প্রচ্ছদ
এলিজা চৌধুরী
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৪৯ পিএম
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৪ পিএম
ইয়োগা প্রশিক্ষক : এলিজা চৌধুরী ও শাহ্ নোমান ইফতেখার; স্থান : এলিজা’স ইয়োগার্ট; ছবি : ফারহান ফয়সাল
ব্যস্ত জীবনের দৌড়ে ভুলেই যাচ্ছি আমরা প্রকৃতির একটি অংশ। জীবনযাত্রায় কাজের চাপ বেড়েই চলেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যাক পেইন, ফ্রোজেন শোল্ডার, ওয়েইট গেইন, ফ্যাট গেইন, ডিপ্রেশন, এনজাইটি, হাইপার টেনশন, শর্ট টেম্পার, ইনসোমনিয়ার মতো নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা। আমরা যতই ব্যস্ত থাকি না কেন সুস্থ জীবনযাপনের জন্য শরীরচর্চা ও ব্রেনের রিলাক্সেশন খুব জরুরি-
যোগের জ্ঞান ৫ হাজার বছরের পুরোনো। সংস্কৃত শব্দ ‘যুজ’ থেকে আহরিত যোগ যা আমাদের কাছে ইয়োগা নামে পরিচিত। যোগ শব্দের অর্থ সংযোগ। শরীর ও মনের সংযোগই যোগ। আমরা যা চিন্তা করছি, যা বলছি আর যা করছি তার সঠিক পন্থাই হচ্ছে যোগ। এটি একটি সুনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের প্রাকৃতিক পদ্ধতি। যদিও অনেকেই মনে করেন যোগ মানে শুধুই শারীরিক কসরত। এটা মোটেও ঠিক নয়। ইয়োগা সুস্বাস্থ্য ও মানসিক প্রশান্তির জন্য বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। প্রাকৃতিকভাবে নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে ইয়োগার জুড়ি নেই, তাই বিশ্বজুড়ে এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
ইয়োগা করলে সুফল মিলবে
যোগচর্চা করলে আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। সুস্থ থাকে শরীরের অনেক কার্যপ্রক্রিয়া। আর এসব প্রক্রিয়ার ওপরই আমাদের সার্বিক সুস্থতা নির্ভর করে। শারীরিক সুস্থতা আর মানসিক প্রশান্তি আমাদের সবারই কাম্য। মনের ভাব প্রকাশ পায় কাজে আর কাজ নির্ভর করে একজনের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপর। একমাত্র যোগসাধনাই যেকোনো সময় যেকোনো অবস্থায় মন ও শরীরকে একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থায় আনতে পারে। দিতে পারে উদ্যমতার দীর্ঘশ্বাস, নতুন করে বাঁচার শক্তি। যার সবশেষে মেলে শান্তি, স্থিরতা ও গতিময় প্রাণ।
নিয়মিত ইয়োগা আসন করলে আপনি মুক্তি পেতে পারেন শারীরিক নানা সমস্যা থেকে। যেমন ব্যাক পেইন, হাঁটু ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মেয়েদের পিরিয়ডকালীন সমস্যা ছাড়াও নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
ইয়োগাকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। ১. জ্ঞানযোগ (প্রকৃত অভিজ্ঞতা) ২. রাজযোগ (ইচ্ছাশক্তি) ৩. ভক্তিযোগ (ভক্তি, শ্রদ্ধা, একনিষ্ঠতা) ৪. কর্মযোগ (সৃজনশীলতা)।
মেডিটেশন : খুব সহজভাবে বললে বলা যায়, মেডিটেশন হলো মনের ব্যায়াম। শারীরিক সুস্থতার জন্য যেমন ব্যায়াম-ইয়োগা আসন করা প্রয়োজন, মনের সুস্থতার জন্যও তেমন ব্যায়াম প্রয়োজন। মেডিটেশন হচ্ছে মনের ব্যায়াম। মানসিক শান্তি, স্থিতিশীলতা অর্জনের অনুশীলনের নাম মেডিটেশন।
মেডিটেশনের ফলে যে উপকার পাওয়া যায়-
যেভাবে মেডিটেশন করবেন
আপনি যেহেতু মেডিটেশন করবেন প্রশান্তির উদ্দেশ্যে, তাই মেডিটেশন করার সময় মনে কোনোরকম নেতিবাচক চিন্তা আনবেন না। মেডিটেশন আরম্ভ করতে চাইলে আগে নিয়মাবলি শিখতে হবে। মেডিটেশন শুরুর আগেই একটি শান্ত জায়গা, কতটুকু সময় মেডিটেশন করবেন ইত্যাদি নির্ধারণ করে রাখতে হবে। কোনো অভ্যাসই এক দিনে তৈরি হয় না তাই প্রথম দিন করতে গেলে আশানুরূপ ফল পাবেন না; তবে এতে হতাশ হওয়া যাবে না। নিয়মিত করলেই আস্তে আস্তে নিজের মনকে আয়ত্তে আনা যাবে।
প্রাণায়াম : যে প্রক্রিয়া দেহের প্রাণশক্তি বৃদ্ধি করে এবং জরা, ব্যাধি ও অকালমৃত্যুর হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে তা-ই প্রাণায়াম। এর কাজ প্রাণবায়ু অর্থাৎ নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসকে নিয়ন্ত্রিত করে দেহের প্রাণশক্তি বৃদ্ধি করা।
যোগশাস্ত্র অনুযায়ী বায়ুই দেহের প্রাণশক্তি এবং তা রস-রক্তকে প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পরিচালিত করে। বায়ু প্রধানত ‘প্রাণ’, ‘উদান’, ‘সমান’, ‘অপান’, ‘ব্যান’Ñএ পাঁচ ভাগে ভাগ হয়ে দেহের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। গলদেশে ‘উদান’, হৃদয়ে ‘প্রাণ’, নাভিদেশে ‘সমান’, গুহ্যদেশে ‘অপান’ এবং দেহের সর্বত্র ‘ব্যান’ কার্যরত।
এ পাঁচ প্রকার বায়ুর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ‘প্রাণ’বায়ুর। শ্বাসগ্রহণ ও ত্যাগ, হৃদযন্ত্র পরিচালন, খাদ্যবস্তু পাকস্থলীতে পাঠানো, ধমনি-শিরা-উপশিরা দিয়ে রক্তরস আনা-নেওয়া করা, ধমনি-শিরা-উপশিরা, স্নায়ুজালকে কাজে প্রবৃত্ত ও সাহায্য করা প্রভৃতি অতি প্রয়োজনীয় কাজ নিয়ত এ প্রাণবায়ু করে যাচ্ছে। কাজেই দেহে প্রাণবায়ুর ভূমিকা প্রধান।
এ ছাড়া এতে শরীরের যে উপকারগুলো হবে-
ইয়োগার আগে-