ডিপিএল
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১০:২৮ এএম
শান্তরা আজ জিতলেই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাবে শিরোপা, গতকাল মিরপুরে শিষ্যদের সেই কথাই বুঝি শোনাচ্ছিলেন কোচ সুজন— ছবি: আ. ই. আলীম
ডিপিএলে প্রথম লিগের ১১ ম্যাচের সব কটিতে জয়, সুপার লিগের প্রথম রাউন্ডেও দোর্দণ্ড প্রতাপ আবাহনী লিমিটেডের। ১২ ম্যাচ শেষে খালেদ মাহমুদ সুজনের শিষ্যদের পয়েন্ট ২৪। টেবিলে ধরাছোঁয়ার বাইরে। চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে একচ্ছত্র দাপট গতবারের চ্যাম্পিয়নদের। পরিসংখ্যান বলছে, সুপার লিগে বাকি চার ম্যাচের আর একটিতে জিতলেই আবারও চ্যাম্পিয়ন হবে আবাহনী। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ বুঝি আজ বৃহস্পতিবারই হয়ে যেতে পারে! নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সকাল ৯টায় গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে লড়বে নাজমুল হোসেন শান্তদের দল।
লিগ টেবিল জানাচ্ছে, দাপটের সঙ্গে খেলে আসা আবাহনী আজও যদি সফল হয়, তাহলে ২২তম শিরোপার উদযাপন সেরে নিতে পারে দলটি। কেননা টেবিলের দুইয়ে থাকা শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের পয়েন্ট ১৮। আজ বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে তাদের প্রতিপক্ষ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। একই দিনে সমান ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের খেলা প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে। দুই ও তিন নম্বরে থাকা দল দুটি শেষ চার ম্যাচের কোনো একটি হারলেই ছিটকে যাবে শিরোপার দৌড় থেকে। বাকি চার ম্যাচের চারটিতে জিতলে দুই দলেরই পয়েন্ট হবে ২৬। ওদিকে আবাহনী যদি একটি ম্যাচ জিতে বাকি তিনটিতে হেরে বসে তাহলে তাদের পয়েন্ট থাকবে ২৬। সেক্ষেত্রে পয়েন্ট টেবিলের একটি হিসাব আসতে পারে। চার, পাঁচ ও ছয়ে থাকা যথাক্রমে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সংগ্রহ ১৬, প্রাইম ব্যাংক ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের ১৪ করে পয়েন্ট। খাতাকলমে সুযোগ তাদের নেই বললেই চলে। তবে দুই ও তিনে থাকা শাইনপুকুর ও মোহামেডানের যে কাউকে হারতে হবে একটি ম্যাচ। দুই দলের মুখোমুখি দেখায় যারা জিতবে তারাই এগিয়ে থাকবে। সব মিলিয়ে আজ যদি মোহামেডান ও শাইনপুকুর হারে তাহলে জিতলেই শিরোপা উদযাপন করতে পারবে আবাহনী।
মোদ্দাকথা শিরোপার দৌড়ে আবাহনীকে পেছনে ফেলতে প্রথমত শাইনপুকুর বা মোহামেডানকে সব কটি ম্যাচ জিততে হবে। তার ওপর আবাহনী যেন চারটি ম্যাচই হারে সেই কামনা করতে হবে। জাতীয় দলের বেশিরভাগ তারকা খেলোয়াড় নিয়ে সাজানো আবাহনী যে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হতে চাইবে, সেটা অনুধাবন করতে প্রয়োজন পড়ে না বিশেষজ্ঞ হওয়ার। শিরোপার দৌড়ে আজ ফতুল্লায় নিজেদের আরও কাছে তথা ছায়া উদযাপন করার উপলক্ষও বানিয়ে নিতে পারে।
ডিপিএল সুপার লিগে অতিনাটকীয় কিছু না ঘটলে আর আবাহনী অস্বাভাবিক ও অবিশ্বাস্য রকমের খারাপ না খেললে অন্য কারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। শুধু পয়েন্টেই এগিয়ে নয়, মাঠের পারফরম্যান্সকে মানদণ্ড ধরলেও আবাহনী সবার চেয়ে এগিয়ে।
গতকাল মিরপুরে তপ্ত রোদের মাঝে লম্বা সময় অনুশীলন করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। খালেদ মাহমুদ সুজনের লম্বা ক্লাসেও বেশ মনোযোগী ছিলেন আবাহনীর খেলোয়াড়রা। কোচ সুজন পরে কথা বলেছেন গণমাধ্যমের সঙ্গে। মুস্তাফিজুর রহমানের আইপিএল ইস্যু, দেশের খেলোয়াড়দের পারফর্ম এবং আবাহনীর খেলোয়াড়দের প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি।
বিসিবির পরিচালক ও আবাহনীর কোচ আশাবাদী তরুণদের নিয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ক্যাম্প স্কোয়াডে আবাহনীর ১০ জন খেলোয়াড় আছেন, তারা কেন এই দলে আছেন সেটিও খোলাসা করেছেন সুজন, ‘কিছুদিন আগে শান্তকে মজা করে বলেছিলাম, তোর জাতীয় দলের চেয়ে আবাহনীর দল শক্তিশালী। আবাহনীর দশজন খেলোয়াড় যাচ্ছে মানে তারা আসলেই দারুণ। ভালো ফর্মে আছে, যদি প্রিমিয়ার লিগের (স্ট্যাটস) দেখলে বুঝতে পারবেন, সবার স্ট্রাইক রেট কেমন! ওয়ানডেতে স্বাভাবিক ৭০ বা ৮০ রেটে খেলে তারা, কিন্তু শান্ত বলেন, হৃদয় কিংবা অনিককে বলেনÑ সবাই ১২০ স্ট্রাইক রেটের ওপর ব্যাটিং করেছেন প্রিমিয়ার লিগে। এটা খুবই দুর্দান্ত একটা ব্যাপার যে আমাদের ব্যাটাররা এমন ব্যাটিং করেছে, তারা চেষ্টা করছে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রস্তুতির জন্য দেওয়া ১৭ সদস্যের স্কোয়াডকে ভাবা হচ্ছে বিশ্বকাপের ছায়া দল। খালেদ মাহমুদও তেমনটি ধরে দলের শক্তিসামর্থ্য ও অবস্থা বিচার করেছেন। আবাহনী কোচের মতে তরুণ-অভিজ্ঞদের নিয়ে গড়া দলটি ব্যালান্সড, ‘লিপু ভাই (গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, বিসিবির প্রধান নির্বাচক) যে দলটি দিয়েছেন দারুণ এক ব্যালেন্স দল। হয়তো অনেক কথা থাকতে পারে যে এ নাই ও আছে। কিন্তু যারা আছে তারা সবাই পারফর্মার, তারা সবাই দারুণ ক্রিকেটার। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ক্রিকেটকে দেওয়ার মতো অনেক কিছু আছে এই ছেলেদের মধ্যে। শুধু আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা আশা করি বিশ্বাস করি এই ছেলেগুলো বাংলাদেশকে অবাক করার মতো কিছু দেবে।’