সাব্বির এখন পারছেন যে কারণে...

বাংলাদেশের ক্রিকেটে বড় আক্ষেপের নাম সাব্বির রহমান। ছিটকে যাওয়ার পর জাতীয় দলের আশপাশেও তাকে দেখা যায় না। মাঝে জাতীয় দলের হয়ে এশিয়া কাপে খেলেছিলেন। সেখানেও নিজেকে প্রমাণে ব্যর্থ। কথা ছিল বিশ্বকাপেও খেলবেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে তাকে রেখেছিলেন নির্বাচকরা। কিন্তু বিশ্বকাপের মূল দলে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হন তিনি।

আরও পড়ুন : টানা পাঁচ জয়ে সুপার লিগে মোহামেডান

নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় তাকে। বিশ্বকাপে খেলতে না পারার দুঃখ ভোলার সুযোগ ছিল বিপিএলে নিজেকে প্রমাণ করার। সেখানেও তিনি ব্যর্থ। নিজে তো ভালো করতে পারেননি, সঙ্গে দলও ব্যর্থ ছিল। বিপিএলের ওই ব্যর্থতা অবশ্য ডিপিএলে টেনে আনেননি। চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে নিজেকে বেশ ভালোভাবেই প্রমাণ করছেন। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের মিডল অর্ডারের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন তিনি। তার প্রমাণ নামের পাশে থাকা পরিসংখ্যান।

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে ১০ ম্যাচে ৫১.২৫ গড়ে করেছেন ৪১০ রান। টুর্নামেন্টের অষ্টম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। রান চারশ কোটা পার হলেও স্ট্রাইক রেটে অবশ্য অন্যদের তুলনায় বেশ পেছনে আছেন। ডিপিএলের এবারের আসরে তার স্ট্রাইক রেট মাত্র ৮৩.৮৪। এক সেঞ্চুরির সঙ্গে তার ব্যাটে ছিল দুটি হাফসেঞ্চুরি। যদিও বেশিরভাগ ম্যাচেই উইকেটে থিতু হয়ে ফিরেছেন। তাতেই অবশ্য দলের জন্য উপকার হয়েছে।

সবশেষ বিপিএল চলাকালীন দেশবরেণ্য কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেছিলেন, সাব্বিরের মানসিক অবস্থার উন্নতি দরকার। তা না হলে ফর্মে ফেরানো সম্ভব নয়। সাব্বির নিজের ওই পরিবর্তনটাই করেছেন। গতকাল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবেই নিজেকে পরিবর্তন করেছি। বিপিএলের পর ঘুরতে গিয়েছি। সেটাই আমাকে মানসিকভাবে ঠিক হতে সাহায্য করেছে। ওই সময় মাথায় রেখেছি, ডিপিএলে আমাকে ভালো করতেই হবে। সেটার সুফল পাচ্ছি।’

বিপিএলে ভালো করতে না পারার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন এই ব্যাটার। তার মতে, টি-টোয়েন্টিতে মোমেন্টাম অনুযায়ী খেলতে না পারায় বিপিএলে ভালো করতে পারেননি। সাব্বির বলেন, ‘বিপিএলের আগে মাস্কো সাকিব একাডেমিতে এক মাস অনেক পরিশ্রম করেছি। অনেক বড় বড় কোচের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু ভালো করতে পারিনি। কারণ, আমি মোমেন্টাম অনুযায়ী খেলতে পারিনি। উইকেটে গিয়ে সেট হওয়ার সুযোগটাও আসলে ছিল না।’

ডিপিএলে ভালো করার জন্য আরও একটি টোটকা মাথায় রেখেছিলেন সাব্বির। ব্যাটিং অর্ডারে তিনে খেলার কথা আগে থেকেই জানতেন বলে মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে পেরেছেন। এই নিয়ে সাব্বিরের ভাষ্য, ‘আগে থেকেই জানতাম তিনে খেলব। উইকেটে থিতু হওয়ার সময় পাব। ওইভাবেও নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রেখেছি। এই কারণে ডিপিএলে আমি ভালো করতে পারছি।’

সাব্বিরের মতো উড়ছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জও। ডিপিএলে ১০ ম্যাচ শেষে ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে আছে দলটি।