বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৪ ১৭:৩৪ পিএম
আপডেট : ০৩ মে ২০২৪ ২২:১৮ পিএম
— ছবি : আ. ই. আলীম
সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে মাত্র ১২৪ রানেই থামিয়েছে বাংলাদেশ। এরপর লক্ষ্য তাড়ায় ৩ ওভারে ১ উইকেটে ১০ রান তুলতেই চট্টগ্রামে হানা দিয়েছে বেরসিক বৃষ্টির!
এনগারাভার করা তৃতীয় ওভার শেষে বৃষ্টি হানা দিয়েছেন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। খেলা আপাতত বন্ধ। ৮ বলে ৩ রানে অপরাজিত তানজিদ। অন্য প্রান্তে ৭ বলে ৪ রানে অপরাজিত নাজমুল।
বোলারদের তাণ্ডবে জিম্বাবুয়ের অল্প পুঁজি
টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর ছিল ৮২। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কলম্বোয় ভানিদু হাসারাঙ্গার তোপে ১৪.১ ওভারে গুটিয়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। জিম্বাবুয়ের আগের সর্বনিম্ন ১০ বছর আগে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৪ রানে থেমেছিল তাদের ইনিংস। মাসপাঁচেক পর আজও তেমন কিছুর শঙ্কা দেখা দিয়েছিল, সিকেন্দার রাজার দলকে সর্বনিম্ন রানে গুঁটিয়ে যাওয়ার লজ্জা থেকে বাঁচান ক্লাইভ মান্দে ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। অষ্টম উইকেট জুটিতে দলকে শতরান পার করানোর পর আনেন ১২৪ রানের সংগ্রহ। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি জিততে নাজমুল হোসেন শান্তদের ওভারপ্রতি তুলতে হবে ছয়ের একটু বেশি রান।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে এদিন বল হাতে তাণ্ডব চালিয়েছেন টাইগার পেসাররা। পাশাপাশি ঘূর্ণি জাদু দেখিয়েছেন দলের দুই স্পিনার। টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম ছয় ওভারেই খেলার নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লেতে ৩৬ রান খরচায় ফেরায় ৪ ব্যাটারকে। পরের ওভারে তাসকিনের জোড়া আঘাতে আরও পথ হারায় জিম্বাবুয়ে। লুক জঙ্গিকে দ্রুত ফেরালেও ক্লাইভ মান্দে দলকে টানেন শেষদিকে।
খাদের কিনারা থেকে জিম্বাবুয়েকে শতরান পার করানোর পর ক্লাইভ থামেন ফিফটির আফসোস নিয়ে। তাসকিনের বলে ১৯তম ওভারে ফেরার আগে ৩৯ বলে করেন ৪৩ রান। মাসাকাদজাকে নিয়ে দলের সর্বোচ্চ ৭৫ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি। টেল এন্ডার মাসাকাদজার শেষ অবধি অপরাজিত থাকেন ৩৫ বলে ৩২ রান জমা করে। জিম্বাবুয়ে ইনিংসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৭ রান করেছেন ওপেনার জয়লর্ড। পরের সর্বোচ্চ ১৬ রান তিনে নামা ব্রেইন বেনেটের।
বাংলাদেশের হয়ে ১৪ রান খরচায় তিনটি উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ৪ ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন খরচ করেছেন ১৫ রান, ফিরিয়েছেন প্রতিপক্ষের তিনটি উইকেট। দুটি উইকেট শেখ মেহেদীর। ৪ ওভারে ৩৭ রান খরচ করে উইকেটশূন্য ছিলেন শরিফুল ইসলাম। লেগ স্পিনার রিশাদের উইকেট ঝুলিও ফাঁকা।
অল্পতেই গুটিয়ে যাওয়ার পথে জিম্বাবুয়ে
আর মাত্র তিন উইকেট। তাসকিন-সাইফউদ্দিনের তাণ্ডব শেষে বাকি ব্যাটার বলতে আছেন শুধু ক্লাইভ মান্দে। ৪৩ রানে ৭ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে আছে অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায়। পাওয়ারপ্লের পাওয়ার শো টাইগার বোলাররা আরও খানিকটা দেখাতে পারলে লজ্জাজনক স্কোরই গড়বে সফরকারীরা।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে এখনও বাকি ১২ ওভার। ৮.২ ওভারেই পেস ও স্পিন তাণ্ডবে পড়েছিল সিকেন্দার রাজার দল। এই মুহূর্তে ৪ রানে ব্যাট করছেন মান্দে। তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। দলের সর্বোচ্চ ১৭ রান করেছেন ওপেনার জয়লর্ড। পরের সর্বোচ্চ ১৬ রান তিনে নামা ব্রেইন বেনেটের।
পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশের পাওয়ার শো
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তোপ দেগেছিলেন শেখ মাহেদী। ক্রেগ আরভিনকে রানের খাতাই খুলতে দেননি। এরপর জয়লর্ড গাম্বি, ব্রেই বেনেট এবং রিশাদ হোসেন ঘূর্ণিতে পরাস্ত করেছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকেন্দার রাজাকে। পাওয়ারপ্লেতে ৩৮ রানে ৬ উইকেট— টাইগার বোলারদের প্রচ্ছন্ন দাপট বটে!
টপ অর্ডার ধসে ধুঁকতে থাকা জিম্বাবুয়ের দুটি উইকেট নিয়েছেন শেখ মাহেদি। তাসকিন প্রথম ওভারে তিন রান খরচ করার পর শন উইলিয়ামসকে ফিরিয়েছেন বোল্ড করে। রায়ান বার্লকে এরপরের বলে ফিরিয়ে তাসকিন জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিক উইকেটের সম্ভাবনা। জিম্বাবুয়ে সপ্তম উইকেট হারায় দলীয় ৪১ রানের মাথায়। বাউন্ডারি লাইনে তাওহিদ হৃদয়দের দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরেন লুক জঙ্গি।
ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, তামিমের অভিষেক
এক দশক ধরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটেই দাপট দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই সুখস্মৃতি নিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর দল আজ চট্টগ্রামে ভিন্ন কিছুর খোঁজে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বুর হয়ে যেতে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় সিকেন্দার রাজাদের বিপক্ষে নামবে টাইগাররা। পাঁচ ম্যাচের সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাগতিকরা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুক্রবার (৩ মে) মারকাটারি সংস্করণে অভিষেক হচ্ছে ওপেনার ব্যাটার তানজিম সাকিবের। টসের আগে তরুণ তুর্কির মাথায় অভিষেক ক্যাপ তুলে দেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত অতীত বাংলাদেশের। দুই দলের সাত টি-টোয়েন্টি সিরিজের মাত্র একটি জিততে পেরেছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের মাটিতে ২০০১ সালের পর সাদা বলের কোনো সিরিজ জেতেনি রাজাদের দেশ।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে লিটন দাসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে তানজিদ তামিমকে। ৩-এ খেলবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। নেতৃত্বের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও বড় দায়িত্ব থাকবে তার কাঁধে। ৪-এ দেখা যেতে পারে তাওহিদ হৃদয়কে। ৫-এ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ৬-এ জাকের আলী অনীক। বোলিং ইউনিটে পেসার তাসকিন ও শরিফুলকে সঙ্গ দেবেন অনেক দিন পর দলে ফেরা সাইফউদ্দিন। দলে আছেন দুজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার।
বাংলাদেশের একাদশ
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তানজিদ তামিম, লিটন দাস, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী, শেখ মেহেদি, রিশাদ হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ের একাদশ
সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ক্রেগ আরভিন, জয়লর্ড গাম্বি, ব্রায়ান বেনেট, শন উইলিয়ামস, ক্লাইভ মানদান্দে (উইকেটকিপার), লুক জঙ্গি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, রায়ান বার্ল, ব্লেসিং মুজারাবানি ও রিচার্ড এনগারাভা।