প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৩ ১২:৩১ পিএম
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৪৮ পিএম
গো রক্ষক মনু মানেসার। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের হরিয়ানায় নুহ এলাকায় শুরু হওয়া সংঘাত এরই মধ্যে দিল্লির কাছেই
গুরুগ্রাম অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। চলমান এ সহিংসতায় ১ সহকারী ইমাম ও ২ পুলিশ সদস্যসহ
৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও থমথমে ভাব বিরাজ করছে সংঘাত হওয়া অঞ্চলগুলোতে। পুলিশের পক্ষ
থেকে জনগণকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত কোনো গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানানো
হয়েছে।
হরিয়ানা রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত নুহ জেলার মধ্যে দিয়ে সোমবার (৩১
জুলাই) বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) ‘বৃজ মন্ডল
জলাভিষেক যাত্রা’ শিরোনামের ধর্মীয় শোভাযাত্রা যাওয়ার
সময় সহিংসতা শুরু হয়।
গত বছর দুই মুসলিম গরু ব্যবসায়ী জুনায়েদ ও নাসিরকে গাড়িতে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায়
প্রধান অভিযুক্ত গো রক্ষক মনু মানেসারের এই শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল, এমন খবর
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আগে থেকেই তা নিয়ে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়।
মনু মানেসার নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন,
যেখানে তিনি এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ইচ্ছের কথা জানান এবং অন্যদেরও শোভাযাত্রায়
অংশগ্রহণের অনুরোধ করেন।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়রা শোভাযাত্রাটিতে বাধা দেয় এবং এরপরই দুইপক্ষের সংঘর্ষ শুরু হলে গুরগাও-আলোয়াড় জাতীয় মহাসড়কের বড় অংশ কার্যত রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
এ সময় দুইপক্ষ একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং যানবাহনে
আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।
মনু মানেসর পরে বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন, বিশ্ব
হিন্দু পরিষদের পরামর্শেই তিনি আর শোভাযাত্রায় যোগ দেননি।
দেখাই যাচ্ছে, মানেসার যোগ না দিলেও সংঘাত শুরু হওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া তার পোস্টটিই যথেষ্ঠ ছিল।
আরও পড়ুন: ভারতের হরিয়ানায় সংঘাত : গুরুগ্রামে হোটেলে আগুন, দোকান ভাঙচুর
নুহ জেলার এমএলএ চৌধুরী আফতাব আহমেদ এনডিটিভিকে বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি
প্রশাসনের ব্যর্থতা বলে আমি মনে করি। পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হওয়ার আগেই আমরা কর্তৃপক্ষের
কাছে গিয়েছিলাম, এবং তাদের বলেছিলাম যে অবস্থার আরও অবনতি হবে তার আগেই যেন তারা পদক্ষেপ
নেয়। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে এমনটা হতো না। এখানে মনু মানেসারের যোগ দেওয়ার গুঞ্জনও
যোগ হয়েছে।’
নুহ ও গুরুগ্রামের স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা মঙ্গলবার হিন্দু ও
মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং তাদের শান্ত থাকার অনুরোধ
করেছেন। যদিও গুরুগ্রামে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। সেখানকার রাস্তার ধারে ছোটো ছোটো
খাবারের দোকানে আগুন দেওয়া হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই ছিল মুসলিমদের। একটি মসজিদে আগুন
ও গুলির ঘটনায় একজন সহকারী ইমামও মারা যান।
সূত্র : এনডিটিভি/বিবিসি