প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:২৪ পিএম
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৩৫ পিএম
প্রায়ই মুসলমানদের নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের নানানরকম কটু মন্তব্য ঝড় তোলে ভারতজুড়ে। ঐতিহাসিক মুসলিম অনেক শাসক ও তাদের শাসনামল নিয়েও চলে উস্কানিমূলক কাণ্ডকীর্তি। অনেক মুসলিম তারকাও দেশটিতে কটাক্ষের শিকার হন। এসব নিয়ে বহুবার নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেছেন বলিউডের নন্দিত অভিনেতা নাসির উদ্দিন শাহ।
এবার তিনি তার একটি ওয়েব সিরিজের প্রচার করতে গিয়ে দাবি করলেন, মুঘলরা যদি খারাপই হয় তাহলে তাদের তৈরি তাজমহল ভেঙে ফেলা হোক। তার এ বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় চলছে ভারতে।
জি ফাইভের নতুন সিরিজ ‘তাজ : ডিভাইডেড বাই ব্লাড’। মুঘল সাম্রাজ্যের অন্দরমহলের জানা-অজানা কাহিনি নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিরিজটি। এখানে সম্রাট আকবরের চরিত্রে হাজির হবেন নাসির উদ্দিন শাহ। সম্প্রতি সিরিজটির প্রচারণায় মুঘল সাম্রাজ্য নিয়ে কথা বলেন তিনি। ভারতের চলমান অবস্থায় ক্ষুব্ধ পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত নাসির উদ্দিনের দাবি, মুঘলরা যদি সবকিছুই খারাপ করে থাকেন, তাহলে তাজমহল, লালকেল্লার মতো সৌধগুলো ভেঙে ফেলা হোক। তার মতে, মুঘলদের মহিমান্বিত করার কথা হচ্ছে না, কিন্তু তাদের অপমান করাও উচিত নয়।
ভারতের ইংরেজি দৈনিক দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রবীণ অভিনেতা আরও বলেন, ‘লালকেল্লাকে এত পবিত্র কেন মনে করা হয়? কেন ওই স্থাপত্যের এত গুরুত্ব? ওটা তো একজন মুঘলের তৈরি।’
নাসির জানান, সুস্থ বিতর্কের পরিসর এ দেশে নেই। যুক্তিবুদ্ধি, ইতিহাসচেতনার অভাব বাড়ছে। ঘৃণাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এ বোধ থেকেই ভারতের এক অংশ মানুষ অতীতের সবকিছুই নিন্দার চোখে দেখে। বিশেষ করে মুঘলদের। এটা এখন তাকে ক্ষুব্ধ করার চেয়ে আমোদ দেয় বেশি।
আরও পড়ুন : রাজু, শ্যাম ও বাবু ভাইয়ার সঙ্গে ভিলেন সঞ্জয়
বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে মুঘল যুগকে নিরন্তর অপমান করে যাচ্ছেন শাসকদল, সরকারের মন্ত্রীরা। ৪০টি শহরের নাম বদলে গেছে গত কয়েক বছরে। যেগুলো মুঘলদের নামের স্মৃতি বহন করছিল।’
ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন ‘মুঘল গার্ডেনস’-এর নাম বদলে করা হয়েছে ‘অমৃত উদ্যান’। নাসিরের মতে, এটি সমান্তরাল ইতিহাস তৈরির প্রয়াস। মুঘলদের সমস্ত কাজকেই নস্যাৎ করে দেওয়ার প্রবণতা চলছে বলে মনে করছেন তিনি।
নাসির বলেন, ‘বিষয়টা খুবই হাস্যকর। জনসাধারণ আকবরের মতো সম্রাট আর দস্যু নাদির শাহর বা তৈমুরের পার্থক্য জানে না। তৈমুররা লুট করতে এসেছিল, মুঘলরা এ দেশকেই তাদের ঘরবাড়ি বানাতে চেয়েছিল। কে তাদের অবদান অস্বীকার করতে পারবে?’