× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঐ দূর পাহাড়ে

ইকরামুজ্জামান হাসান

প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩৯ পিএম

আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:০৯ পিএম

প্রতিকূল পরিস্থিতি উপেক্ষা করে প্রতি বছর অনেক অভিযাত্রী ছুটে চলেন সাকা সামিটে

প্রতিকূল পরিস্থিতি উপেক্ষা করে প্রতি বছর অনেক অভিযাত্রী ছুটে চলেন সাকা সামিটে

বান্দরবানের গহিনে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের মদক রেঞ্জে অবস্থিত সাকা হাফং মদক তং, ক্লাংময়, তলাংময়, বর্ডার হুম ইত্যাদি নামে পরিচিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই পর্বতের অবস্থান ৩ হাজার ৪৮৭ ফুট উঁচুতে। সীমান্তের কঠিন পরিস্থিতি, কষ্টসাধ্য পথ, জোঁক, সাপ, ভালুকসহ নানা বন্য প্রাণীর আক্রমণ উপেক্ষা করেও প্রতি বছর অসংখ্য পর্যটক ছুটে যান সাকা হাফংয়ে। লিখেছেন ইকরামুজ্জামান হাসান

নভেম্বরের শুরুর দিকে রাতের বাসে বান্দরবান রওনা দিলাম। এবারের ট্যুরটা হবে জীবনের দ্বিতীয় ট্রেকিং! বলা যায়, এক্সট্রিম ট্রেকিং সম্পর্কে কোনো রকমের ধারণাই নেই, আগের বারের ট্যুরে রুমা থেকে বগা তারপর বগা থেকে কেওক্রাডং- এই ছিল ট্রেকিং অভিজ্ঞতা। যাই হোক, পরদিন রুমা বাজার পৌঁছেই গাইড ঠিক করে নিলাম, ৭ দিনের ট্যুর। প্রথম রাত বগাতেই ছিলাম। পরদিন সকালে দুই বন্ধু আর গাইড বেরিয়ে পড়লাম। এখানে বলে রাখা ভালো আমার যে প্ল্যান ছিল শুরু থেকেই গাইডের কল্যাণে অনেক পরিবর্তন হলো। 

ট্রেক শুরু

শুরুতে কেওক্রাডংয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে ট্রেক শুরু করলাম। দুই রাত ঠিকমতো ঘুমাতে না পেরেই মনে হয়, শুরুতেই কষ্ট লাগছিল। কেওক্রাডং ট্রেকের শুরুর কিছু পর মোটামুটি ঢাল বেয়ে উঠতে হয়, ওখানে গিয়েই হাঁপাতে শুরু করলাম। আমাদের পেছনেই তিনজন বিদেশির টিম ছিল। আমি যখন ক্লান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখন আমার পাশ দিয়েই বিদেশিরা যাচ্ছিল। তাদের ভেতর দুইজন ছিল মেয়ে। শেষ মেয়েটা যখন পাশ কাটিয়ে চলে গেল, তখন নিজের ভেতরে চ্যালেঞ্জ ফিল করলাম। আবার শুরু করলাম ট্রেক, দার্জিলিং পাড়াতে গিয়ে তাদের পেলাম। জাদিপাই থেকে ফেরার সময় খাড়া দিয়ে ওঠার সময় খুব কষ্ট হচ্ছিল। পাড়াতে ফিরে খাওয়ার পর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না, শুয়ে পড়লাম।

ঘুম ভাঙল বিকালে, ভাবলাম জাদিপাই পাড়াতেই থেকে যাই আজ। কিন্তু গাইডের পীড়াপীড়িতে আবার ট্রেক শুরু করলাম। যাব থাইক্ষিয়াংপাড়া। থাইক্ষিয়াংপাড়াতে যাওয়ার সময় গাইড বলছিল এই ট্রেইলের আশপাশে মাঝেমধ্যে ভালুক দেখা দেয়, কিছুদিন আগেই নাকি এক মারমা ছেলেকে আক্রমণ করে আধমরা বানিয়ে ফেলেছিল। আমি ছিলাম শেষে আর পুরা ট্রেইলে শুধু আমরা তিনজন, আশপাশ নীরব। মাঝেমধ্যে অজানা একটা পোকার বিকট শব্দে পথ চলতে থাকলাম। সব মিলিয়ে কেমন একটা ছমছমে পরিবেশ। কিছুক্ষণ পরপর পেছনের ট্রেইলটা দেখে নিচ্ছি। এর পর হালকা বৃষ্টি শুরু হলে মেঘে ঢেকে গেল পুরা ট্রেইল। এখন আরও রহস্যময় লাগছে সবকিছু। কিন্তু এ পর্যায় আর ভালুকের ভয় মনে কাজ করছে না। মেঘে ঢাকা পাহাড়ের মাঝের ট্রেইল ধরে এগিয়ে যাচ্ছি আর মনে হচ্ছে স্বপ্নিল কোনো পরীদের দেশে যাচ্ছি। সত্যি বলতে কী, তখনকার অনুভূতি ছিল অবর্ণনীয়। 

সাকা হাফং সামিটে প্রকৃতির বিভিন্ন রূপ মন কাড়ে

হারিয়ে যাওয়ার ভয়

সন্ধ্যায় থাইক্ষিয়াংপাড়া পৌঁছালাম। কারবারির ঘরে ব্যাগ রেখে একটু বিশ্রাম নিয়ে বের হলাম গোসল করতে। আমার বন্ধু আর গাইড তখন আর বের হয়নি। এইখানে একটা হাস্যকর ঘটনা ঘটেছিল। গোসল শেষ করে ব্যাক করছি অন্ধকারের মাঝে, হঠাৎ আমি আবিষ্কার করলাম কারবারি ঘর কোনটা, চিনতে পারছি না! প্রথমে পাড়ার এমাথা-ওইমাথা ঘোরাঘুরি করলাম কিন্তু পেলাম না। পাড়ার অনেক মানুষ তখন সান্ধ্যকালীন আড্ডায় পাড়ার উঠানে জড়ো হয়েছে। সবাই আমার দিকে কৌতূহল নিয়ে তাকাচ্ছে। আর আমি আতঙ্ক নিয়ে ভাবছি কী করা যায়, পরে লাজলজ্জার মাথা খেয়ে পাড়ার এক দাদাকে গিয়ে বললাম, দাদা কারবারির ঘরটা খুঁজে পাচ্ছি না, একটু দেখিয়ে দেবেন? সে অবাক হয়ে আমার দিকে চেয়ে প্রশ্ন করলেন, খুঁজে পাচ্ছি না মানে কী? বললাম আমি আসলে হারিয়ে ফেলেছি!! শুনে চার-পাঁচজন দাদা প্রাণ খুলে হেসে উঠলেন। হাসতে হাসতেই এক দাদা বললেন, আসেন আমি নিয়ে যাব। পরে কারবারির ঘরে গিয়ে ঘটনা শুনে আরেক দফা হাসাহাসি চলল। 

গন্তব্য নেপিউপাড়া

পরদিন খুব ভোরে উঠেই আবার বের হলাম, আজকের গন্তব্য সরাসরি নেপিউপাড়া। সকালে বের হয়ে একবার ঝিরি ধরে কখনও খালের পাড় দিয়ে, আবার ঝিরি পার হয়ে এভাবে করতে করতে প্রায় শেষ বিকালে সাকার নিচে হাজরয়পাড়ায় পৌঁছালাম, ঝিরি পার হওয়ার সময় আমার ব্যাকপ্যাক ভিজে গিয়েছিল। ক্রমশ ভারী হয়ে আসছিল, টানতে কষ্ট হচ্ছিল। এদিকে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছে, তাই ভাবলাম আজকে হাজরয়পাড়াতে থেকে যাব। কিন্তু গাইড বলল, হাজরয়পাড়াতে থাকা ঠিক হবে না। পাড়ার মানুষ নাকি খুব একটা ফ্রেন্ডলি না। অগত্যা পাহাড় বেয়ে উঠতে শুরু করলাম। অল্প একটু ওঠার পরই ঝুপ করে সন্ধ্যা নেমে এলো আবছা আলোর মাঝের এই ট্রেকিং আমার অনেকদিন মনে থাকবে, মাঝেমধ্যে মনে চাইছিল কান্না করি। কারণ ওজন ব্যাকপ্যাক খুব ভারী লাগছিল। একে তো অভিজ্ঞতা না থাকায় ব্যাকপ্যাক কিছুটা ভারীই ছিল তার ওপরে ভিজে আরও ভারী হয়ে উঠছিল যেন, এদিকে সন্ধ্যার আলো মিলিয়ে যাচ্ছিল আর আমি ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছিলাম আমার বন্ধু আর গাইড থেকে।

