ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২২ ২০:৫১ পিএম
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২২ ১৯:১০ পিএম
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখতে মেলবোর্নকে এদিন একখণ্ড করাচি বানিয়ে ফেলেছিল পাকিস্তান সমর্থকরা। তবে শেষ পর্যন্ত পুনরাবৃত্তি দেখা হয়নি তাদের। ১৯৯২ সালে ইমরান খানের পাকিস্তান পারলেও ইংলিশদের বিপক্ষে এবার পারেনি বাবর আজমের দল। বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে পূর্বপুরুষদের হারের প্রতিশোধ নিয়েছে জস বাটলারের ইংল্যান্ড।
ভারতকে উড়িয়ে ফাইনালে আসা ইংলিশরা এদিন তেতে ছিল পাকিস্তানকে হারানোর জন্য। টসে জিতে তাই পাকিস্তানকে ব্যাটিং পাঠানো। সাফল্য এসেছে তাতে। ট্রফি জেতার অর্ধেক কাজটা করে গেছেন ইংলিশ বোলাররা। বড় সংগ্রহ করতে পারেনি পাকিস্তান। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৭ রানে আটকে যায় পাকিস্তানের ইনিংস।
আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তানও যে ছেড়ে কথা বলবে না, সেই জানান দিয়েছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। বোলিংয়ে এদিন শুরুতেই সেমিফাইনালের নায়ক অ্যালেক্স হেলসকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন শাহিন আফ্রিদি। সংগ্রহ বড় করতে পারেননি ফিল সল্টও। তবে অন্য প্রান্তে কিছুটা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে ইংল্যান্ডকে জয়ের পথে রেখেছিলেন অধিনায়ক জস বাটলার। তার বিদায়ে ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বড় সমস্যায় পরে ইংলিশরা। হারিস রউফের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। ১৭ বলে ২৬ রান করেন তিনি।
দায়িত্ব এসে পড়ে বেন স্টোকসের কাঁধে। ইংল্যান্ডের সংকট আরও বাড়ে ২৩ রান করে হ্যারি ব্রুকস আউট হলে। আশাবাদী হয় পাকিস্তান সমর্থকরা। এই সময় বেশ চেপে ধরেছিল ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের পাকিস্তানি বোলাররা। বোলিংয়ে এসে সেই চাপ আরও বাড়াতে পারতেন আফ্রিদি। তবে হয়নি সেটি। দ্বিতীয় স্পেলে ১ বল করেই চোটে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। তার বাকি ৫ বল করতে এসে ১৩ রান খরচ করেন ইফতেখার। ওখানেই পাল্টে যায় ম্যাচের চিত্র।
পাকিস্তান সমর্থকদের জয়ের স্বপ্নে পানি ঢেলে দেয় মঈন আলী ও স্টোকসের আগ্রাসী ব্যাটিং। মঈন আলীর ব্যাট থেকে এসেছে ১২ বলে ১৯ রান। বেন স্টোকস খেলেন ৪৯ বলে ৫২ রানের হার না মানা এক কাব্যিক ইনিংস।
এর আগে বৃষ্টির শঙ্কা দূরে ঠেলে মেলবোর্নে এদিন নির্ধারিত সময়ে মাঠে গড়িয়েছিল বল। পাকিস্তানকে বেশ সাবধানী শুরু এনে দেন বাবর-রিজওয়ান। তবে রান না আসায় ও উইকেট পড়ে যাওয়ায় চাপে পড়ে পাকিস্তান। চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বাবর। তবে পেরে ওঠেননি। আদিল রশিদের ঘূর্ণিতে বোকা বনে যান তিনি। ২৮ বল থেকে ৩২ রান করে সাজঘরে ফেরেন বাবর। এরপর শাদাব খানকে নিয়ে পাকিস্তানকে এগিয়ে নিয়ে যান মাসুদ। মাসুদের আগ্রাসী ব্যাট স্বপ্ন দেখাচ্ছিল পাকিস্তানকে। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে থামিয়েছেন স্যাম কুরান। ২৮ বল থেকে ১ ছয় ও ২ চারে ৩৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর তাকে অনুসরণ করেন শাদাব খান। আউট হওয়ার আগে ১৪ বল থেকে ২০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তার বিদায়ে বড় সংগ্রহ করার পথে পা হড়কায় পাকিস্তান। পরে শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছে টেলেন্ডারদেরও। তবে তাতে বেশিদূর এগোনো যায়নি। শেষ পর্যন্ত ইংলিশদের ১৩৮ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় পাকিস্তান। যে স্কোর বিশ্বকাপ জেতার মতো মোটেও যথেষ্ট ছিল না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান : ১৩৭/৮ (২০ ওভারে, রিজওয়ান ১৫, বাবর ৩২, শান মাসুদ ৩৮, শাদাব ২০, স্যাম কুরান ৩/১২, রশিদ আদিল ২/২২, জর্ডান ২/২৭)।
ইংল্যান্ড : ১৩৮/৫ (১৯ ওভারে, বাটলার ২৬, বেন স্টোকস ৫২*, মঈন আলী ১৯, হারিস রউফ ২/২৩)।
ফল : ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : স্যাম কুরান। ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট : স্যাম কুরান।