শিমলা
আহসান রনি
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২২ ১৪:৪১ পিএম
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৪৫ পিএম
দূর থেকে শিমলাকে দেখলে মনে হয় যেন পাহাড়ের উপর থরে থরে সাজানো একটি শহর ছবি: আহসান রনি ও দীপ কুন্ড
পাহাড়ের ওপর তৈরি হওয়া যেকোনো শহরই পর্যটকদের সবসময় মুগ্ধ করে। ভারতের হিমাচল প্রদেশের শিমলা সারা ভারতসহ পৃথিবীর নানা দেশের পর্যটকদের আকর্ষণ করে এর ব্যতিক্রমী সৌন্দর্য দিয়ে। দূর থেকে শিমলাকে দেখলে মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর থরে থরে সাজানো একটি শহর; যেখানে সুন্দর প্রকৃতির মাঝে গড়ে উঠেছে মানব সভ্যতা। চলুন দেখে নেওয়া যাক শিমলাতে গেলে কোন কোন অভিজ্ঞতা নিতে পারেন-
শিমলার প্রতীক হিসেবে এই চার্চটিকে সবাই মনে করেন। ১৮৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই চার্চটি শিমলা মল রোডের পাশে দ্য রিজে অবস্থিত। আকর্ষণীয় অর্থোডক্স ইউরোপীয় স্থাপত্য এই চার্চটি উত্তর ভারতের ২য় পুরোনো চার্চ। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে রবিবারে প্রার্থনায় যুক্ত হতে পারলে এটি আপনার জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা হবে।
শিমলা শহর ও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখার এক দারুণ স্থান শিমলা কালীবাড়ি। ইতিহাস মতে, রাম চরণ ব্রহ্মচারী ১০০ বছর আগে শহরটিকে রক্ষার জন্য কালী মাতার প্রতি শ্রদ্ধা থেকে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। সারা ভারতের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শিমলাতে এলে কালী মন্দির থেকে আশীর্বাদ না নিয়ে যান না। এই মন্দির থেকে পুরো শিমলা শহর দেখার পাশাপাশি বিস্তীর্ণ পাহাড়ের সারি ও মনোমুগ্ধকর সূর্যাস্ত দেখা যায়।
শিমলা মল রোডের আশপাশে স্ট্রিট ফুডের সমাহার। শিমলার বিখ্যাত ছোলে কুলচে বা মমো থেকে শুরু করে পাপরি চাট; সকল খাবারই মুগ্ধ করবে আপনাকে। মূল মল রোড থেকে একধাপ নিচে নামলেই পাঞ্জাবি ধাবা পাবেন অনেকগুলো; সেখান থেকে যেমন পাঞ্জাবি খাবার খেতে পারেন তেমনি কয়েকটি দোকানে বিরিয়ানীসহ নানা স্ট্রিট ফুডের সমাহার মিলবে, আছে নানা ধরনের মজাদার মিষ্টি।
দ্য রিজ বা মল রোড থেকে ২.৫ কিলোমিটার পাহাড়ে উঠলেই পাওয়া যায় এই হনুমান মন্দিরের দেখা। শিমলাতে ঢুকলেই দূর থেকে পাহাড়ের ওপরে ১০৮ ফুট উঁচু হনুমানের মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়। এই মন্দিরে যাওয়ার রাস্তাটিতে ট্রেকিং করে ওঠার জন্য দারুণ সিঁড়ি আছে এবং ট্রেকিংয়ের সময় আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। পথে অনেক বানরের সঙ্গে দেখা হবে, জিনিসপত্র সাবধানে রাখবেন।
শিমলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ে অন্তরালে অবস্থিত অপরূপ কুফরি। এখানে প্রাকৃতিক পার্ক যেমন আছে তেমনি চারপাশে দেখতে পাবেন আপেলের বাগান। কুফরিতে একটু ঢু মেরে আসতে পারেন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তির স্থান 'ললিত ক্যাফে'-থেকে। ইন্দিরা গান্ধী থেকে শুরু করে অনেক বিখ্যাত নেতা আসায় এটি একটি ঐতিহাসিক স্থানও বটে।
শিমলা শহরটির বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ। এই বিভিন্ন রূপের সাক্ষী হতে আপনাকে মল রোড ও রিজে সময় কাটাতে হবে। সকাল, বিকাল, সন্ধ্যা ও রাতে মল রোড ও রিজের সৌন্দর্য দেখে আপনি অবাক হবেন। যেমনি সারা পৃথিবী থেকে আসা মানুষ দেখবেন, তেমনি দূরে পাহাড়ের অপরূপ সারি এবং সেই সারির মধ্যে ছোট ছোট ঘরবাড়ি দেখবেন। শিমলা মল রোডে বারবার হাঁটলেও কখনও ক্লান্ত হবেন না।
ছবি: আহসান রনি ও দীপ কুন্ড
প্রবা/জিকে/আআ