মাঝেমধ্যেই ওরা জঙ্গলের মাঝে চোখের আড়ালে চলে যাচ্ছিল, তখন ওদের ডাক দিচ্ছিলাম। এদিকে ব্যাকপ্যাকের ওজনের কারণে আমার অবস্থা শেষ! খাড়া ঢাল দিয়ে উঠতে উঠতে মাঝেমধ্যেই মনে হচ্ছিল ব্যাকপ্যাকের টানে পেছন দিকে পড়ে যাব। এর মাঝে পুরোপুরি আঁধার হয়ে গেল, সঙ্গে কোনো লাইট ছিল না, রাতে ট্রেকিং করা লাগতে পারে আর সেই ক্ষেত্রে লাইটের দরকার হবে, এসব কিছুই তো তখন যানতাম না! যাই হোক মোবাইল লাইটের টিমটিমে আলোতে আঁধারের মধ্যে কোনো রকমে ওপরে উঠছিলাম, যতই উঠছিলাম আর মনে হচ্ছিল নেপিউপাড়ার দেখা আর পাব না কোনো দিন।

এই জঙ্গলের শেষ হবে না আর। তা ছাড়া নিজেরে ক্রমাগত অভিশাপ দিয়ে যাচ্ছিলাম যে, কোনো পাগলে বলছিল পাহাড়ে আসতে, চার হাত-পায়ে আশপাশের ঝোপজঙ্গলা ধরে কোনো রকম ব্যালান্স রাখতে রাখতে প্রতিজ্ঞা করছিলাম আর জীবনে যদি পাহাড়ে আসি! যাই হোক বহুযুগ পরে ওপরে অন্ধকারেরর মাঝে দিয়ে যেন টিমটিমে কিছু হালকা আলো দেখা যাচ্ছিল। গাইড জানাল ওইটাই নেপিউপাড়া, মুহূর্তেই যেন স্পিড বেড়ে গেল, অবশেষে নেপিউপাড়া! মোটামুটি বিধ্বস্ত অবস্থায় পাড়ায় ঢুকলাম, কিন্তু রেস্ট নেওয়ার আগেই জোঁক ছাড়ানোটা দরকারি হয়ে উঠল আমাদের দুই বন্ধুর শরীর থেকে মোটামুটি ২০টার মতো জোঁক ছাড়ালাম। এই কাজে পাড়ার দাদারা খুব সাহায্য করলেন। 

সাকা সামিট

পরদিন সকালে উঠে খাওয়দাওয়া সেরে নিয়ে নয়টার দিকে বের হলাম সাকা সামিটের জন্য। এখানে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম, নেপিউপাড়া আসতেই আমার পায়ের জুতা প্রায় শেষ, কোনো ট্রেকিং সু ছিল না। প্রায় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট ট্রেকিং করে সাকার চূড়াতে পৌঁছালাম। আহ সাকা হাফং! আমরা সামিটের যেখানে বসেছিলাম, ঠিক ওখান থেকেই পাহাড়টা ভীতিকরভাবে মিয়ানমারের দিকে খাড়া নেমে গেছে। এক ঘণ্টার মতো ছিলাম চূড়াতে, ইচ্ছমতো দেখে নিলাম। এরপর আবার পাড়াতে ব্যাক করলাম। ইচ্ছা হলো আজকে পাড়াতে থাকব, দেখব। নেপিউপাড়াটা কেমন যেন আদিম টাইপের। মনে হয় যেন সময় এখানে পিছিয়ে গেছে। দুপুরের পরে পাড়াতে মনে হলো উৎসব লেগে গেছে, ঘটনা কী? ঘটনা হচ্ছে বিশাল দুটি গুইসাপ (গুল) ফাঁদে ধরা পড়েছে। এ দুটি আজকের উৎসবের উপলক্ষ। কিছু সময় পর কারবারির ঘরের উঠানে আগুনে ঝলসানো শুরু হলো। 

শেরকর পাড়ায় স্থানীয় অধিবাসীদের জীবনচিত্র

ভয়ংকর অভিজ্ঞতা  

এর পরদিন ভোরে নেপিউপাড়া থেকে রওনা দিলাম। আজ নাইক্ষামুখ পর্যন্ত যাওয়ার ইচ্ছে আছে। সাকা থেকে যাওয়ার পথেই পড়ল নেপিউ ফল, এর কিছু পরে আরেকটা। তারপর কখনও ঝিরির পাশ দিয়ে আবার কখনও কোমরসমান পানি পার হয়ে। এদিকের জঙ্গল অনেক ঘন ও কিছু কিছু জায়গায় সূর্যের আলোও ঠিকমতো পৌঁছায় না। একদমই ঘন জঙ্গল। দুপুরের একটু পর নাইক্ষামুখ পৌঁছলাম। নাইক্ষামুখ ছাড়িয়ে সামনে দুই পাশেই পাহাড় খাড়াভাবে উঠে গেছে, ক্যানিয়নের নিচে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে স্বচ্ছ পানি। এক ঘণ্টা এখানে থাকলাম। সামনে এগোতে হবে। কিন্তু ঝামেলা হচ্ছে কোনো ভেলা নাই। গাইডকে জিজ্ঞেস করলাম এখন সামনে যাব কীভাবে, তখন ও বলল আশপাশের কোনো একটা পাড়ায় থেকে যেতে। একটা ব্যবস্থা তখন করা যাবে। আরেক রাত এখানে থাকলে খরচে কুলিয়ে উঠতে পারব না। গাইডকে বললাম যে সামনে আগাব, এখন সামনে আগাতে হলে আমাদের ভেলা লাগবে। ভেলা নাই, তার মানে বানাতে হবে।

ভেলা বানানো শুরু হলো জঙ্গলের বাঁশ কেটে নিয়ে। একটা সময় ভেলা বানানো শেষ হলো্ এবারে সমস্যা দেখা দিল, ভেলা নামানো হবে কীভাবে? সমাধান দিল গাইড, বলল নাইক্ষামুখের স্ট্রিমটা থেকে লাফ দিতে, তারপর সে ভেলা ছাড়বে, শেষে সে আমাদের ব্যাকপ্যাক নিয়ে লাফ দেবে! তার মাঝে আমি পারি না ঠিকমতো সাঁতার। পরে বন্ধুকে বললাম যে, এটা সম্ভব না। কারণ আমি যে সাঁতার পারি তাতে এই পানির স্রোতে ডুবে যাব, পরে আমি আর আমার বন্ধু মিলে সামনে গিয়ে খুঁজলাম এমন কোনো জায়গা যেখান দিয়ে ভেলা নামানো যায়। সুবিধামতো মিলল না। খুব ছোট চাতালের মতো জায়গা পেলাম, যেখানে শুধু কোনো রকমে একজন দাঁড়ানো যায়। ঠিক হলো, আমি ওখান দিয়ে দাঁড়াব আর ওরা ভেলা নিয়ে যখন আমার সামনে দিয়ে পার হবে, তখন আমি লাফ দেব ভেলার দিকে। দাঁড়িয়ে দেখলাম ওরা মেইন স্ট্রিম থেকে লাফ দিল, দুইটা ভেলার একটা ভেসে গেল আর একটা কোনো রকমে ধরে ওরা আসতে লাগল স্রোতে ভেসে। আর আমি তৈরি হচ্ছিলাম লাফ দেওয়ার জন্য। আমি ঠিকমতো সাঁতার পারি না! লাফ দিলাম আর ভেলাও ধরতে পারলাম। 

