ওয়ার্ল্ড রোবোটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ
রুবেল মিয়া নাহিদ
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:২৫ পিএম
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৫৬ পিএম
ওয়ার্ল্ড রোবোটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশের টিম অ্যাটলাস ৪র্থ স্থান অর্জন করেছে
সানি জুবায়ের ও তার দল। দেশকে তাক লাগিয়ে বিজ্ঞানে প্রতিনিয়তই নতুন ইতিহাস গড়ে চলেছেন বাংলাদেশি এই তরুণ উদ্ভাবকরা। কোনো কিছুতেই যেন বাধাহীন তাদের পথচলা। জুবায়েরের স্কুল জীবন কাটে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। ২০২০ সালে এইচএসসি শেষ করেছেন ঢাকা কলেজ থেকে। বর্তমানে ব্র্যাক ইউনির্ভাসিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা করছেন।
ওয়ার্ল্ড রোবোটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশের টিম অ্যাটলাস চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে। ২৩ আগস্ট ভারতে অনুষ্ঠিত হলো টেকনোক্সিয়ান ওয়ার্ল্ড রোবোটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২২। অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর রোবোটিক্স অ্যান্ড অটোমেশন এবং ভারত সরকারের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বাংলাদেশের টিম এটলাস। বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী দলটি এবারের প্রতিযোগিতায় চতুর্থ স্থান লাভ করেছে। এ বছরের প্রতিযোগিতায় ৯টি ভিন্ন সেগমেন্টের মধ্যে রোবো রেস চ্যালেঞ্জ ও দ্রুততম লাইন ফলোয়ার সেগমেন্টে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের টিম অ্যাটলাস।
তাছাড়া হাতের স্পর্শ ছাড়াই কম্পিউটার চালু, দুর্ঘটনা এড়াতে স্বয়ংক্রিয় ব্রেক, গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে রিসিভারসহ এমন বেশ কয়েকটি চমৎকার প্রযুক্তি আবিষ্কার করে বেশ আলোচিত গবেষক সানি জুবায়ের। সম্প্রতি ‘ফায়ার ফাইটিং রোবট’ বানিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২১ পেয়েছেন সানি জোবায়ের। ভালোবাসেন গবেষণাধর্মী কাজ এবং রোবটিক্স। গত ৮ বছর ধরে এসব কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। রোবটিক্সের প্রতি ভালোবাসা ছোটবেলা থেকেই। হাতেখড়ি হয়েছে নিজে নিজেই ছোটবেলায়। খুঁজে বেড়ান যন্ত্রের ভিতরের ভাষাকে। রেজিস্টার , ট্রানজিস্টর আর সার্কিট বোর্ড প্রতিনিয়তই তাকে কৌতূহল উদ্দীপ্ত করত। নতুন কোনো কিছু করার চিন্তা থেকে টুকিটাকি ছোট ছোট জিনিস বানাতে শুরু করেন। অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন আন্তঃস্কুল ও কলেজ এবং জাতীয় বিজ্ঞান মেলায়। ধীরে ধীরে বানাতে শুরু করেন অত্যাধুনিক কিছু রোবট।
সানি জোবায়ের বলেন, বেশ কয়েকটি অটোনোমাস রোবট এবং মার্স রোভার বানাতে সক্ষম হই এবং কাজ করছি অগ্নিনির্বাপণের জন্য ডিফেন্ডার নামক রোবটের ওপর। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই রোবটকে। অগ্নিনির্বাপণের জন্য এর আগে কাজ করা হয়েছে সিগমা রোবটে, যেটি কি না ডিফেন্ডার রোবটের প্রাথমিক ভার্সন ছিল এবং সামনেও বেশ কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে। প্রতিনিয়ত সেসব প্রকল্পের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
এই তরুণ উদ্ভাবকের বানানো কিছু রোবট :
বর্তমানে তারা কাজ করছেন একটি সাবমেরিন নিয়ে। যা দেশের সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে কাজ করতে সক্ষম হবে। পানির তলদেশে থাকা রহস্যকে সামনে আনতে সাহায্য করবে। সানি জোবায়ের জানালেন তার অর্জনের কথা, ১৬টি জাতীয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় পদক অর্জন করি। যার মধ্যে ছিল জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ, ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা, জাতীয় রোবটিক চ্যালেঞ্জ, জাতীয় রোবট অলিম্পিয়াডসহ আরও কয়েকটি প্রতিযোগিতা। আন্তঃস্কুল এবং কলেজ প্রতিযোগিতায় সর্বমোট ৫৫টি পুরস্কার পাই। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিজ্ঞান প্রতিযোগিতায় আমরা ১৫টি পদক অর্জন করি।
জোবায়ের আরও জানালেন, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমি এবং আমার দল বাংলাদেশকে সম্মানের সঙ্গে উপস্থাপন করি। আমাদের বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ১৮ জন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় প্রতিযোগিতায় আমার দলসহ অংশগ্রহণ করি। আমাদের দলটির মূল উদ্দেশ্য হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের কৃতিত্বকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গৌরবের সঙ্গে উপস্থাপন করা। একই সঙ্গে দেশের গুরুতর কিছু সমস্যাকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাধান করা।
/এসআর