প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১১:০০ এএম
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৪৫ এএম
নতুন আইন তৈরি এবং পুরোনো আইন পর্যালোচনা ও সংশোধনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। বিশ্বে এ প্রথম কোনো দেশ সরাসরি আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় এআইকে সম্পৃক্ত করছে। এ উদ্যোগকে আমিরাতের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও প্রগতিশীল পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইউএই সরকার ইতোমধ্যে এ খাতে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো এ প্রকল্পকে ‘এআইচালিত আইন প্রণয়ন’ নাম দিয়েছে। যেখানে অন্য দেশগুলো সরকার পরিচালনায় এআইকে সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করছে, সেখানে আমিরাত আইন প্রণয়নের মতো স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ কাজে এআইকে অংশীদার করার পরিকল্পনা করছে।
দুবাইয়ের শাসক, দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত এ নতুন আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া আমাদের আরও দ্রুত, সুনির্দিষ্ট ও কার্যকরভাবে আইন তৈরি করতে সহায়তা করবে।’
এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে মন্ত্রিসভা সম্প্রতি ‘রেগুলেটরি ইন্টেলিজেন্স অফিস’ নামে একটি বিশেষ সংস্থা গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। সংস্থাটি এআইভিত্তিক আইন প্রণয়নের বিষয়টি তদারকি করবে।
আইন প্রণয়নব্যবস্থায় এআইকে কার্যকরভাবে যুক্ত করতে দেশটি একটি বিশাল তথ্যভান্ডার গড়ে তুলছে। এতে থাকবে ফেডারেল ও স্থানীয় আইন, আদালতের রায় এবং সরকারি সেবার বিস্তারিত তথ্য। এর মাধ্যমে এআই বিশ্লেষণ করে নিয়মিত আইন সংস্কারের পরামর্শ দিতে পারবে।
শেখ মুহাম্মদ আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এআই ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া ৭০ শতাংশ পর্যন্ত দ্রুততর হবে।’ তবে বিশেষজ্ঞরা এ উদ্যোগকে যেমন যুগান্তকারী হিসেবে দেখছেন, তেমন সতর্কতাও জানিয়েছেন। কোপেনহেগেন বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক রনি মেডাগলিয়া একে ‘সাহসী পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার মতে, এ উদ্যোগে এআইকে সহ-আইনপ্রণেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে।
অন্যদিকে গবেষকরা বলেন, প্রশিক্ষণ ডেটায় পক্ষপাত থাকতে পারে, ব্যাখ্যাগত দুর্বলতা দেখা দিতে পারে এবং ভুল তথ্য দেওয়ার ঝুঁকিও থেকে যায়। এজন্য এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও মানবিক তদারকির ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।