প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৩ ১৩:৫৪ পিএম
কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে ৬ দিনব্যাপী তৃতীয় চন্দ্রাবতী নাট্যোৎসব শুরু হয়েছে। ‘নাটকের উক্তি/ সংস্কৃতির মুক্তি’Ñএ স্লোগান নিয়ে ১০ মার্চ রাত থেকে চলছে উৎসবটি। কিশোরগঞ্জ থিয়েটার ফোরামের ( কেটিএফ) আয়োজনে মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে ৬ দিনব্যাপী নাট্যোৎসবের সূচনা হয়। এটি উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
আজ পঞ্চম দিন মঙ্গলবার থাকছে মেঘদূত সাংস্কৃতিক সংঘের পরিবেশনা ও নাজমুল করিম রুয়েলের নির্দেশনায় নৃত্য। মঞ্চে আসবে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের আবৃত্তি এবং জলছবি মাইম থিয়েটারের মূকাভিনয় ‘অপবাদ’। এর রচনা ও নির্দেশনায় আছেন রিফাত ইসলাম। শেষে থাকছে একতা নাট্যগোষ্ঠীর প্রযোজনা ও মানস করের নির্দেশনায় নৃত্যনাট্য ‘জনমদুখী মা’।
শেষদিন বুধবার (১৫ মার্চ) থাকছে মুক্তধারার পরিবেশনা ও দেবাশীষ সাহা আকাশের নির্দেশনায় নৃত্য। এরপর অনুষ্ঠিত হবে প্রজন্ম ’৭১, কিশোরগঞ্জ শাখার আবৃত্তি। শেষে থাকছে শিকড় নাট্যসম্প্রদায়ের পরিবেশনা এবং জিয়াউল হক সোহাগের নির্দেশনায় নৃত্যনাট্য ‘মলুয়া’।
এর আগে উদ্বোধনী দিনে কেটিএফের সভাপতি কোহিনূর আফজলের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা ও স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এমএ আফজল, নন্দনতাত্ত্বিক আলোচক নাসির উদ্দীন ফারুকী, জেলা কালচারাল অফিসার তানিয়া ইসলাম ঝুমুর, ছড়াকার জাহাঙ্গীর আলম জাহান, নাট্যকর্মী হারুন আল রশীদ, কেটিএফের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান কায়েস প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘নাটক হলো চলমান জীবনের প্রতিচ্ছবি। নাটকের মাধ্যমে সমাজের অসংলগ্নতা, অপরাজনীতির কৌশলসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বাস্তবতা সরাসরি সাধারণ মানুষের সামনে নিয়ে আসা যায়। সামাজিক সব প্রতিবন্ধকতা জনগণকে সচেতনতার মাধ্যমে প্রতিরোধ করার প্রধানতম মাধ্যম হলো নাটক। তাই নাট্যচর্চা যেন বেশি বেশি হয়, এ জন্য তার সহযোগিতা সব সময় থাকবে।’
তিনি সব নাট্যকর্মীকে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: এলিনা শাম্মীর আমন্ত্রণ
উৎসবের প্রথম দিন শুক্রবার পরিবেশিত হয় কিশোরগঞ্জ সাংস্কৃতিক সংস্থার (কিসাস) শিল্পীদের পরিবেশনায় উদ্বোধনী নাচ। নির্দেশনায় ছিলেন ধনেশ পণ্ডিত। পরে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের পরিবেশনায় হয় আবৃত্তি। শেষে নাজমুল করিম রুয়েলের প্রযোজনা ও মেঘদূত সাংস্কৃতিক সংঘের নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হয় নৃত্যনাট্য ‘মহুয়া’। দ্বিতীয় দিন শনিবার অনুষ্ঠিত হয় জেলার করিমগঞ্জের নৃত্যশালার পরিবেশনা ও ইভানা আক্তারের নির্দেশনায় নৃত্য, সুভাষ কালচারাল সেন্টারের আবৃত্তি ও মঞ্চস্থ হয় রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প অবলম্বনে নাটক ‘পোস্টমাস্টার’। নাটকটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় ছিলেন আব্দুল ওয়াহাব। প্রযোজনায় চর্যাপদ থিয়েটার।
তৃতীয় দিন রবিবার পরিবেশিত হয় নৃত্যাঙ্গন একাডেমির পরিবেশনায় ও সুব্রত দে টুনটুনের নির্দেশনায় নৃত্য এবং কিশোরগঞ্জ ছড়াকার সংসদের আবৃত্তি। ওইদিন মসিউর রহমান সাগরের রচনা ও নির্দেশনায় নাটক ‘মিশন হাফসেঞ্চুরি’ মঞ্চস্থ হয়। নাটকটি প্রযোজনা করেছে ভৈরব থিয়েটার আর্ট। আরও মঞ্চস্থ হয় সজল ফকিরের নির্দেশনা ও মানবাধিকার নাট্য পরিষদের (মানাপ) প্রযোজনা নাটক ‘একটি রাতের গল্প’। চতুর্থ দিন সোমবার মঞ্চে আসে মুক্তধারার পরিবেশনা ও দেবাশীষ সাহা আকাশের নির্দেশনায় নৃত্য। কিশোরগঞ্জ কবিসংঘ আবৃত্তি পরিবেশন করে। এর পর সাইদুল হক শেখরের নির্দেশনা ও প্রতিধ্বনি থিয়েটারের প্রযোজনায় নাটক ‘১৯৭১’ দিয়ে শেষ হয় সেদিনের আয়োজন।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছ।