প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ২২:৫৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
দুর্ঘটনার দুই দিন পরও বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল (বিএসসি) কর্তৃপক্ষ বলতে পারেনি কবে নাগাদ মেরামত শুরু হবে। ফলে দেশে ইন্টারনেট সেবায় ধীরগতি কত দিন থাকবে তা জানা যাচ্ছে না। গ্রাহকদের অভিযোগ, ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি। তার ওপর তীব্র গরমের কারণে ঘরে বসে কাজ করতে গিয়ে বাড়ছে অস্বস্তি।
বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা কামাল আহমেদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে রবিবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বলেন, সাবমেরিন কেবল সিমিউই-৫ কনসোর্টিয়াম থেকে ঘটনাস্থলে জাহাজ আসার পর বিচ্ছিন্ন কেবল মেরামতের প্রোগ্রাম শিডিউল প্রস্তুত করার কথা। এখন পর্যন্ত প্রোগ্রাম শিডিউল পাইনি। এজন্য বলা যাচ্ছে না কবে নাগাদ কেবলটির মেরামত শুরু হবে। তিনি বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে আমাদের প্রথম সাবমেরিন কেবল সিমিউই-৪-এর ব্যান্ডউইথের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে এবং সিমিউই-৫-এর কিছু ট্রাফিক সিংগাপুরের সিংটেলের সঙ্গে শিফট করে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল (সিমিউই-৫) ইন্দোনেশিয়ার কাছে গভীর সমুদ্রে বিচ্ছন্ন হওয়ায় এই সংকট সৃষ্টি হয়। বিএসসি থেকে বলা হয়, এটি একটি দুর্ঘটনা। সমুদ্রের নিচ দিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে ইন্দোনেশিয়ার দিকে যে সংযোগ, ইন্দোনেশিয়ার কাছে তা কাটা পড়েছে। তাৎক্ষণিকভাবেই বিষয়টি আমরা টের পেয়েছি। সিমিউই-৫ থেকে কোনো ব্যান্ডউইথ আমরা পাচ্ছি না। শুধু আমরাই না, এর ফলে শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়াসহ এই কেবলের সঙ্গে যেসব দেশ যুক্ত আছে তাদেরও একই অবস্থা।
বিএসসির তথ্য অনুসারে, বর্তমানে দেশের চাহিদা সাড়ে পাঁচ হাজার ব্যান্ডউইথ। চাহিদার বিপরীতে বিএসসির দুটি সাবমিরেন কেবল থেকে আসে দুই হাজার ৬০০ ব্যান্ডউইথ। এর মধ্যে এক হাজার ৬০০ ব্যান্ডউইথ আসত দুর্ঘটনাকবলিত সিমিউই-৫ থেকে। বাকি ব্যান্ডউইথের জন্য নির্ভর করতে হয় আইটিসির (ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল) মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানির ওপর।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক এ সমস্যা সম্পর্কে বলেন, শুক্রবার রাতে ইন্টারনেটের ধীরগতি শুরু হয়েছে। আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) অপারেটররা চাহিদার ৩০ শতাংশ ব্যান্ডউইথ দিতে পারছে না। বিএসসি এখনও আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে পারেনি কবে নাগাদ সমস্যার সমাধান হবে।
তীব্র গরমের সঙ্গে ইন্টারনেট সমস্যা অস্বস্তি বাড়িয়েছে
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেই বললেই চলে। রেশনিং করে ব্যান্ডউইথ সরবরাহের কারণে প্রান্তিক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে না বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে অভিযোগ আসছে।
দেশের ইন্টারনেট সেবা এখন চলছে সিমিউই-৪ এবং আইটিসির সংযোগ দিয়ে। মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দ্রুত ইন্টারনেট সমস্যা সমাধান না করা গেলে এই গরমে ঘরে বসে কাজ করার যে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস করার জন্য যে নির্দেশনা তা বাস্তবায়ন করা মোটেও সম্ভব নয়। অনেক শিল্প কলকারখানা, ব্যাংক, বীমা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং চিকিৎসাকেন্দ্র ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। তাই দ্রুত এর সমাধান অগ্রাধিকার এবং জরুরি ভিত্তিতে করা আবশ্যক।