বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক ৯৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। এই প্রস্তাবকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে অর্থ কামানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের বিরুদ্ধে মাস্কের চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
মাস্কের এই প্রস্তাব ওপেনএআই-এর সিইও এবং চ্যাটজিপিটির নির্মাতা স্যাম অল্টম্যানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। মাস্কের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় অল্টম্যান সোমবার এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন- ‘না, ধন্যবাদ; তবে আপনি চাইলে আমরা ৯ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কিনতে পারি।’
মাস্ক এবং অল্টম্যান ২০১৫ সালে যৌথভাবে ওপেনএআই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি অলাভজনক সংস্থা হিসেবে। তবে মাস্ক প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে যাওয়ার পর এটি ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়। ২০২৩ সালে তিনি নিজেই প্রতিদ্বন্দ্বী এআই স্টার্টআপ এক্সএআই প্রতিষ্ঠা করেন।
টেসলার সিইও এবং প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রতিষ্ঠান এক্স-এর মালিক মাস্ক চান ওপেনএআই তার অলাভজনক কাঠামোতে ফিরে আসুক। তবে ওপেনএআই বর্তমানে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের চেষ্টা করছে। এর সপক্ষে প্রতিষ্ঠানটির যুক্তি, উন্নত এআই মডেল তৈরি করতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ আকর্ষণ করাটা জরুরি।
ইলন মাস্ক গত বছরের আগস্টে অল্টম্যান এবং ওপেনএআই’র আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন। তার অভিযোগ, অভিযুক্তরা মুনাফার জন্য ওপেনএআই-এর মূল উদ্দেশ্য উপেক্ষা করেছেন। তিনি ওই বছরের নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের একটি জেলা আদালতে আবেদন করে এমন আদেশ চেয়েছিলেন যাতে ওপেনএআই লাভজনক সংস্থায় রূপান্তরিত হতে না পারে।
মাস্ক বলেন, ‘সময় এসেছে ওপেনএআইকে একটি উন্মুক্ত-সোর্স, নিরাপত্তামুখী ও জনহিতকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফিরিয়ে আনার। আমরা নিশ্চিত করব যে এটি ঘটবে।’
মাস্কের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়ামের মধ্যে তার এআই স্টার্টআপ এক্সএআই, ব্যারন ক্যাপিটাল গ্রুপ, ইমানুয়েল ক্যাপিটাল এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারী রয়েছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ বিষয়ে জানিয়েছে, ওপেনএআই কিনে নেওয়া সংক্রান্ত মাস্কের প্রস্তাব বাস্তবে রূপ নিলে প্রতিষ্ঠানটি এক্সএআই-এর সঙ্গে একীভূত হতে পারে। সম্প্রতি এক্সএআই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে এবং এর মূল্যমান পৌঁছেছে ৪০ বিলিয়ন ডলারে।
মাস্কের এই প্রস্তাবের পর এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি ওপেনএআই-এর হাতে। মাস্ক শেষ পর্যন্ত কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবেন, না-কি এই ক্রয় প্রস্তাব নতুন আরেক ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জন্ম দেবে- তা দেখার বিষয়।