বাংলাদেশের বোলাররা নিজেদের কাজটা আগেই সেরে রেখেছিলেন। তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও শেখ মাহেদী হাসানের বোলিং কারিশমায় সংগ্রহটা বড় হয়নি জিম্বাবুয়ের। এরপর রান তাড়ায় ব্যাট হাতে ফুলঝুরি ফোটালেন অভিষিক্ত তরুণ তানজিদ হাসান তামিম। বাঁহাতি এই ওপেনারের অপরাজিত ফিফটিতে বৃষ্টি কবলে পড়া ম্যাচ হেসেখেলে জিতল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
শুক্রবার (৩ মে) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে স্কোরবোর্ডে ১২৪ রান জমা করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে বাংলাদেশের ইনিংসে বেশ কয়েকবার হানা দেয় বৃষ্টি। তবুও শেষ পর্যন্ত ১৫.২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় স্বাগতিকরা। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল নাজমুল হোসেন শান্ত দল।
সহজ টার্গেটের সামনে শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি বাংলাদেশের। দ্রুতই ফিরে যান ওপেনার লিটন দাস। ৩ বলের ইনিংসে ১ রান করে বিদায় নেন লিটন। তবে দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এই ফরম্যাটে অভিষিক্ত তানজিদ হাসান তামিম ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৪৮ বলের জুটিতে ৫২ রান যোগ করেন এই দুজনে। এই জুটির সময়ই বৃস্টি হানা দেয় দু দুবার। পরে বৃস্টি থামলেও থামেননি তানজিদ।
শান্ত ২৪ বলে ২১ রান করে লুক জঙ্গইয়ুর বলে আউট হয়ে গেলেও প্রয়োজনের সঙ্গে তাল রেখেই দলকে এগিয়ে নেন তিনি। বাঁহাতি এই ওপেনার হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাত্র ৩৬ বলে। শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন তামিম। তার ইনিংসে ছিল ৮ চার ও ২ ছক্কার মার। অপর অপরাজিত ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয় ১৮ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কার করেন ৩৩ রান।
এর আগে টস জিতে বোলারদের উপর আস্থা রাখলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এর প্রতিদানও দিলেন স্বাগতিক বোলাররা। দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও সাইফউদ্দিনের সঙ্গে শেখ মাহদী হাসানের ঘূর্ণিবিষে বেশিদুর এগোতে পারেনি সফরকারী জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের শেষ বলে অলআউটের আগে ১২৪ রানেই থামে তাদের ইনিংস।
একটা পর্যায়ে সফরকারীরা শতরানের নাগাল পাবে কিনা তা নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। তাদের স্কোরবোর্ডে ছিল ৪১/৭। এই ধ্বংসস্তুপ থেকে দলকে টেনে তোলেন ক্লাইব মাদান্দে ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। অস্টম উইকেটে ৬৫ বলের জুটিতে ৭৫ রান যোগ করেন এই দুজনে। মাদান্দাকে সরাসরি বোল্ড করে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। দলের হয়ে সর্ব্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন মাদান্দা।
এরপর অল্পতেই ভেঙে পড়ে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হয়ে যান মাসাকাদজা। তার ব্যাট থেকে আসে ক্যারিয়ারসেরা ৩৪ রান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তাসকিন ও সাইফউদ্দিন নেন তিনটি করে উইকেট। শেখ মাহেদীর শিকার ২ উইকেট। তিন জনই ছিলেন ভীষণ মিতব্যায়ী। ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দেন তাসকিন। সমান ওভারে সাইফউদ্দিনের খরচ ১৫ রান। আর ৪ ওভারে মাহেদী দেন ১৬ রান। এই ত্রয়ী ছাড়া অবম্য স্বাগতিক দলের বাকি দুই বোলারের উপর বেশ আধিপত্য দেখান সফরকারী ব্যাটাররা। ৪ ওভার বোলিং করে ৩৭ রান দিয়ে কোন উইকেট পাননি শরিফুল ইসলাম। আর ৪ ওভারে একই সমান রান দিয়ে উইকেটশুন্য থাকেন লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। তবে এই দুজনের ব্যর্থতা ঢেকে দেন স্বাগতিক দলের বাকি তিন বোলার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে : ২০ ওভারে ১২৪/১০ (ক্লাইব মাদান্দে ৪৩, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৩৪, জয়লর্ড গাম্বি ১৭; তাসকিন আজমেদ ৩/১৪, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৩/১৫, শেখ মাহেদী ২/১৬)।
বাংলাদেশ : ১৫.২ ওভারে ১২৬/২ (তানজিদ হাসান তামিম ৬৭*, তাওহিদ হৃদয় ৩৩*, নাজমুল হোসেন শান্ত ২১; লুক জঙ্গুই ১/১৪, ওয়ালিংটন মাসাকাদজা ১/৩১)।
ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: তাসকিন আহমেদ।