প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০২ মে ২০২৪ ২১:২০ পিএম
আইপিএল অভিযান শেষ মুস্তাফিজুর রহমানের। গত বুধবার চেন্নাই সুপার
কিংসের জার্সিতে নিজের শেষ ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশের পেসার। আইপিএলে এই কাটার মাস্টারের
অর্জন অনেক। যৌথভাবে আসরে সর্ব্বোচ্চ উইকেট শিকারি, চেন্নাইয়ের সর্বোচ্চ উইকেটধারী,
একাধিকবার পার্পল ক্যাপ প্রাপ্তি এবং বিদেশিদের মধ্যে প্রথম মেডেন ওভার তার ঝুলিতে।
আইপিএল-যাত্রায় শুরু এবং শেষÑ ‘অর্জন’ দিয়ে এক সুতোয় গেঁথেছেন মুস্তাফিজ। প্রায় প্রতি
ম্যাচেই বিজয়কেতন উড়িয়েছেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন। দেশি-বিদেশি পত্রিকার শিরোনাম হয়েছেন।
উজ্জ্বল করেছেন বাংলাদেশের নাম।
সপ্তম আইপিএলে ৯ ম্যাচে মুস্তাফিজের অর্জন ১৪ উইকেট। মনে হতে পারে,
এ আর কী এমন! জাসপ্রিত বুমরা-হার্শাল বিক্রম প্যাটেলেরও উইকেট সংখ্যাÑ১৪। কিন্তু সংগ্রাহকের
সেরা দশে চোখ ভুলালেই স্পষ্ট, কেন পাদপ্রদীপের আলোয় মুস্তাফিজ। এ তালিকায় মাত্র তিনজন
বিদেশি। বাকি সাতজনই ভারতের। উইকেটের হিসাবে এটি যৌথভাবে মুস্তাফিজের দ্বিতীয় সেরা
মৌসুম। এর আগে ২০২১ সালে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ১৪ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ।
আর তার সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট এসেছিল ২০১৬ সালে।
ফ্লাড উইকেট, ছোট বাউন্ডারি, অচেনা পরিবেশÑ আইপিএলে মুস্তাফিজের লড়াই
এই তিন প্রতিপক্ষের সঙ্গেই নয়। বরং বিশ্বের সব বাঘা ব্যাটারের বিরুদ্ধে বল হাতে লড়াই
করতে হয়েছে তাকে। প্রায় প্রতি ম্যাচে দুইশ ছোঁয়া স্কোর। আড়াইশ হয়েছে একাধিকবার। হাইস্কোরিং
উইকেটে নিজেকে মানিয়ে চেন্নাইয়ের সেরা অস্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন সেই শুরু থেকেই।
সপ্তদশ সংস্করণে মুস্তাফিজের দল পাওয়া ছিল অনেকটা নাটকীয়। সম্প্রতি
এক সাক্ষাৎকারে বাঁ-হাতি পেসার সেটি জানিয়েছেন। আজন্ম লালিত স্বপ্ন পূরণ। প্রিয় মহেন্দ্র
সিং ধোনির সান্নিধ্যে। এসব একটিবারও মুস্তাফিজকে সাইডবেঞ্চে বসতে দেয়নি। পারফর্মে সব
সমই নির্বাচকদের নজরে ছিলেন। চেন্নাইয়ে বিদেশি খেলোয়াড়ের সেরা নামটি নিশ্চিত মুস্তাফিজ।
আসরের দামি পেসার মিচেল স্টার্ক (২৪ কোটি ৭৫ লাখ) ও প্যাট কামিন্সরা (২০ কোটি ৫০ লাখ)
যেখানে ব্যর্থ। সেখানে ২ কোটির মুস্তাফিজ ছিলেন ধারাবাহিকতার প্রতীক।
সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আইপিএল মুস্তাফিজকে তুলেছে নতুন উচ্চতায়।
এর আগে দেশের হয়ে যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন এই কাটার মাস্টার। তার ফেরাটা হয়ে ওঠে
প্রাণের দায়! শ্রীলঙ্কা সিরিজে ছিলেন সাদামাটা। বোলিংয়েও ছিল না ধার। টিকে থাকার লড়াইয়ে
পিছিয়ে পড়ছিলেন ক্রমশই। তবে আইপিএলে ফিরলেন রাজার মতো। বল হাতে ফিরে পেলেন সেই পুরোনো
সময়ের তাল লয় ছন্দ। অস্তিত্বের সংকট কাটিয়ে উড়লেন আকাশে। দল ছাড়ার পরও আলোচনায় আছেন
মুস্তাফিজ। তাকে নিয়ে চর্চা চলছেই। ফিজকে হারানোর দুঃখে কাতর চেন্নাই সুপার কিংস। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির
প্রধান কোচ স্টিফেন ফ্লেমিংও বলেছেন, ‘মুস্তাফিজকে হারানোটা আমাদের জন্য হতাশার।’
জিম্বাবুয়ে সিরিজের লক্ষ্যে দেশে ফিরেছেন মুস্তাফিজ। সফরকারীদের সঙ্গে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে দেখা যাবে মুস্তাফিজকে। এখন দেখার বিষয় মুস্তাফিজের কাটারে কতটা হকচকিয়ে ওঠেন সিকান্দার রাজারা।