চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪ ০৯:৪১ এএম
আপডেট : ০১ মে ২০২৪ ১২:৪০ পিএম
গোলের পর ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের উল্লাস। ছবি : সংগৃহীত
ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়াল মাদ্রিদের ওপর আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয় বায়ার্ন মিউনিখ। দলটি খেলার ১০ মিনিটের মধ্যে জোড়া গোলের লিড নিলেও সেটি মোটেও বেমানান লাগতো না। গোল মিসে সেটি না হলেও প্রথম সুযোগ কাজে লাগিয়েই এগিয়ে যায় অতিথিরা। পরে এগিয়ে যাওয়ার স্বাদ পেয়েছে বায়ার্নও। কিন্তু ভিনিসিয়ুসের অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে শেষ পর্যন্ত মিউনিখ থেকে ড্র করে ফিরেছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বায়ার্ন মিউনিখের ঘরের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ২-২ গোলের ড্র মেনেছে রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ। খেলার প্রথমার্ধে ১ গোলের লিড নেওয়া রিয়াল পরের অর্ধে গিয়ে হজম করে জোড়া গোল। লিরয় সানের পর পেনাল্টি থেকে গোল করেন হ্যারি কেন। রিয়ালের জার্সিতে দুটি গোল করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস।
এদিন খেলার ৪০ সেকেন্ডেই বিপদে পড়তে পারত রিয়াল। কেনের সঙ্গে ওয়ান ওয়ান খেলে বক্সে ঢুকে পড়েন সানে। শেষ পর্যন্ত গোলরক্ষককে একা পেয়ে শট নেন ঠিকঠাক। কিন্তু আন্দ্রে লুনিন ছিলেন প্রস্তুত, পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন সানের শট। শুরুর এই আক্রমণ অব্যাহত রাখে বায়ার্ন। এরপর দুই মিনিটের মধ্যে আরও জোড়া আক্রমণ স্বাগতিকদের। কেনের শট রুখে দেন লুনিন। আর ফাকায় পেয়েও বক্সের ওপর দিয়ে মারেন সানে। পরপর তিনটি সুযোগ হাতছাড়া করে বায়ার্ন।
বায়ার্নের এমন আক্রমণের মধ্যে বলার মতো আক্রমণ শানাতে পারেনি রিয়াল। মূলত দু একবার বল নিয়ে ওপরে উঠলেও সেটি বক্সের বাইরেই প্রতিহত হয়। ২০ মিনিট পর্যন্ত খেলায় আধিপত্য বিস্তার করে টমাস টুখেলের শিষ্যরা। যদিও খেলার ২৪ মিনিটে প্রথম লিড নেয় রিয়াল। টনি ক্রসের সঙ্গে দারুণ বোঝাপাড়ায় লক্ষ্যভেদ করেন ভিনি। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে সেমি-ফাইনালে টানা তিন মৌসুমে গোল করলেন ভিনিসিয়ুস। এর আগে এই কীর্তি আছে ইয়ারি লিটমেনেন, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও কেভিন ডি ব্রুইনের।
প্রথমার্ধে আর কোনো দল গোল পায়নি। এই অর্ধে গোলে সাতটি শট নিয়েও ফায়দা তুলতে পারেনি বায়ার্ন। সেখানে কেবল এক শটেই কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যায় রিয়াল। বিরতির পর ফিরে অবশ্য ম্যাচে ফিরতে দেরি করেনি বায়ার্ন। ৫৩ মিনিটেই দলকে সমতায় ফেরান এদিন একাধিক মিস করা লিরয় সানে। বাঁ দিক থেকে এক ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে বক্সে ঢুকে জোরাল শটে কাছের পোস্ট দিয়ে গোলটি করেন জার্মান ফরোয়ার্ড।
ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই দ্বিতীয় গোল হজম করে রিয়াল। বক্সে জামাল মুসিয়ালাকে ফাউল করে বসেন লুকাস ভাসকেস। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। নিখুঁত স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন দারুণ ছন্দে থাকা কেন। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কেনের মোট গোল হলো ৮টি। কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এর আগে কোনো ইংলিশ তারকাই এক আসরে এতো বেশি গোল করেননি। বায়ার্নের জার্সিতে চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে কেনের গোল হলো ৪৩টি।
এক গোলে এগিয়ে থেকেও আরও গোলের নেশায় মত্ত হয় বায়ার্ন। কিন্তু লিড বড় করতে গিয়ে উল্টো সমতায় ফিরতে হয় তাদের। ৮৩ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের সফল স্পট কিকে সমতায় ফেরে রিয়াল। বক্সে আরেক ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোকে ডিফেন্ডার কিম মিন-জায়ে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় সফরকারীরা। ২-২ সমতার পর খেলার বাকি সময়টা দুই দলই তাদের জাল অক্ষত রাখে।
এই প্রতিযোগিতায় রেকর্ড শিরোপা জয়ের মতো মাদ্রিদের দলটি ফাইনালও খেলেছে সবচেয়ে বেশি, মোট ১৭ বার। প্রতিপক্ষের মাঠে এই ফলে অন্তত মানসিকভাবে আরেকটি ফাইনালে ওঠার পথে কিছুটা এগিয়ে রইল রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।