× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আলীর গুহা

কীভাবে যাবেন রহস্যময় স্থানটিতে

গোলাম কিবরিয়া

প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২২ ১৫:৪৫ পিএম

আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২২ ১৬:৩৩ পিএম

ছবি : নাকিব নিজাম

ছবি : নাকিব নিজাম

ছবি : নাকিব নিজাম

ছবি : নাকিব নিজাম

অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা যারা দেশের ভেতরেই থ্রিলিংয়ের স্বাদ নিতে চান, তাদের জন্য আদর্শ ভ্রমণ গন্তব্য আলীর সুড়ঙ্গ। রহস্যময় আলী গুহা বা আলীর সুড়ঙ্গ বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলায় অবস্থিত। লিখেছেন গোলাম কিবরিয়া

আলীর সুড়ঙ্গ নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। আলীকদম সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে মাতামুহুরী-টোয়াইন খাল ঘেঁষে দুই পাহাড়ের চূড়ায় এই গুহার অবস্থান। এলাকাবাসীর কাছে এই গুহা আলীর সুরম নামে পরিচিত। সরকার এই গুহাকে পুরাকীর্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এখানে মূলত তিনটি গুহা রয়েছে। সবগুলো গুহা যদি ঘুরে দেখতে চান তাহলে আপনার দুই ঘণ্টা সময় লেগে যাবে। গুহা ঘুরতে আপনাকে ঝিরিপথ দিয়ে চলতে হবে। ঝিরি থেকে গুহার মুখ ওপরে অবস্থিত। প্রথম গুহা ঘুরতে আপনার বেশি সমস্যা হবে না; কারণ প্রথম গুহায় সিঁড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বাকি গুহাগুলোতে পাহাড় বেয়ে উঠতে হবে।

গুহার কিছু অংশে হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হবে; কারণ এর কিছু অংশ বেশ সরু। গুহার ভেতরে গেলেই যেন এক অজানা রহস্য আপনাকে ঘিরে রাখবে। নতুন এক জগতের সঙ্গে পরিচয় হবে আপনার। ভেতরে যেতে অবশ্যই টর্চ কিংবা মশাল নিতে হবে। ঘুটঘুটে অন্ধকার এই গুহার ভেতরটা। গা ছমছম করা পরিবেশ এবং একেবারেই স্যাঁতসেঁতে এই গুহাগুলো। আদিবাসী তরুণরা জানান, এই সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ৭০০ মিটারের মতো হবে। তারা পর্যটকদের সঙ্গী হয়ে ২০০ মিটার পর্যন্ত গিয়েছিলেন। বাকি পথ যাওয়া সম্ভব হয়নি।

দুর্গম পাহাড়ের এই সুড়ঙ্গ নিয়ে রয়েছে নানা কিংবদন্তি। জানা গেল, ১৮ জন আরাকানি (মিয়ানমার) রাজা রাজ্য পরিচালনার সুবিধার্থে মুসলিম উপাধি ধারণ করেন। এর মধ্যে ১৪৩৪-৫৯ খ্রিস্টাব্দে শাসন কাজ পরিচালনা করেন রাজা মংখারি। তার মুসলিম উপাধি ছিল 'আলী খান'। ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে রাজত্ব করেন রাজা থাজাথা। তার মুসলিম উপাধি ছিল আলী শাহ। এ কারণে এলাকার নাম আলীকদম আর সুড়ঙ্গের নাম আলী গুহা হতে পারে। জনশ্রুতি আছে, ৩৬০ আউলিয়া উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের জন্য এসেছিলেন। এদের মধ্যে একটি অংশ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইসলামের জয়নিশান উড়িয়েছিলেন। তাদের মধ্যে আলী নামের কোনো আউলিয়া থাকতে পারেন। যার পদধূলিতে নাম হয়েছে আলীকদম বা আলী গুহা।

