চ্যাম্পিয়নস লিগ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৪ ১৪:৩২ পিএম
আপডেট : ০৮ মে ২০২৪ ১৫:৩৫ পিএম
ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনে মগ্ন রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় এদুয়ার্দ কামাভিঙ্গা ও জুড বেলিংহাম। ছবি : এক্স
চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল রিয়াল মাদ্রিদ। সর্বোচ্চ সংখ্যক শিরোপা আছে এই দলটির শোকেসে। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাতটি ট্রফি বাগিয়ে নিয়েছে ইতালিয়ান জায়ান্ট এসি মিলান। ছয়টি করে ট্রফির মালিক লিভারপুল ও বায়ার্ন মিউনিখ। প্রতিযোগিতায় শিরোপা বিবেচনায় রিয়ালের ধারেকাছেও যে কেউ নেই সেটা জানা কথাই। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের চেয়ে বায়ার্নের উপস্থিতি কিন্তু কম নয়। দুই দলই রেকর্ড সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছে। সবচেয়ে বেশি ম্যাচে জয়ের রেকর্ডেও রিয়ালের পাশেই বাভারিয়ানরা। আজ দুই সেরার ফাইনালে ওঠার লড়াই।
চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে আজ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আতিথেয়তা নেবে বায়ার্ন মিউনিখ। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়। এর আগে প্রথম সেমিফাইনালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা থেকে ২-২ গোলের ড্র করে ফেরে রিয়াল। অর্থাৎ আজকের ম্যাচে স্রেফ জয়ই যেকোনো এক দলকে তুলে দেবে ফাইনালে। রেকর্ড সর্বোচ্চ ১৬টি ফাইনাল খেলা রিয়ালই কি যাবে আরেকটি ফাইনালে নাকি নিজেদের ইতিহাসে ১২তম ফাইনালে ওঠে বায়ার্ন ছাড়িয়ে যাবে এসি মিলানকে?
যদিও চ্যালেঞ্জটা কঠিন বায়ার্নের জন্যই। নিজেদের ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে তারা প্রথম লেগে এগিয়ে গিয়েও লিড ধরে রাখতে পারেনি তারা। ভিনিসিউস জুনিয়রের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে প্রথম লেগে ড্র করে রিয়াল। এবার রিয়াল খেলবে নিজেদের ঘরের মাঠের সমর্থকদের সামনে। যেটি মোকাবিলা করে ম্যাচ জিততে হবে হ্যারি কেন, লিরয় সানে, জামাল মুসিয়ালাদের। এ ছাড়া রিয়ালের শক্ত রক্ষণভাগের সামনে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে অতিথি দলের ফরোয়ার্ডদের। ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন সেশন শেষে কথা বলেছেন রিয়ালের রক্ষণভাগের অভিজ্ঞ সেনাপতি দানি কারবাহাল, ‘দলে বৈচিত্র্যময় দারুণ কিছু খেলোয়াড় আছে। আমরা সবাই মিলে দলে অবদান রাখতে চাই। আমাদের প্রতিপক্ষ কে সেটার ওপর নির্ভর করে আমাদের খেলার ধরন। আমরা দারুণ কিছু ম্যাচ খেলেছি।’
২০১৩ সালে জার্মান ক্লাব বায়ার লেভারকুসেন থেকে রিয়ালে নাম লেখান কারবাহাল। এরপর থেকে এখন অবধি আছেন লস ব্ল্যাঙ্কোসদের শিবিরে। রিয়ালের জার্সিতে খেলে ফেলেছেন ২৭৬টি ম্যাচ। তবে অভিজ্ঞদের সঙ্গে রিয়াল এখন একঝাঁক তরুণ খেলোয়াড় নিয়ে দল গড়েছে। বড় ম্যাচের তাদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন কারবাহাল, ‘কয়েক বছর আগে আমি এমন জায়গায় ছিলাম। আমাদের পঞ্চম ইন্দ্রিয়কে সজাগ রাখতে হতো। এখন দলে যারা তরুণ আছেন তারা অনেক প্রতিভাবান। যারা বড় ম্যাচের আগে নিজেদের প্রস্তুত রাখে, ম্যাচে চমৎকারভাবে মানিয়ে নেয়।’
বুধবারের মহারণের আগে মাদ্রিদ কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকছে। বায়ার্নের সঙ্গে শেষ আটটি চ্যাম্পিয়নস লিগে অপরাজিত রয়েছে লস ব্লাঙ্কোসরা। যেখানে ছয়টি জয় এবং দুটিতে ড্র করে রিয়াল। আর ম্যাচটি বার্নাব্যুতে হলে তো কথাই নেই। এখানে বায়ার্নের বিপক্ষে নিজেদের শেষ সাতটির মধ্যে ছয়টিতেই জিতেছে রিয়াল, অন্যটি হয়েছে ড্র। এদিকে বায়ার্ন তাদের আগের সাতটি ইউরোপিয়ান কাপ কিংবা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে রিয়ালের বিপক্ষে চারবারই জিতেছে। যদিও স্প্যানিশ জায়ান্টরা ২০১৩-১৪ এবং ২০১৭-১৮ সালে শেষ দুটি সেমিফাইনাল জিতেছে। আর দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে রিয়াল। স্প্যানিশ ক্লাবটি যদি আজ রাতেও বায়ার্নকে হারিয়ে ফাইানলে ওঠে তবে দারুণ একটা কীর্তিই গড়ে ফেলবে তারা। এর আগে কোনো দল একই দলের বিপক্ষে টানা তিনবার সেমিতে হারিয়ে ফাইনালে যেতে পারেনি।
এদিকে এই ম্যাচের আগে রিয়াল এগিয়ে থাকছে ভিন্ন একটি কারণে। আনচেলত্তি বায়ার্নের সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগের ৯টি দেখায় কখনও হারেননি। ছয়টি জয় এবং তিনটি ড্র করেছে তার দল। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বেশি কোনো কোচের প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয়ে অপরাজিত থাকার রেকর্ড। রেকর্ডটি যে তিনি আরও দীর্ঘায়িত করতে চাইবেন সেটা না বললেও চলে। এই ম্যাচের আগে সংবাদ মাধ্যমকে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘তীব্রতা, ছন্দসহ এটি এমন একটি ম্যাচ ছিল যা আমাদের দিক থেকে দারুণ। তারপরও প্রথম লেগের মূল্যায়ন করতে বললে আমি বলব রক্ষণে আমরা আরও অনেক কিছু করতে পারতাম।’ উভয় দলই প্রথম লেগে পাল্টা আক্রমণে গোল করেছে। এ নিয়ে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘ট্রানজিশনে থাকা এই দুটি দল খুব ভালো করে। এদিক থেকে তারা ইউরোপের সবচেয়ে বিপজ্জনক দুটি দল। খেলায় ভারসাম্য রাখতে পারলে এই ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।’