পরিবারের বাড়তি সদস্য হিসেবে পোষা প্রাণী রাখার চল বেশ পুরোনো। শহরের অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে জায়গা তুলনামূলক কম থাকে। তাই বিড়াল, পাখি ও মাছ পোষা প্রাণী হিসেবে থাকে পছন্দের শীর্ষে। তবে আজকাল অনেকেই পোষ্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কুকুরকে। সহজেই পোষ মেনে যাওয়া, বন্ধুভাবাপন্ন স্বভাব হওয়ায় কুকুর বেশ জনপ্রিয়। তবে কুকুর পালার আগে আপনাকে কিছু জিনিস অবশ্যই জানতে হবে। নিতে হবে পূর্বপ্রস্তুতি।
কুকুর পালনের ক্ষেত্রে করণীয়
কুকুর পোষার আগে পরিবারের সবার মতামত নেওয়াটা জরুরি। কুকুরের ওপরে কারও কোনো ধরনের অ্যালার্জি আছে কি না, কুকুর পোষাটা পছন্দ করে কি নাÑ এ বিষয়গুলো জেনে নিতে হবে। ভাড়া বাসায় থাকলে বাড়িওয়ালার কাছেও ব্যাপারটা শেয়ার করতে হবে। সবাই রাজি হলেই কুকুর পোষার দিকে এগোনো ভালো।
পোষা প্রাণীর যত্ন নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় আছে কি না, সেই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। কুকুরের সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া জরুরি। তাকে সময় এবং প্রশিক্ষণ দিতে হয়। এর জন্য আলাদা সময় বের করতে পারবেন কি না, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।
বাসায় নতুন কুকুর আনার ক্ষেত্রে করণীয়
- নতুন কুকুর বাসায় আনার আগে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। টিকা, খাবার সবকিছু ডাক্তারের কাছ থেকে বুঝে নেওয়াই ভালো।
- কুকুরের ভ্যাকসিন দেওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। দিনে একবার এদের দাঁত মাজতে হবে এবং মাসে একবার নখ কেটে দিতে হবে। যতটা জলদি সম্ভব কুকুরের ‘নিউটার’ বা বন্ধ্যা করানোর ব্যবস্থাও নিতে হবে।
- আগে থেকেই ওর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে রাখুন। যেমনÑ বয়স অনুযায়ী খাবার, খাবারের পাত্র, খেলনা, বিছানা।
- কুকুরের সামনে যা পায় তাতেই মুখ দেওয়া বা চাবানোর অভ্যাস আছে। তাই আশপাশে এমন জিনিস রাখা যাবে না, যা সহজেই ভেঙে যায়। কারেন্টের তার বা বিষাক্ত পদার্থ যাতে আশপাশে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- একটি কুকুর ছানাকে নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হয়। এর মধ্যে আছে নির্দিষ্ট জায়গায় বাথরুম করা, দরকারি জিনিস চিবিয়ে নষ্ট না করা, কাউকে কামড় না দেওয়া ইত্যাদি। প্রশিক্ষণ দেওয়ার আগে কীভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হয়, সেটা শিখে নেওয়া জরুরি। এ জন্য কুকুরটির পেছনে বেশ কিছুটা সময় ব্যয় করতে হবে। এসব ব্যাপারে ধৈর্য আছে কি না, সেই বিষয়ও খেয়াল রাখতে হবে।
- নিজের খাবার কুকুরকে দেওয়া যাবে না। এতে ওর অভ্যাস নষ্ট হয়ে যাবে। শুধু ডগ ফুড খেতে দিন।
- পোষা কুকুরকে দিনের কিছুটা সময় বাইরে খেলাধুলা করাতে ও হাঁটাতে নিয়ে যেতে হয়। আকার অনুযায়ী আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা সময় দিতে হয়। এই সময়ও দিতে পারবেন কি না তা বুঝে নিতে হবে।
- কুকুরের জন্য মোটামুটি বড় জায়গা দরকার। আপনার বাসায় সে রকম জায়গা আছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন। বড় আকারের কুকুরের জন্য প্রচুর জায়গা প্রয়োজন। তাই অ্যাপার্টমেন্টে পালার জন্য ছোট আকারের কুকুর বেছে নেওয়া ভালো।
- বিশেষ প্রয়োজনে যদি দূরে যেতে হয়, তাহলে আপনার কুকুর কোথায় থাকবে, সেই ব্যবস্থাও আগে করে নিতে হবে। কারণ কুকুরটিকে তো আর একা ঘরে রেখে যাওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন : খরগোশ বাড়িতে আনার আগে-পরে
যেখানে পাবেন ও দরদাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেট, কাঁটাবন-গুলশানসহ সারা দেশেই পোষ্য প্রাণীর দোকানে বিভিন্ন প্রজাতির কুকুর রয়েছে। বিদেশি কুকুর ১০ হাজার টাকা থেকে দাম শুরু হয়। জার্মান সেফার ৩০ থেকে ৮০ হাজার, স্পিস ১০ থেকে ২০ হাজার, পাক ২০ থেকে ৩৫ হাজার, সি-গোগি ইতালিয়ান ১৫ লাখ থেকে ১৮ লাখ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।