিহাদ স্টেডিয়ামে পিছিয়ে থাকা বায়ার্নকে অন্তত ৪-০ গোলে জিততে হবে। গোলখরায় ভোগা জার্মান জায়ান্টদের জন্য সেটি কঠিন বটে! কিন্তু সেই কঠিনকে স্বাগত জানিয়েছেন টুখেল। বায়ার্ন বস এখনই হাল ছাড়তে চান না, শেষ চেষ্টা করে দলকে নিতে চান পরের পর্বে।
‘আমরা ম্যাচটি ছেড়ে দিচ্ছি না। দ্বিতীয় লেগ নিয়ে অনেক বেশি উত্তেজিত। অবশ্য প্রথম লেগের ফল কিছুটা তিক্ত। কিন্তু দল যেভাবে খেলেছে আমি তাতে খুব খুশি। এটা শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও আমি এটাই ভাবছি’
মহারণের আগে টুখেল শুনিয়েছেন হার না মানার মন্ত্র, ‘আমরা ম্যাচটি ছেড়ে দিচ্ছি না। দ্বিতীয় লেগ নিয়ে অনেক বেশি উত্তেজিত। অবশ্য প্রথম লেগের ফল কিছুটা তিক্ত। কিন্তু দল যেভাবে খেলেছে আমি তাতে খুব খুশি। এটা শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও আমি এটাই ভাবছি।’
ইংলিশ জায়ান্ট কোচ গার্দিওলা এগিয়ে থাকলেও সমীহ করছেন বায়ার্নকে। প্রতিপক্ষের মাঠে খেলা বলে সতর্ক হালান্ড-গ্রিলিশদের বস, ‘চ্যাম্পিয়নস লিগের মঞ্চে আসলে আপনি বুঝতে পারবেন বায়ার্ন মিউনিখ কত শক্ত দল। আগের লেগের খেলাটি ৬০ মিনিট পর্যন্ত খুব হাড্ডাহাড্ডি হচ্ছিল। অনেক বিভাগে তারা আমাদের থেকে এগিয়ে ছিল। ৬৫ মিনিটের মাথায় যখন আমরা দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে গেলাম ওটাই ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। আমি মিউনিখে তিন বছর ছিলাম। আমি জানি তাদের মানসিকতা এবং সামর্থ্য। আমাদের এখনও কঠিন একটি ম্যাচ খেলতে হবে।’
৬৫ মিনিটের মাথায় যখন আমরা দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে গেলাম ওটাই ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। আমি মিউনিখে তিন বছর ছিলাম। আমি জানি তাদের মানসিকতা এবং সামর্থ্য। আমাদের এখনও কঠিন একটি ম্যাচ খেলতে হবে
ঠিক কতটা কঠিন হবে সেমিতে ওঠার মঞ্চটি, তা সিটিজেনদের সাম্প্রতিক পারফর্ম প্রমাণ করছে, শক্তিমত্তা প্রদর্শনের মঞ্চে বায়ার্নের হাল না ছাড়ার বার্তাও দিচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস। গোলমেশিন আর্লিং হালান্ডসহ সিটিজেনদের গোলবন্যা সামাল দিতে হবে বায়ার্নকে। জার্মান জায়ান্টদের ডেরায় সিটিজেনদের ধরে রাখতে হবে গোল ব্যবধান। খেরো খাতায় সব সমাধান হতে যাচ্ছে আজ রাতে।