প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫৩ পিএম
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩০ পিএম
নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ ও প্রোডাক্টিভিটির লক্ষ্যে ওয়ানপ্লাস সম্প্রতি বাংলাদেশে একটি আইওটি ইকোসিস্টেম লঞ্চ করেছে। এই ইকোসিস্টেমের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ওয়ানপ্লাস প্যাড ২, যেটি বাংলাদেশের ট্যাবলেট কম্পিউটারের বাজারে অনন্য সংযোজন। ডিভাইসটি আধুনিক মাল্টিটাস্কারদের চাহিদা পূরণে নিপুণভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।
ডিজাইন ও সংযোগ
ওয়ানপ্লাস প্যাড ২ হালকা-পাতলা ট্যাবটি মাত্র ৬.৪৯ মিলিমিটার পুরু ও ওজনে ৫৮৪ গ্রাম হওয়ায় ভ্রমণপিপাসুদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এমন ট্যাবলেট ব্যাগে থাকলে যে কোন জায়গাতেই নিশ্চিন্তে কাজে বসে যাওয়া যাবে। ওয়াইফাই ৭ ও ব্লুটুথ ৫.৪-এর মত শক্তিশালী সংযোগের অপশন দ্রুত ডেটা স্থানান্তর ও আশেপাশের ডিভাইসের সাথে স্থিতিশীল সংযোগ নিশ্চিত করে। পেশাগত কাজের জন্য যাদের মাল্টিটাস্কিং ও বিভিন্ন ওয়্যারলেস ডিভাইসের উপর নির্ভর করতে হয়, ট্যাবটি তাদের জন্য দারুণ একটি সঙ্গী হতে পারে।
প্রসেসর
ওয়ানপ্লাস প্যাড ২-এর কর্মক্ষমতার পেছনে রয়েছে একটি শক্তিশালী হার্ডওয়্যার: স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ৩ চিপসেট, ৯০৩ মেগাহার্জ জিপিইউ ও অক্টা কোর সিপিইউ। এই উন্নত চিপসেটটি ব্যবহারকারীরা ল্যাগ বা ধীরগতির সম্মুখীন না হয়ে সহজেই এক উইন্ডো থেকে আরেক উইন্ডোতে সার্ফিং করতে পারেন, ফলে মাল্টিটাস্কিং করা খুব সহজ। ডিভাইসটি ব্যবহার করে একই সাথে স্প্রেডশিট থেকে গ্রাফিক ডিজাইনের মত কাজ বা উচ্চ-রেজোলিউশনের কন্টেন্ট খুব সহজেই স্ট্রিম করা যায়। এভাবে প্রতিটি পরিস্থিতিতে ওয়ানপ্লাস প্যাড ২ ধারাবাহিকভাবে মসৃণ ও রেস্পনসিভ এক্সপেরিয়েন্স নিশ্চিত করে।
স্ক্রিন
ট্যাবটিতে শক্তিশালী প্রসেসরের পাশাপাশি একটি ৩০০০ x ২১০০ পিক্সেল রেজোল্যুশনের ১২.১ ইঞ্চি থ্রিকে ডিসপ্লে রয়েছে। এই হাই রেজোল্যুশনের স্ক্রিনটি ভিজ্যুয়াল তীক্ষ্ণ ও দারুণ কালার অ্যাকুরেট যা প্রোডাক্টিভিটি ও মাল্টিটাস্কিং-এর জন্য খুবই দরকারি। ডকুমেন্ট স্ক্রলিং ও জটিল ডিজাইন করার সময় এর অ্যাডাপ্টিভ ১৪৪ হার্জ রিফ্রেশ রেট মসৃণ ইন্টারঅ্যাকশন নিশ্চিত করে ব্যবহারকারীকে উন্নত অভিজ্ঞতা দেয়।
ক্যামেরা ও চার্জিং
ওয়ানপ্লাস প্যাড ২-এর ১৩ মেগাপিক্সেলের পেছনের ক্যামেরা ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ডে ফোর-কে ভিডিও রেকর্ড করতে পারে। সামনের ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরাটি ১০৮০ পিক্সেল রেজোল্যুশনে ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ডে ভিডিও রেকর্ডিং করে। যদিও এই স্পেসিফিকেশন প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট, তবে ট্যাবলেট কম্পিউটার সাধারণত সিরিয়াস ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত হয় না।
ওয়ানপ্লাস প্যাড ২ -এ ফাস্ট চার্জিংয়ের জন্য সুপারভুক প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে। ৬৭ ওয়াট চার্জারের ডিভাইসটির ৯৫১০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি ০ থেকে ১০০% চার্জ হতে মাত্র ৫৪ মিনিট সময় নেয়। এই দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারিটি লাইফ হালকা ব্যবহারে কয়েক দিন ও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় চলতে পারে। ওয়ানপ্লাস-এর দাবি অনুযায়ী, এটি টানা ১২ ঘণ্টা ইউটিউব ভিডিও প্লেব্যাক, স্পটিফাইতে ৩৫ ঘণ্টা মিউজিক ও ট্রিপল এ গেমিংয়ে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফ দিতে সক্ষম।
স্টাইলাস ও এনএফসি কিবোর্ড
ওয়ানপ্লাস প্যাড ২ ওয়ানপ্লাস-এর স্টাইলাস, স্টাইলো ২ সাপোর্ট করে। এই ফিচারটি সৃজনশীল পেশাজীবীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী যা দিয়ে স্কেচিং, নোট নেওয়া ও এডিটিং-এর কাজ করা যায়। স্টাইলাসটির ন্যাচারাল ইনপুট প্রোডাক্টিভিটি ও সৃজনশীলতাকে বহু গুণে বাড়িয়ে তোলে যা ট্যাবলেটটিকে পেশাদার কাজের জন্য একটি বহুমুখী টুলে পরিণত করে।
এই ট্যাবলেটটির একটি বিশেষ ফিচার হলো এর স্মার্ট কিবোর্ড, যা আরামদায়ক টাইপিংয়ের পাশাপাশি এনএফসি (নেয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন) সাপোর্ট করে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা ওয়ান টাচ ট্রান্সমিশন-এর সাহায্যে ইকোসিস্টেমের বাকি ডিভাইসগুলোর সাথে সহজে স্ক্রিন-শেয়ারিং করতে করতে পারেন। ব্যবহারকারীরা এনএফসি পয়েন্টে ট্যাপ করে ট্যাবলেটে তাদের ফোনের ডিসপ্লে মিরর করতে, ফোন অ্যাপ্লিকেশন নিয়ন্ত্রণ করতে, কল করতে ও ডেটা কানেকশন শেয়ার করতে পারেন। সব ডিভাইসের এই সংযোগ ওয়ার্কফ্লোকে সহজ করে একটি একক ইন্টারফেসের মধ্যে কাজগুলোকে একসাথে করতে সাহায্য করে। এর ফলে সময় বাচার পাশাপাশি যে কোন কাজ খুব দ্রুততার সাথে করা যায়। স্টাইলাস ২ ও স্মার্ট কিবোর্ড আলাদাভাবে কিনতে পাওয়া যায়।
সবমিলিয়ে ওয়ানপ্লাস প্যাড ২ আধুনিক সময়ের চাহিদা মেটাতে ডিজাইন করা একটি পরিপূর্ণ প্রোডাক্টিভিটি ডিভাইস। শক্তিশালী প্রসেসর, বড় হাই-ডেফিনেশন ডিসপ্লে, স্টাইলাস সাপোর্ট, এনএফসি ইন্টিগ্রেশন ও উদ্ভাবনী স্মার্ট কীবোর্ডের সাথে এটি একটি অলরাউন্ডার ডিভাইস। এটি ব্যবহার করে যে কোন পেশাদার কাজ দক্ষতার সাথে করা সম্ভব।