প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৩ ১৫:০২ পিএম
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৩ ১৭:০২ পিএম
নিজের প্রতিষ্ঠা করা নৌকা স্কুলে তরুণ স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান। ছবি : সংগৃহীত
ছোটদের নোবলেখ্যাত ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার’ দৌড়ে কানাডা ও ভিয়েতনামের দুই ব্যক্তির সঙ্গে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান।
সারা বিশ্বের শিশুদের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী এরই মধ্যে নৌকাস্কুলের উদ্ভাবক রেজোয়ানসহ শিশুদের কল্যাণে কাজ করায় কানাডা ও ভিয়েতনামের আরও দুই কীর্তিমানকে ‘শিশু অধিকার নায়ক’ নির্বাচন করেছে।
এবার বিশ্বের লাখ লাখ শিশুর ভোটরে মাধ্যমে এই তিনজনের একজনকে সেরা নির্বাচন করা হবে। আর তার হাতেই উঠবে ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার (ডাব্লিউসিপি)-২০২৩’। বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলোয় সুইডেনভিত্তিক এই পুরস্কারকে ‘ছোটদের নোবেল প্রাইজ’ আখ্যা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান বেশ কয়েক বছর ধরে শিশুদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন। দেশে জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে ক্রমবর্ধমান বন্যা ও দারিদ্র্যের কারণে সুবিধাবঞ্চিত কন্যাশিশুদের স্কুলে পড়ালেখা শেখার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে চলেছেন তিনি।
রেজোয়ান ও তার প্রতিষ্ঠান ‘সিধুলাই স্ব-নির্ভর সংস্থা’ শিশুদের জন্য ২৬টি ভাসমান স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে, যেগুলো দেশ-বিদেশে খ্যাতি পেয়েছে রেজোয়ানের ‘নৌকাস্কুল’ নামে। বিশেষভাবে ডিজাইন করা নৌকায় ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি রয়েছে ভাসমান লাইব্রেরি ও স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক এবং কিশোরী-তরুণীদের জন্য রয়েছে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। রেজোয়ানের উদ্ভাবিত ভাসমান স্কুলের ধারণাটি বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৃথিবীর আরও কয়েকটি দেশে বাস্তবায়ন হয়েছে।
পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়া অন্য দুজন হলেন- কানাডার সিন্ডি ব্লাকস্টক এবং ভিয়েতনামের থিচ নু মিন তু। সিন্ডি গত ৩০ বছর ধরে আদিবাসী শিশুদের সুশিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, ঘরে নিরাপদে বেড়ে ওঠা এবং নিজের ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব করার অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করছেন। এ ছাড়া বৌদ্ধ থিচ নু এতিম ও অসহায় পরিবারের শিশুদের রক্ষায় প্রায় ৪০ বছর ধরে সংগ্রাম করে চলেছেন। ২০০০ সাল থেকে এই পুরস্কারের মাধ্যমে বিশ্বের চার কোটি ৬০ লাখ শিশু জেনে আসছে ‘শিশু অধিকার নায়করা’ কীভাবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করেন।
আগামী ৪ অক্টোবর সুইডেনের মেরিফ্রেডে গ্রিপশোলম প্রাসাদে এবারের ২০তম বিশ্ব শিশু পুরস্কার অনুষ্ঠানে রেজোয়ানসহ তিনজন শিশু অধিকার নায়ককে সম্মাননা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানের আয়োজক থাকবে ১২টি দেশের শিশুরা। পুরস্কার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শিশুদের সহযোগিতা করবেন সুইডেনের রানী সিলভিয়া। এই পুরস্কারের অর্থমূল্য সুইডিশ মুদ্রায় ৫ লাখ ক্রোনা, যা ৫০ লাখ টাকারও বেশি। এই অর্থ তিনজন শিশু অধিকার নায়ককে ভাগ করে দেওয়া হবে, যা তাদের কাজে সহায়তা করবে।
মর্যাদাশীল এই পুরস্কারের পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে রয়েছেন- মালালা ইউসুফজাই, প্রয়াত নেলসন ম্যান্ডেলা ও ডেসমন্ড টুটু, রানী সিলভিয়াসহ সুইডেনের বেশ কয়েকজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী। তা ছাড়া এই পুরস্কার অনুষ্ঠানে ১২০টি দেশের ৭৬ হাজার স্কুল ও ৮৪৯টি সংগঠনের সহযোগিতা রয়েছে।