প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:১৬ পিএম
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:২৪ পিএম
আবির্ভাবলগ্নেই গোটা ক্রিকেট দুনিয়াকে চমকে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ২০১৫ সালে তার জাদুকরী বোলিংয়ে টি-২০ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারায় বাংলাদেশ। ওই একই বছর ওয়ানডে অভিষেকে ভারতকে নাকানি-চুবানি খাওয়ান এই বাঁহাতি পেসার। ওই সময় ভারতের নেতৃত্বে ছিলেন অধিনায়কের অধিনায়ক বিবেচিত মহেন্দ্র সিং ধোনি। সিরিজ হারের পর মুস্তাফিজের কাটার-স্লোয়ারগুলো কেন আলাদা এ নিয়ে বেশ বড় একটা ব্যাখ্যা দেন ধোনি। তার নামের সঙ্গে স্থায়ী হয়ে যায় ‘কাটার মাস্টার’ শব্দযুগল। বিশ্বসেরা ক্রিকেটারদের মঞ্চ আইপিএলে প্রথমবারের মতো মুস্তাফিজ খেলছেন ধোনির দল চেন্নাই সুপার কিংসে। ৯ বছরের ক্যারিয়ারে মাঝেমধ্যে খেই হারালেও, ধোনির ছোঁয়ায় সেই সেরা সময়ের কাটার স্লোয়ার অস্ত্র ফিরে পেয়েছেন ফিজ।
সম্প্রতি আইপিএলে খেলোয়াড় পরিচয় পর্বে নানা ঘাত-প্রতিঘাত এবং রাতারাতি কাটার মাস্টারে পরিণত হওয়ার গল্প শুনিয়েছেন মুস্তাফিজ। বাঁ-হাতি পেসার বলেছেন, ‘আমার কাটার ন্যাচারাল। একদিন জাতীয় দলের নেটে বোলিং করছিলাম। তখন খুব জোরে বল ছুড়তাম। তখন বিজয় ভাই (এনামুল হক বিজয়) বলেন, তুই স্লোয়ার মার। তখন স্লোয়ার বল ট্রাই করতে থাকি। দেখি অনেকেই আমার স্লোয়ার আর কাটারে আউট হচ্ছিল। বিষয়টি ভালো লাগে। তখন থেকেই স্লোয়ার শুরু।’ এই স্লোয়ার-কাটারের গুণে ২০১৬ সালে আইপিএলে সুযোগ পান মুস্তাফিজ। আর ২০২৪ সাল অর্থাৎ সপ্তদশ আসরে চেন্নাই সুপার কিংসে খেলছেন। দলটির পেস ইউনিটের প্রধান অস্ত্র ফিজ। সর্বোচ্চ উইকেট তার। ৭ ম্যাচে তুলেছেন ১২ উইকেট। আসরে প্রথম ম্যাচে কাটার নৈপুণ্য দেখান। তুলে নেন ৪ উইকেট। এরপর প্রতি ম্যাচে উইকেট তুলেছেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ-রাজস্থানের মতো দলে খেললেও মুস্তাফিজের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল চেন্নাইয়ে খেলা। বিশেষ করে ধোনিগুণে মুগ্ধ তিনি। বলেছেন, ‘চেন্নাইয়ে প্রথমবার খেলছি। যখন থেকেই আইপিএল খেলি, ২০১৬ সালে, তখন থেকেই চেন্নাই টিমে খেলার স্বপ্ন। যেদিন আমি চেন্নাইয়ে খেলার জন্য ডাক পাই, পরের দিন নিউজিল্যান্ডে ম্যাচ ছিল। ওই রাতে মোটেও ঘুম আসছিল না। ঘণ্টাখানেকের মতো ঘুমিয়েছিলাম। সারা রাত মেসেজ আসতেই থাকে। সবাই আমাকে অভিনন্দন জানায়।’
জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ ম্যাচগুলো খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না মুস্তাফিজ। দৈন্যদশা দেখে নিন্দুকরা কটূক্তি করেন, ফিজ ফুরিয়ে গেছেন। কিন্তু আইপিএলে ফিরেই স্বপ্রতিভ ফিজ। এর মূল কারণ চেন্নাই শিবিরের আবহ সামনে এনেছেন তিনি। বলেছেন, ‘জাতীয় টিমে সবাই যেমন ফ্রেন্ডলি। এখানেও একই। মাহী ভাই (মহেন্দ্র সিং ধোনি), ফিল্ডিং সেটআপে সাহায্য করেন। তার (মহেন্দ্র সিং ধোনি) সঙ্গে বোলিং নিয়ে বেশি কথা হয়। তিনি কাছে এসে বলেন, এভাবে নয়, ওভাবে করো। এটা করলে ভালো হবে। এখানে যদি সফল হই, অন্য জায়গায় সফল হব। তা ছাড়া বড় টিমের সঙ্গে খেলতে ভালো লাগে।’
তবে খেলাটি টি-টোয়েন্টি। সুন্দর পথচলার সঙ্গেই জড়িয়ে আছে হঠাৎ কালবৈশাখী। সবশেষ লখনৌ সুপার জায়ান্টের বিপক্ষে দারুণ শুরু হলেও শেষ ভালোর যুদ্ধে হেরে যান ফিজ। শেষ ওভারে তার বাজে বোলিংয়ে হারে দল। তবে ব্যর্থতা আর পুরোনো ঘটনা নিয়ে পড়ে থাকতে চান না তিনি। এগিয়ে যেতে চান ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে। ফিজ বলছেন, ‘খেলায় ভালোর শেষ নেই। যেটা চলে গেছে, সেটা গেছে। ফিরে পাব না। কী করলে ভালো করতে পারব। এটাই সব সময় ভাবি। এটাই মূল লক্ষ্য।’