প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:২২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
আমেরিকান সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ (এএসএল) বা ইশারা ভাষা শেখার জন্য গত বৃহস্পতিবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া। প্ল্যাটফর্মটি তৈরিতে ‘আমেরিকান সোসাইটি ফর ডিফ চিলড্রেন’ এবং ‘ক্রিয়েটিভ এজেন্সি হ্যালো মান্ডে’-এর সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছে এই কোম্পানি। বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই প্ল্যাটফর্মটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এনভিডিয়ার নতুন এআই প্ল্যাটফর্মটির নাম 'সাইনস', যা ৩-ডি অ্যাভাটার বা অবতার ব্যবহার করে ইশারা ভাষা শেখাবে। ব্যবহারকারীরা ভিডিও ক্যামেরা চালু রেখে প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং এআই তাদের ইশারার ওপর রিয়েল-টাইম প্রতিক্রিয়া দেবে। প্রাথমিকভাবে, ১০০টি আলাদা ইশারা শেখানো হচ্ছে, তবে ভবিষ্যতে এক হাজার ইশারা শেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ শেখার প্ল্যাটফর্ম নয়। বরং এটি একটি উদাহরণ যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সহায়ক প্রযুক্তি উন্নত করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, যা প্রতিবন্ধী, বয়স্ক মানুষ, বা তাদের বিভিন্ন সেবাদাতাদের জন্য সহায়ক হতে পারে।
মেটা, গুগল এবং ওপেনএআইসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই তাদের এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্ধ বা কম দৃষ্টি ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা উন্নত করেছে।
অ্যাপল সম্প্রতি একটি নতুন প্রযুক্তি চালু করেছে, যা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যবহারকারীদের জন্য তাদের আইফোনে সহজে চালাতে সাহায্য করবে। এ প্রযুক্তি হলো—এআই ভিত্তিক চোখের ট্র্যাকিং, যা ব্যবহারকারীর চোখের মণির গতি ও অবস্থান শনাক্ত করে তাদের ডিভাইস পরিচালনা করতে সাহায্য করে।
সাইনস প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো জানায়, ইংরেজি এবং স্প্যানিশের পর যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা হলো—আমেরিকান সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ (এএসএল)।
সাইনস প্ল্যাটফর্মটি সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যাবে। এটি ব্যবহারকারীদের সাইন ভিডিও আপলোড করার সুযোগ দেবে, যা ভবিষ্যতে প্ল্যাটফর্মের শব্দভান্ডার বাড়াতে সাহায্য করবে। এই ডেটা এনভিডিয়াকে নতুন নতুন পণ্য তৈরি করতে সহায়তা করবে, যেমন—ভিডিও কনফারেন্সিং সফটওয়্যার বা গাড়ির গতিশীলতা নিয়ন্ত্রণে ইশারা ভাষার ব্যবহার বাড়ানো।
ভবিষ্যতে সাইনস প্ল্যাটফর্মে মুখাবয়ব এবং মাথার নড়াচড়ার গতিসহ বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি সম্পর্কিত সিগন্যালসহ আরও উন্নত ফিচার যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে এনভিডিয়া। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে আমেরিকান সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের সঠিকভাবে বিকাশ করা যাবে। যেমন—আঞ্চলিক বৈচিত্র্য ও স্ল্যাং।
আমেরিকান সোসাইটি ফর ডিফ চিলড্রেনের কার্যনির্বাহী পরিচালক চেরি ডাউনলিং বলেন, ‘বেশির ভাগ শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম হয় শ্রবণশক্তিসম্পন্ন বাবা-মায়ের কাছে। সাইনসের মতো সহজলভ্য টুলস পরিবারের সদস্যদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি তাদের শিশুদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সাহায্য করবে।’