কক্সবাজার সৈকত
কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০৯ পিএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:০৪ পিএম
পর্যটকের ঢল নেমেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারে। প্রবা ফটো
শীতের মৌসুমের শেষ মুহুর্তে পর্যটকের ঢল নেমেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত শহর কক্সবাজারে। ভ্রমণপিপাসুদের কেউ কেউ সৈকতের বালিয়াড়িতে আনন্দ-কোলাহলে মত্ত, কেউ নোনাজলে সমুদ্রস্নানে মাতোয়ারা। এরই মধ্যে শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলের কোথাও কোনো কক্ষ খালি নেই।
পর্যটন মৌসুম শেষ হতে বাকি মাত্র কয়েকটা দিন। কিছুদিন পরই শুরু হচ্ছে মাহে রমজান। তাই মৌসুমের শেষ পর্যায়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনের সঙ্গে একুশে ফেব্রুয়ারি যুক্ত হওয়ায় পর্যটকের ঢল নেমেছে সৈকতে। সাগরতীরে যেদিকে চোখ যায়, দেখা মিলে শুধু মানুষ আর মানুষ। তীব্র গরমের মাঝে নোনাজলে মাতোয়ারা প্রকৃতিপ্রেমিরা। জেড স্কী কিংবা ঘোড়ার পিঠে ওঠে ছবি তুলে তা স্মৃতি হিসেবে রেখে দিচ্ছেন। সাগরতীর যেন পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে।
সুগন্ধা পয়েন্টে আসা পর্যটক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা থেকে দীর্ঘ সময় বাসে চড়ে কক্সবাজার আসা। এত ক্লান্তির মধ্যেও হোটেলে বিশ্রাম না নিয়ে ছুটে এসেছি সমুদ্র দেখার জন্য। সমুদ্রের নোনাজল গায়ে লাগার সঙ্গে সঙ্গে সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে।’
একই পয়েন্টে ভ্রমণরত তাহমিনা নাসরিন বলেন, ‘খুব বেশি আনন্দ করছি। আগামী দুইদিন কক্সবাজারে থাকব। এখানে সাগর, পাহাড় ও প্রকৃতির সঙ্গে আনন্দ করে কাটাব।’
সিলেট থেকে আসা ইব্রাহিম আজাদ বলেন, ‘তিন বছরের সন্তান রুহীকে নিয়ে প্রথম সমুদ্র দেখা। খুবই ভালো লাগছে। কক্সবাজার এলেই সব ভালো লাগে। এটা একটা ভালো লাগার স্থান।’
আরেক পর্যটক তৌহিদ আলম বলেন, ‘যখন ক্লাস ফাইভে ছিলাম তখন কক্সবাজারে এসেছিলাম। তখন সবকিছু এলোমেলো ছিল, কিন্তু এখন সবকিছু অনেক গোছালো মনে হচ্ছে।’
হোটেলে রুম ভাড়া না পেয়ে ব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে অনেক পর্যটক বালিয়াড়িতেই অবস্থান করছেন, অনেকে সাগরতীরে। কেউ কেউ সড়কে পায়চারি করে সময় পার করছেন। তবে কেউ কেউ হোটেল, মোটেল ও যানবাহনের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগও তুলেছেন।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মোবারক হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজারে এতো মানুষ হবে, চিন্তা করিনি। হোটেল পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে, যেহেতু আগে হোটেল বুকিং দিইনি। তবে ভাড়াটা একটু বেশি মনে হয়েছে, একটা এপার্টমেন্টের ৩টি রুম ৩ দিনের জন্য ৪০ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছি।’
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক সুমাইয়া ইয়াসমিন বলেন, ‘পরিবারের ১৪ জনকে নিয়ে কক্সবাজার এসেছি। কিন্তু হোটেলে রুম না পেয়ে সৈকতের বালিয়াড়ি চলে আসি। এখানে লকারগুলোতেও বক্স পাওয়া যায়নি। যার কারণে ব্যাগ ও লাগেজগুলো বালিয়াড়িতে রেখে আনন্দ করছি। যদি রুম না পাই তাহলে সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজারে ঘুরে বেড়াব, তারপর নারায়ণগঞ্জ ফিরে যাব।’
শীতের আমেজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে বেড়েছে ঢেউয়ের তীব্রতা। তাই পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে বাড়তি নজরদারি বাড়িয়েছে লাইফ গার্ড সংস্থা।
সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার সিনিয়র লাইফ গার্ড কর্মী জয়নাল আবেদিন ভূট্টো বলেন, ‘শীতের মৌসুম শেষ। এখন যেমন তাপমাত্রা বেড়েছে, ঠিক তেমনি সাগরের ঢেউয়ের উত্তাপও বেড়েছে। একই সঙ্গে সমুদ্রস্নানে পর্যটকদের নামার সংখ্যাও বেড়েছে। তবে পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তায় ৩ স্তরের কার্যক্রম চলছে।’
সৈকতপাড়ে তারকামানের সব হোটেল পর্যটকে ভরপুর। তাই সৈকত, হোটেল-মোটেল জোন ও পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।