প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৫০ এএম
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ১০:২১ এএম
দ্বিতীয় দিন শেষ যখন হলো, পরের দিন কত দ্রুত ম্যাচটা শেষ হবে, এমন একটা প্রশ্নও উঠে আসছিল। আসবেই না কেন, আইরিশরা যে বাংলাদেশের স্পিনের সামনে রীতিমতো ধুঁকছিল! সেই পরিস্থিতিটা সামলে ঢাকা টেস্ট চতুর্থ দিনেও গড়াল। দ্বিতীয় দিনের মতো তৃতীয় দিনের শেষেও ব্যাটিংয়ে আয়ারল্যান্ড, বোলিংয়ে বাংলাদেশ। তার কারণ বাংলাদেশের বিবর্ণ বোলিং। আর আয়ারল্যান্ডের দুর্দান্ত ব্যাটিং।
আরও পড়ুন : আইরিশদের স্বপ্নের দিন
শুরুর দুই দিনে উইকেট পড়েছে ঠিক ১২টি করে। তৃতীয় দিনে ৯০ ওভার বল করে বাংলাদেশ ফেরাতে পেরেছে মাত্র চার আইরিশ ব্যাটারকে। এখানেই পরিষ্কার, স্বাগতিকদের বোলিং আক্রমণ তেমন বিপদে ফেলতে পারেনি সফরকারীদের।
দ্বিতীয় দিন শেষে আইরিশ স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রেইন জানিয়েছিলেন, তৃতীয় দিনের প্রাথমিক লক্ষ্যটা হচ্ছে অন্তত প্রথম এক ঘণ্টা নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেওয়া। দুই আইরিশ ব্যাটার হ্যারি টেক্টর আর পিটার মুরকে তেমন বিপদে ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। একেবারেই পারেননি বললে ভুলই বলা হবে। ঘণ্টার কাঁটা পেরোনোর একটু আগে তাইজুল ইসলামের ঝুলিয়ে দেওয়া বলে ক্যাচ তুলেছিলেন টেক্টর, তবে উইকেটের পেছনে সেটা গ্লাভসে রাখতে পারেননি লিটন দাস। সেই জীবন পেয়ে টেক্টর হাঁকালেন ফিফটি। প্রথম ইনিংসেও পঞ্চাশ রানের একটি ইনিংস রয়েছে তার। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টেই উভয় ইনিংসে হাফসেঞ্চুরির কৃতিত্ব দেখালেন আইরিশ এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।
দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশ সবেধন নীলমণি একটি উইকেট পায়। পিটার মুর ফিরে যান মাত্র ১ রানে। সেই সঙ্গে তাইজুলের শিকার সংখ্যা বাড়ল।
এরপর বল যত পুরোনো হয়েছে, বাংলাদেশের বোলিংও নির্বিষ হয়েছে পাল্লা দিয়ে। নতুন বলে বাংলাদেশের স্পিনাররা আইরিশদের বিপদে ফেললেও পুরোনো বলে সেটা ছিল না একেবারেই। পুরোনো বল রিভার্স সুইংয়ের সুযোগ এনে দেয়। কিন্তু বাংলাদেশের পেসাররা সে ফায়দা তুলতে পারলেন কই? এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ, শরিফুল ইসলামরা তা পারেননি। এমনকি লাইন-লেন্থ ঠিক রাখার মতো মৌলিক বিষয়গুলোতেও ভজঘট পাকিয়ে ফেলছিলেন। দ্বিতীয় সেশনে আইরিশদের ওভারপ্রতি ৪ ছুঁইছুঁই রান সাক্ষ্য দিচ্ছে সে কথার সপক্ষেই। মাঝে হ্যারি টেক্টর বিদায় নিয়েছেন তাইজুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। দ্বিতীয় সেশনে ওই একটিই সাফল্য বাংলাদেশের।
পুরোনো বলে হাঁসফাঁস করা বাংলাদেশকে একটা সময় মনে হচ্ছিল যেন নতুন বলের অপেক্ষাই করছে কেবল। সেই নতুন বলেও সমস্যার সমাধান মিলেছে খানিকটা, ৮০ থেকে ১০০ ওভারের মধ্যে দুটো উইকেট তোলা গেছে, লরকান টাকার আর মার্ক অ্যাডায়ারকে ফেরানো গেছে। কিন্তু তাতে আয়ারল্যান্ডকে অলআউট করা যায়নি। বল নতুন হলেও বোলিংয়ে যে উন্নতি আসেনি!
পিচেরও দায় ছিল খানিকটা। আগের দিন শেষ বিকালে যেমন স্পিন ধরছিল উইকেটে, তৃতীয় দিনে এসে তা হাওয়া হয়ে গিয়েছিল অনেকটাই। স্পিনারদের জন্য খানিকটা টার্ন তবু ছিল, পেসারদের জন্য তো একেবারে বিমাতাসুলভ আচরণই করেছে উইকেট!
সঙ্গে যোগ করুন আইরিশদের ব্যাটিং। প্রথম ইনিংসে যেভাবে নির্বিবাদে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন সফরকারী ব্যাটাররা, দ্বিতীয় ইনিংসেও তেমন দিয়েছেন বটে। কিন্তু প্রথম ইনিংসের ভুল শুধরে উইকেটগুলোর মাঝে আইরিশরা গড়েছেন বড় বড় জুটি। তার সবকিছুর মিশেলেই বাংলাদেশের ইনিংস জয়ের স্বপ্ন গেছে ভেস্তে। অপেক্ষা বেড়েছে বাংলাদেশের। তবে আইরিশদের ১৩১ রানের লিডটা জানান দিচ্ছে, শেষ ইনিংসে বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য।