গাইড : আলী গুহা বা আলীর সুড়ঙ্গে আগে না গিয়ে থাকলে একা না যাওয়াই ভালো। সঙ্গে গাইড নিয়ে নেবেন। আলীকদম থেকে কাউকে নিয়ে নিতে পারেন গাইড হিসেবে। তা ছাড়া ঝিরিপথের শুরুতেই বেশ কিছু ছেলে দাঁড়িয়ে থাকে, তাদের মধ্য থেকেও কাউকে নিতে পারেন। তবে আগে থেকেই কথা বলে নেবেন সবগুলো গুহা যেন ঘুরে দেখায়।

থাকার ব্যবস্থা : আলী গুহায় এক দিনে গিয়েই ঘুরে আসতে পারবেন। রাতে ঢাকা থেকে বাসে করে গিয়ে সারা দিন ঘুরে আবার রাতের বাসে ঢাকায় ফিরে আসতে পারেন। চট্টগ্রাম থেকে খুব সকালে গেলে ঘুরে আবার এক দিনেই ফিরে আসতে পারবেন। তারপরও যদি থাকার প্রয়োজন হয় তাহলে আলীকদমে উপজেলা রোডে দ্য দামতুয়া ইন অথবা জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে থাকতে পারেন। অথবা পানবাজারে একটি বোর্ডিং আছে; মান তেমন ভালো নয়, চাইলে এই বোর্ডিংয়েও থাকতে পারেন।

খাওয়ার ব্যবস্থা : আলীকদমে বেশ কিছু খাবারের হোটেল আছে। এ ছাড়া পানবাজারেও বেশ কিছু হোটেল রয়েছে। খুব ভালো মানের খাবার না থাকলেও মোটামুটি মানের খাবার পাবেন এসব হোটেলে।

কীভাবে যাবেন : আলী গুহায় যেতে প্রথমেই আপনাকে বান্দরবান যেতে হবে। বান্দরবান জেলার আলীকদম পৌঁছে তারপর আলী গুহায় যেতে হবে। বান্দরবান শহর থেকে থানচি-আলীকদম রোড দিয়ে কিংবা কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা হয়ে আলীকদমে যেতে হবে।

ঢাকা থেকে আলীকদম : ঢাকা থেকে সরাসরি আলীকদম যেতে পারবেন। ঢাকায় শ্যামলী ও হানিফ বাস সরাসরি আলীকদম যায়। ঢাকা থেকে সরাসরি যাওয়াই ভালো। এতে সময় অনেক কমে যায়। এ ক্ষেত্রে ভাড়া হবে ৮৫০ টাকা। এ ছাড়া কক্সবাজারগামী যেকোনো বাসে চকরিয়া গিয়ে যেতে পারেন আলীকদম। ঢাকা থেকে চকরিয়া বাসভাড়া নেবে ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। চকরিয়ায় আলীকদম যাওয়ার লোকাল বাস রয়েছে। এসব বাস প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত আলীকদমের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তা ছাড়া লোকাল জিপ অথবা চাঁদের গাড়িতে করে চকরিয়া থেকে আলীকদম যেতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে লোকাল ভাড়া নেবে ৬০-৬৫ টাকা। রিজার্ভ নিলে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা নেবে ভাড়া।

আলীকদম থেকে আলীর গুহা : প্রথমে আলীকদম থেকে তিন কিলোমিটার দূরে মংচপ্রুপাড়ায় যেতে হবে। হেঁটে কিংবা ইজিবাইকে করে যেতে পারেন। মংচপ্রুপাড়ার পাশ দিয়েই রয়েছে টোয়াইন খাল। এই খাল পার হয়ে কিছুক্ষণ পাহাড় ও ঝিরিপথে হেঁটে আলীর সুড়ঙ্গে যেতে হবে। সময় লাগবে ২০-৩০ মিনিট। সবগুলো গুহা দেখা ও আসা-যাওয়ায় মোট সময় লাগবে তিন ঘণ্টার মতো। যারা পাহাড়-নদী, ঝরনা আর অরণ্য পাছন্দ করেন তাদের জন্য আলীকদম অনন্য স্থান।

প্রবা/জিকে/জেআই

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা