রুবেল রেহান
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৩৪ পিএম
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:০৮ পিএম
রেকর্ড গড়ার হাতছানি সবুজের সামনে। ছবি : আ. ই. আলীম
প্রিমিয়ার লিগ হকির অলিখিত ফাইনালেও হয়নি শিরোপার নিষ্পত্তি। এগিয়ে থেকেও মারামারি কাণ্ডে মাঠ থেকে বেরিয়ে যায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। রিভিউজ টু প্লে হিসেবে জয়ী ঘোষণা করা হয় আবাহনীকে। তাতে কপাল খোলে মেরিনার ইয়াংস ক্লাবের। আবাহনীর বিপক্ষে শিরোপার লড়াইয়ে প্লে-অফ ম্যাচ খেলবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এ ম্যাচে আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকবেন লিগের সর্বোচ্চ গোল করা সোহানুর রহমান সবুজ। ৩৯ গোল করা মেরিনার্সের এ ডিফেন্ডারের সামনে এখন এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়ার হাতছানি। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে হকি লিগে ৪০ গোল করেছিলেন রফিকুল ইসলাম কামাল। প্লে-অফে দুটি গোল করলেই রেকর্ডটি নিজের করে নেবেন সবুজ। রেকর্ড, প্লে-অফ এবং ক্যারিয়ার নিয়ে সবুজ কথা বলেছেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে।
প্রবা : আগামী মাসের শুরুর দিকে প্লে অফ ম্যাচ হওয়ার কথা, নিশ্চিতভাবেই আপনি খেলবেন। এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটা ভাঙার সুযোগ আবার পেতে যাচ্ছেন…
সোহানুর রহমান সবুজ : হ্যাঁ, শুনছি ১ তারিখের পর প্লে অফ ম্যাচ হবে। যদি সুযোগ আসে চেষ্টা করব রেকর্ডটা ভাঙার। তবে রেকর্ড নিয়ে অতটা চিন্তা করছি না, ম্যাচটা জিততেই ফোকাস করব।
প্রবা : রেকর্ডটা হয়নি বলে একটু আফসোসই করছিলেন। সুযোগটা আবার পাচ্ছেন, আলাদা কোনো রোমাঞ্চ কাজ করছে কি না-
সোহানুর রহমান সবুজ : ৩৯ গোল করছি, একটু তো আশা থাকবেই, দুটি গোল করলেই রেকর্ডটা হয়ে যাবে। চেষ্টা করব গোল করার জন্য।
প্রবা : রফিকুল ইসলাম কামালও চাচ্ছিলেন আপনি রেকর্ডটা ভাঙুন। এ নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়েছে?
সোহানুর রহমান সবুজ : রেকর্ডের বিষয়টি ভাগ্যের ব্যাপার। এ নিয়ে কামাল ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়নি। লিগের খেলা নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। তবে আমার যেদিন ২০ গোল হলো, তখন উনি আমাকে ডেকে বললেন- তুমি ভালো খেলছো, এটা ধরে রেখো।
প্রবা : আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ড্র হলে কিংবা আবাহনী জিতলে সেটি আপনাদের ফেভারে যেত। স্বাভাবিকভাবেই মেরিনার্স এমনটা চেয়েছে। কিন্তু সেটি যেভাবে হলো, মানে মারামারির কথা বলছি; নিশ্চয়ই এমনটি আশা করেননি?
সোহানুর রহমান সবুজ : খেলোয়াড়দের কথা যদি বলি, তবে এমনটা (মারামারি) আমরা মোটেও আশা করি না। এটা হকির জন্যও খারাপ দিক। কারণ খেলাগুলো এখন লাইভ সম্প্রচার করা হচ্ছে, সবাই দেখছে।
প্রবা : লিগে পেনাল্টি কর্নার থেকেই ২২ গোল করছেন, কিন্তু পুলিশের বিপক্ষে ম্যাচে সেই পিসি থেকেই গোল করতে পারছিলেন না। ম্যাচ শেষে বলেছিলেন রেকর্ড ভাঙার চাপে ছিলেন। এবার তো হারানোর কিছু নেই, নিশ্চয় চাপও থাকবে না।
সোহানুর রহমান সবুজ : চাপ একটু ছিল। এতগুলো গোল করছি, কিন্তু শেষ ম্যাচে কেবল একটা গোল করেছি। প্লে অফ ম্যাচ যদি হয়… এবার চেষ্টা করব চাপ না নিয়ে খেলতে।
প্রবা : পরপর দুই মৌসুমে সর্বোচ্চ স্কোরার হলেন। খেলার এই অদম্য মানসিকতা কিংবা অনুপ্রেরণা কীভাবে পান?
সোহানুর রহমান সবুজ : ব্যাক টু ব্যাক সর্বোচ্চ স্কোরার হয়েছি, এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। অনুপ্রেরণা যদি বলি তবে আমার বড় ভাই একটা কথা সব সময় বলেন, ‘গোলের ক্ষুধা থাকতে হবে, ক্ষুধা থাকলে গোল পাওয়া যাবে।’
প্রবা : এই মৌসুমে কয়টি হ্যাটট্রিক করেছেন জানা আছে? ৩৯ গোল থেকে যদি সেরা গোল বাছাই করতে বলি কোনটিকে বলবেন।
সোহানুর রহমান সবুজ : ঠিক বলতে পারব না কয়টি হ্যাটট্রিক করেছি, খুব সম্ভবত পাঁচটি। আর সেরা গোলটা অবশ্যই মোহামেডানের বিপক্ষে ম্যাচে, যেখানে আমি হ্যাটট্রিক করি।
প্রবা : ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আপনি ছিলেন ফরোয়ার্ড, এখন দেশের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার। বদলে যাওয়ার গল্পটা কী?
সোহানুর রহমান সবুজ : যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই রাসেল মাহমুদ জিমির খেলা দেখতাম। তিনি অনেক গোল করতেন, তার নাম-ছবি পত্রিকায় ছাপা হতো। সেটা দেখে আমারও ইচ্ছা হতো এক দিন আমার নাম পত্রিকায় উঠবে। সেই আগ্রহ থেকেই ফরোয়ার্ড হওয়া। পরে ডিফেন্ডার হিসেবে আমাকে নির্বাচন করে বিকেএসপি। আমার কোচ রাজু স্যার আমাকে বলেন- তোমার উচ্চতা ভালো, তুমি পেনাল্টি কর্নার ভালো নিতে পারবে। এরপর তিনিই আমাকে ডিফেন্ডার হিসেবে গড়ে তোলেন। আর আপনারা আমাকে সেরা বলেন, আমি নিজেকে কখনও সেরা ভাবি না। যেদিন দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারব, সেদিন আমার মনে হবে কিছু একটা করতে পেরেছি।