প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪ ২২:১৭ পিএম
লিওনেল মেসি
তার অর্জনের ঝুলি পরিপূর্ণ। ঘাটতি নেই কোনো কিছুরই। লা লিগা, চ্যাম্পিয়নস লিগ, ক্লাব বিশ্বকাপ, ফরাসি লিগ ওয়ান, অলিম্পিক স্বর্ণ, কোপা আমেরিকা থেকে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি। কোনো অপূর্ণতা নেই এ আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকরের। এ তো গেল দলীয় কৃতিত্বের গল্প। ব্যক্তিগত মুকুটও বেশ সমৃদ্ধ। ফিফা বর্ষসেরা, ব্যালন ডি’অর কী জেতেননি! তারপরও থামছে না লিওনেল মেসির সাফল্যের অভিযাত্রা। এখনও গোল, ইতিহাস আর রেকর্ড লুটোপুটি খায় এ মেগাস্টারের পায়ে।
মাঠের পারফরম্যান্সে যেমনটা সফল, সমান বিজয়ী মাঠের বাইরেও। তার পায়ের জাদু, কারিকুরি আর ড্রিবলিংয়ে ফুটবল ময়দানের ঘাসে ফোটে যেন নান্দনিক আর ছন্দময় ফুটবলের ফুল। মায়াজালে ভরা মেসির সেই পারফরম্যান্স বিমুগ্ধচিত্তে হৃদয়ের খোরাক জোগান ফুটবলপ্রেমীরা। উপভোগের মন্ত্র নিয়ে অনেক সময় মাঠে নামেন তার প্রতিপক্ষ ফুটবলাররাও।
ইন্টার মিয়ামির এমএলএস প্রতিপক্ষ নিউ ইংল্যান্ডের কোচ কালেব পর্টার তাই তো হুমকি দিয়েছিলেন, মেসি ভক্ত ফুটবলারদের একাদশেই রাখবেন না। শত্রুপক্ষের তিন-চার ডিফেন্ডারের মিলে গড়া দুর্ভেদ্য দেয়াল ভেদ করে জালে বল জড়িয়ে দেন গোল রেকর্ড অষ্টমবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী। গোল স্কোরিংয়ে এটা মেসির স্বজাত ফুটবল প্রতিভা।
মাঠের বাইরে মেসির পৃথিবীটাও বেশ বড়। নিজের চিরশত্রু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো এ সুপারস্টারও গুটি গুটি পায়ে হেঁটে চলেছেন ব্যবসা বাণিজ্যের জগতে। যদিও সেসব খবর খুব কমই চর্চিত হয় গণমাধ্যমের ক্যানভাসে।
একটা সময় হয়তো সিআর সেভেনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারবেন মেসি। পর্তুগিজ মহাতারকার সঙ্গে তার যেমনটা লড়াই চলছে এখনও মাঠের পারফরম্যান্সে। তেমন এক খবরই দিয়েছেন বিশ্বজয়ী এ ফরোয়ার্ড। নিজস্ব ব্র্যান্ডের হাইড্রেশন ড্রিংক বাজারে নিয়ে আসছেন মেসি।
এ জন্য বেভারেজ প্রস্তুতকারক কোম্পানি মার্ক অ্যান্থনি ব্র্যান্ডের সঙ্গে মেসির চুক্তি হয়েছে গত মার্চেই। যুগান্তকারী এই জলযোজন পানীয়টি বাজারে আসছে আগামী ২৪ জুন। যা অন্য নন-অ্যালকোহলিক ব্র্যান্ডের পানীয় থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হবে। শুরুতে জলশোষণকারী পানীয়টি মিলবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বাজারে। তবে নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
গত বুধবার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে ভক্ত-সমর্থকদের পানীয়টি বাজারে আনার খবর দিয়েছেন ইন্টার মিয়ামির এ প্রাণভোমরা নিজেই। শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায় মেসি ও তার স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জো একটি পানীয় প্রস্তুতকারী কারখানা পরিদর্শন করছেন।
ভিডিওতে মেসি বলেন, ‘আমরা নিজেদের হাইড্রেশন ড্রিংকটি বাজারে আনার জন্য হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছি। নিচ্ছি প্রস্তুতি। কারণ হাইড্রেশন (জলযোজন) সবার জন্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না, সেটি আমরা নিশ্চিত হতে চাই সবার আগে। যেখানে আমাদের কাজটি এগিয়ে যাচ্ছে, সেখান থেকেই ফিরলাম। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য জলযোজন পানীয়টি কীভাবে তৈরি হচ্ছে, সেটি সম্পর্কে জানলাম।’
শুধু পানীয় ব্যবসাতে সীমাবদ্ধ নেই মেসি। তার ব্যবসায়িক পরিচয়টা আরও একটু মুখর। নিজস্ব কাপড়ের ব্র্যান্ড অনেক আগেই বাজারে নিয়ে এসেছেন। একটু একটু করে মহিরুহে রূপ নিচ্ছে সেই মেসি স্টোর। খেলাধুলার নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে নতুন এক কোম্পানিও খুলেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এ ফুটবলার। সানফ্রান্সিসকোতে ২০২২ সাল থেকেই কাজ করে যাচ্ছে তার প্লে টাইম স্পোর্ট-টেক নামের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটি। রোনালদোর মতো হোটেলসহ আরও কিছু ব্যবসা থেকে অঢেল অর্থ আয় করছেন সর্বকালের অন্য সেরা এ প্লেমেকার। অ্যাডিডাস ও পেপসিকোর মতো বিশ্বের বিখ্যাত সব ব্র্যান্ড ও প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত হয়েও দেদার কামাচ্ছেন দুহাতে।