এক দিনের মধ্যেই বাইন্যান্স থেকে বিনিয়োগকারীরা ৩০০ কোটি ডলার তুলে ফেলেছেন বলে জানিয়েছে ব্লকচেন অ্যানালিটিক্স ফার্ম নানসেন।
নানসেনের কন্টেন্ট লিড অ্যান্ড্রু থারম্যান এমনটাই জানিয়েছেন
সিএনএনকে।
সম্প্রতি এফটিএক্সের দেউলিয়া ও এর প্রতিষ্ঠাতার গ্রেপ্তার, ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগে অভিযোগের মতো ঘটনা ক্রিপ্টো বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩০০ কোটি ডলার উত্তোলন, বাইন্যান্সে জুন থেকে এক দিনে সর্বোচ্চ উত্তোলনের ঘটনা।
এর পরও চিন্তার মোটেও কিছু নেই বলে দাবি করেছে বাইন্যান্স। ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জটি সিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের ব্যবহারকারীর সম্পদ ১ঃ১ সমর্থিত এবং বাইন্যান্সের মূলধন কাঠামো সম্পূর্ণ ঋণমুক্ত। তাই প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হওয়ার কিংবা গ্রাহকের টাকা আটকে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।
বাইন্যান্সের এমন দাবির পরও বসে নেই যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের প্রসিকিউটররা। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী চ্যাংপেং ঝাওসহ বাকি নির্বাহীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করে বাইন্যান্সে অর্থ পাচারের তদন্ত শেষ করতে চাইছেন তারা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের অ্যাটর্নি অফিসের মুখপাত্র মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) নিশ্চিত করেছেন, বাহামাসে এফটিএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী স্যাম ব্যাংকম্যান-ফ্রাইডকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে স্যামের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে তিনি অস্বীকার করেছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা বলছেন, স্যামের বিরুদ্ধে সিল করা অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার তা প্রকাশ করা হবে। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
ইউএস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পৃথকভাবে ব্যাংকম্যান-ফ্রাইডের সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন সম্পর্কিত অভিযোগ অনুমোদন করেছে।
৩০ বছর বয়সি স্যাম একসময় ক্রিপ্টোজগতের ওয়ারেন বাফেট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠিত এফটিএক্স ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয় ক্রিপ্টো কেনাবেচা ও বিনিময় প্ল্যাটফরম।
২০১৯ সালে চালু হওয়া বাহামাসভিত্তিক এক্সচেঞ্জটি ১১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়া হওয়ার আবেদন করে। অনেক গ্রাহকের টাকা এখন আটকে আছে এফটিএক্সে।
এক মাস আগেও কেউ কল্পনা করতে পারেনি, এফটিএক্স সাম্রাজ্য ভেঙে পড়তে পারে। এরই মধ্যে অস্থির ক্রিপ্টোকারেন্সির দরদামে এর প্রভাব পড়েছে।
স্যাম এক টুইটবার্তায় বলেছিলেন, ‘আমি সত্যিই দুঃখিত। আমরা এখানে শেষ করছি। আশা করি এটি পুনরুদ্ধারের উপায় খুঁজে পাওয়া যাবে।’
এফটিএক্সের এমন পরিণতিকে ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতের জন্য শঙ্কার বলে মনে করেন এফটিএক্সের একসময়ের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বাইন্যান্সের প্রধান নির্বাহী চ্যাংপেং ঝাও, যিনি ক্রিপ্টোজগতে সিজে নামে পরিচিত।
সিজে বলেন, ‘এফটিএক্সের নিচে নেমে যাওয়া এ শিল্পের (ক্রিপ্টোজগতের) কারও জন্য ভালো নয়। এটিকে আমাদের জন্য একটি জয় হিসেবে দেখবেন না। এতে ব্যবহারকারীর আস্থা মারাত্মকভাবে নড়বড়ে হয়েছে।’