গোলাম কিবরিয়া
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:২৯ পিএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:৩২ পিএম
আলোকচিত্রী আবির মাহমুদ
আলোকচিত্রী আবির মাহমুদের তোলা ছবি
আলোকচিত্রী আবির মাহমুদের তোলা ছবি
জীবনের কত রকম গল্প রয়েছে, সেই গল্প কখনও রঙিন, কখনও রঙহীন, ধূসর-বিবর্ণ। বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে সেই জীবনের গল্পই তুলে আনার কাজটি নিবিড় মনে করে যাচ্ছে আলোকচিত্রী আবির মাহমুদ। স্বল্প সময়ের ফটোগ্রাফি ক্যারিয়ারে তার ছবি প্রদর্শিত হয়েছে ৮০টি দেশে। সাফল্যের ঝুলিতে জমা পড়েছে বেশকিছু পুরস্কারও।
কী ভেবে শুরু করলেন ফটোগ্রাফি, এমন প্রশ্নের উত্তরে আবির বলেন, ‘যাত্রার শুরুটা মোটেও সহজ ছিল না। সালটা ২০১৫, তখন আমি দশম শ্রেণির ছাত্র, পরিবার থেকে তেমন সাপোর্ট ছিল না। তারা মনে করতেন আমি হয়তো বখে যাচ্ছি। তাই নিজের হাতখরচের টাকা জমিয়ে একটি ফোন এবং ম্যাক্রো লেন্স কিনে শুরু হয় আমার ফটোগ্রাফির যাত্রা’।
এত স্বল্প সময়ে ৮০টি দেশে আপনার ছবি প্রদর্শিত হলো.. এই কথার রেশ ধরে আবিরের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় সফলতার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই, যদি কেউ একাগ্রতা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের কাজকে ভালোবাসে, তার পেছনে ছুটতে থাকে তবে সফলতা আসবেই । সবসময় চেষ্টা করতাম প্রচুর ঘুরে বেড়াতে। ২০১৭ সালে মোবাইল ফটোগ্রাফি ছেড়ে স্মার্ট ফোন বিক্রি করে দিলাম, একটা ছোট্ট সেকেন্ড হ্যান্ড ক্যানন পাওয়ারশট ক্যামেরা নিয়ে সেটা দিয়েই ছবি তুলতে লাগলাম, বলতে গেলে প্রায় সপ্তাহে ৩-৪ দিনই বের হতাম ছবি তুলতে। কখনো এখান থেকে সফলতা পাব তা ভাবিনি। শুধু নিজের মনমতো ছবি তুলতাম যা ভালো লাগত। মানুষের সঙ্গে মিশতাম এবং প্রচুর ছবি তুলতাম। এই ছবিগুলোই দেশ-বিদেশের ফটোগ্রাফি কন্টেস্টগুলোয় পাঠাতে থাকি। শুরুতে নিরাশ হলেও ধীরে ধীরে সাফল্য আসতে ধাকে।’
ফটোগ্রাফিতে অনুপ্রেরণার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ফটোগ্রাফিতে আমার অনুপ্রেরণা ডকুমেন্টরি ফটোগ্রাফার জিএমবি আকাশ স্যার এবং বগুড়ার ফটোগ্রাফার আব্দুল মোমিন ভাই।’ ‘ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে নিজের পুরস্কার সমগ্র থেকে অর্জিত অর্থ জমিয়ে একটি হাসপাতাল তৈরি করার, যেখানে অসহায় মানুষ এবং প্রাণীদের জন্য থাকবে বিনামূল্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা’, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও পরিকল্পনা এভাবেই ঠিক করেছেন। নতুনদের জন্য আবিরের পরামর্শ হলো , যারা ফটোগ্রাফিতে নতুন আসতে চান তাদের বলব, কখনও ধৈর্যহারা হওয়া যাবে না, ক্যামেরা সেটাপ যাই থাকুক না কেন, কষ্ট করে ধরে রাখতে হবে। জীবনে অনেক বাধা-বিপত্তি আসবে, তাই বলে হার মানা যাবে না।’
ডকুমেন্টারি ফটোগ্রাফির জন্য আবির ৩০টিরও বেশি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। এসবের মধ্যে অন্যতম--বগুড়া জেলা পুলিশ আয়োজিত ‘ফটো ফিভার ড্রাগস নেভার’, জাতীয় ছবি প্রতিযোগিতা, ওআইসি ইয়্যুথ ক্যাপিটাল ২০২০-এর বঙ্গবন্ধু ইয়্যুথ আর্ট কম্পিটিশনে ফটোগ্রাফি ক্যাটগরিতে প্রথম পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কার। সর্বশেষ ধরিত্রী দিবস উপলক্ষ্যে ইউএস অ্যাম্বাসি আয়োজিত #EarthDay আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায়ও প্রথম হয়েছেন আবির মাহমুদ। বর্তমানে আবির বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ফটোগ্রাফার হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রবা/জিকে/এসআর