লোডশেডিং কমাবে হালিমার এআই মডেল

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী হালিমা হক, ঢাকা শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা আরও উন্নত করার জন্য একটি উদ্ভাবনী এআইভিত্তিক পূর্বাভাস মডেল তৈরি করেছেন, যা লোডশেডিং কমাতে সহায়ক হবে।  

এ মডেলটি আবাসিক, বাণিজ্যিক এবং শিল্প খাতগুলোর মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা পূর্বাভাস দিতে সক্ষম, যা গ্রীষ্মকালের উচ্চ চাহিদা সময়ে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা আরও কার্যকরভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করবে। এ প্রযুক্তি বিদ্যুৎ সঞ্চালনে আরও দক্ষতা আনার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য শক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারেরও সুযোগ সৃষ্টি করবে।

ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রাজ্জাকের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (DESCO) থেকে ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সংগৃহীত প্রায় ৬.৫ মিলিয়ন ডেটা পয়েন্ট বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে। এ গবেষণায় আবহাওয়া প্যাটার্ন, ব্যবহারকারীর আচরণ এবং মূল্য নির্ধারণ কাঠামোর মতো বিভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে একটি অত্যন্ত সঠিক পূর্বাভাস মডেল তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।

হালিমা বলেন, ‘শহরের দ্রুতবর্ধনশীল জনসংখ্যা এবং শিল্পায়নের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই সঠিক পূর্বাভাস জরুরি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এ এআই প্রযুক্তি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর এবং নীতিনির্ধারকদের সাহায্য করবে যাতে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ আরও স্থিতিশীল এবং টেকসই হয়।’

গবেষণায় মোট পাঁচটি মেশিন লার্নিং মডেল কে-নিয়ারেস্ট নেবার (KNN), র‍্যানডম ফরেস্ট, লাইট গ্র্যাডিয়েন্ট বুস্টিং মডেল, এক্সট্রিম গ্র্যাডিয়েন্ট বুস্টিং এবং মাল্টিপল লিনিয়ার রিগ্রেশন পরীক্ষা করা হয়েছে। এ গবেষণার ফলাফল মালদ্বীপ এবং থাইল্যান্ডে IEEE সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয় এবং IEEE ট্রান্সঅ্যাকশন্স অন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাপ্লিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত হয়।

ড. রাজ্জাক বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ অবকাঠামো আধুনিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ তিনি আরও বলেন, ‘মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে আমরা বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্যাটার্ন আরও ভালোভাবে বুঝতে পারব, আরও কার্যকর নীতি তৈরি করতে সক্ষম হব এবং টেকসই শহরের উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।’

এ এআই মডেলের সফলতা বাস্তব বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধান, প্রযুক্তির ব্যবহারকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করছে, যা বাংলাদেশের স্মার্ট গ্রিড উদ্ভাবনে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করছে।