একপাশ দিয়ে ভেলা আঁকড়িয়ে ধরে, ভেলার ওপরে ব্যাগ রেখে ভেলা নিয়ে স্রোতে ভেসে সামনে যাচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ পর হাতের বাঁদিক দিয়ে জঙ্গলে ঢোকার রাস্তা পেলাম। অবশেষে আমিয়াখুম! এক ঘণ্টার মতো সময় কাটিয়ে সন্ধ্যার কিছু আগে দেবতা পাহাড় বেয়ে উঠতে শুরু করলাম, শুরু হলো বৃষ্টি। ভিজতে ভিজতে পাহাড় বেয়ে যাচ্ছি। একপর্যায় আমার এক পাটি জুতা কাদায় আটকে গেল। সন্ধ্যার আলো আর মুষলধারে বৃষ্টিতে আর খুঁজে পেলাম না। রাতে জিনাপাড়ার আগের পাড়াটাতে পৌঁছলাম। পরদিনে ভোরে আবার বের হয়ে সারা দিন ট্রেক করে, নাফাখুম দেখে বিকালে পৌঁছালাম রেমাক্রি। সে রাতে রেমাক্রিতে ছিলাম, সারা রাত বৃষ্টি হলো। পরদিন বোটে করে থানচি রওনা দিলাম। আগের দিনের সারা রাতের বৃষ্টিতে পানির উচ্চতা আর স্রোত দুইটাই বেশি ছিল। নিরাপদেই থানচি বাজার পৌঁছালাম। খাওয়াদাওয়া করে দুপুরের পরে বাসে করে বান্দরবান রওনা দিলাম। শেষ হলো অসাধারণ সাত দিনের অ্যাডভেঞ্চারের, এখন বাড়ি ফেরার পালা।

শীতের এই সময়ে পাহাড় ট্রেকিংয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য সাকা হাফং হতে পারে উপযুক্ত স্থান। দেশের সর্বোচ্চ এই বিন্দুতে পৌঁছানোর জনপ্রিয় এক রুট হলো থানচি থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তিন্দু ও বড় পাথর হয়ে রেমাক্রি বাজার পৌঁছাতে হবে।

সেখানে পৌঁছেই নৌকা থেকে নেমে শুরু মূল অভিযান। রেমাক্রি থেকে নাফাকুম, জিনাপাড়া, আমিয়াকুম, সাতভাই কুম, হাজরাইপাড়া, নেফিউপাড়া হয়ে সাকা হাফংয়ের চূড়ায় পৌঁছাতে হবে। যথেষ্ট কষ্টসাধ্য হলেও যখন আপনি সেখানে পৌঁছাবেন শরীরের সব ক্লান্তি মুহূর্তেই দূর হয়ে যাবে। আপনি যে পথ ধরেই সেখানে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন না কেন, সময় লাগবে অন্তত ৫-৬ দিন। তাই সাকা হাফং অভিযানের প্রস্তুতিও ভালো করে নেওয়া প্রয়োজন। পাহাড়ি রাস্তা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বসতবাড়ি ও জীবনধারণ, ছোট-বড় ঝরনা, প্রকৃতি, বন্যপ্রাণী, জঙ্গল, পাহাড় সবকিছুরই দেখা পাবেন পুরো অভিযানে। 

পাহাড়ে সাবধানতা 

  • সাকা হাফং অভিযানকালে অবশ্যই সঙ্গে জিপিএস ডিভাইস, ভালো ব্যাকপ্যাক, গ্রিপ করা জুতা, গামছা, ব্যাটারিসহ উন্নত মানের টর্চলাইট, শুকনো খাবার, পানির বোতল, ফ্লাক্স, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, হালকা পোশাক, শীতের কাপড় নিন।
  • এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় ওষুধ, ফার্স্টএইড বক্স, খাবার স্যালাইন, টয়লেট পেপার, ৭০ ফুট দৈর্ঘ্যের শক্ত দড়ি, পলিথিন, ব্যাগ, প্লেট, গ্লাস, চামচ, ছোট ছুরি, গ্যাসলাইট, ক্যামেরা, উন্নত মানের পাওয়ার ব্যাংক ইত্যাদি সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।
  • আর যারা পাহাড়ি গ্রামে রাত্রিযাপন না করে ক্যাম্পিং করতে চান তারা অবশ্যই সঙ্গে তাঁবু বা স্লিপিং ব্যাগ রাখুন। 
  • পাহাড় ভ্রমণে অবশ্যই স্থানীয় গাইড নেবেন। পথে যেকোনো বিপদ হতে পারে। খরচ বাঁচাতে গাইড ছাড়া পাহাড়ি দুর্গম অঞ্চলে প্রবেশের পরিকল্পনা করবেন না।
  • পাহাড়ি পথ যেহেতু আঁকাবাঁকা সরু তাই পাহাড় ভ্রমণে স্থানীয় দক্ষ ড্রাইভার নিন।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা