চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:০৯ এএম
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ১১:০০ এএম
অবিশ্বাস্য নাটকীয়তার পর বার্সাকে বিদায় করে সেমিতে পিএসজি
প্রথম লেগের ১ গোলের লিডের সঙ্গে দ্রুতই ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় বার্সেলোনা। কিন্তু ২ গোলের লিডও ধরে রাখতে পারেনি জাভি হার্নান্দেজের দল। নিজেদের বেশ কিছু ভুল আর চাপ ধরে রাখতে না পারায় মাশুল গুনেছে কাতালুনিয়ারা। ফাইনাল লেগের হিসাব মেলাতে না পেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে ২০১৩-১৪ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নরা। তাতে ২০২০-২১ মৌসুমের পর এই প্রথম শেষ চারের টিকিট পেল লুইস এনরিকের পিএসজি।
মঙ্গলবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় তথা ফাইনাল লেগে শুরুতেই রাফিনহার গোলে লিড নেয় বার্সেলোনা। তার পরও ম্যাচটি তারা হেরেছে ৪-১ ব্যবধানে। সম্মিলিতভাবে ৬-৪ ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনালে উঠেছে পিএসজি। রাতের অন্য খেলায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড। সিগন্যাল ইদুনা পার্কে স্পেনের ক্লাবটিকে তারা হারিয়েছে ৪-২ ব্যবধানে। সম্মিলিতভাবে ৫-৪ লিড নিয়ে শেষ চারে উঠেছে জার্মান জায়ান্টরা।
দুই স্প্যানিশ ক্লাবের ভরাডুবির রাতে শুরুটা মন্দ করেনি বার্সেলোনা। খেলার ১২তম মিনিটেই লামিন ইয়ামালে দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠেন। কয়েকজনকে কাটিয়ে বক্সের একদম সামনে গিয়ে ক্রস দেন, আলতো টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন রাফিনহা। দুই লেগ মিলে তখন ২ গোলের লিড জাভির দলের। কিন্তু এর পরই ম্যাচটা যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয় বার্সার জন্য। একের পর এক আক্রমণে বার্সার রক্ষণভাগ টালমাটাল করে তোলেন উসমান ডেম্বেলে, কিলিয়ান এমবাপেরা।
প্রতিপক্ষের এমন আক্রমণে খেই হারিয়ে বসে বার্সা। খেলার ২৯তম মিনিটে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আরাউজো। বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে বিপদসীমায় ঢুকে পড়েন পিএসজির রাইট উইঙ্গার বারকোলা। তড়িঘড়ি ট্যাকল করতে গিয়ে তাকে পেছন থেকে টেনে ফেলে দেন বার্সা ডিফেন্ডার। রেফারি আর দেরি করেননি, সঙ্গে সঙ্গে লাল কার্ড দেখান আরাউজোকে। এদিন রেফারির আরও কিছু সিদ্ধান্ত বিপক্ষে গেছে বার্সার।
১০ জনের দল পেয়ে আরও চেপে ধরে পিএসজি। খোলসে ঢুকে পড়ে বার্সা। বোধ করি ২ গোলের লিড ডিফেন্ড করতেই চেয়েছিল দলটি। সেটি পরিষ্কার হয়ে ওঠে ৩৪তম মিনিটে ইয়ামালকে তুলে নেওয়ায়। অ্যাটাকিং এ মিডফিল্ডারকে উঠিয়ে একজন ডিফেন্ডারকে বদলি হিসেবে নামান জাভি। তাতেও ফল পক্ষে আসেনি। হয়েছে উল্টোটাই। এদিন দুর্দান্ত খেলতে থাকা ইয়ামালে উঠে যাওয়ার পর আক্রমণে ধার কমে বার্সার। সুযোগ নেয় পিএসজি। ৪০তম মিনিটেই দলকে সমতায় ফেরান ডেম্বেলে। ১-১ গোলের সমতা নিয়ে দুই দল বিরতিতে যায়।
বিরতির পর ফিরে বার্সার ওপর রীতিমতো রোলার কোস্টার চালান এমবাপে, ডেম্বেলে, বারকোলারা। একের পর এক আক্রমণের গোলা ছোড়েন তারা। সেটি কখনও মিস হয়েছে, কখনও গোলরক্ষক আটকেছেন। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি পিএসজিকে। ৫৪ মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন ভিতিনহা। এ গোল হজমের ৩ মিনিট পরই লাল কার্ড দেখে ডাগআউট ছাড়েন বার্সা কোচ জাভিও। এ কয়েক মিনিটে লন্ডভন্ড হয়েছে বার্সা। কোচকে হারিয়ে যেন আরও দিশাহারা হয়ে পড়েন বার্সার খেলোয়াড়রা।
৫৬ মিনিটে ডেম্বেলেকে বক্সের মধ্যে স্লাইড করতে গিয়ে ফাউলের শিকার হন জোয়াও ক্যানসেলো। তাতে পেনাল্টি পায় পিএসজি। স্পট কিকে লক্ষ্য ভেদ করতে কোনো ভুল হয়নি এমবাপের। পিএসজি লিড বাড়িয়ে নেয় ৩-১-এ। সম্মিলিতভাবে তখন ৫-৪ গোলের লিড পিএসজির। খেলার বাকি সময়ে আর কোনো বিপদ না ঘটাতে চাওয়াটাই হয়তো মুখ্য ছিল। ধীরে ধীরে খোলসে ঢুকে পড়েন পিএসজির খেলোয়াড়রা। গোলের জন্য এবার মরিয়া বার্সা। তবে বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করতে পারলেও প্রতিপক্ষের জাল কাঁপাতে পারেননি কেউ। অবশেষে নির্ধারিত সময়ের ১ মিনিট আগে ঘরের মাঠের সমর্থকদের চূড়ান্ত হতাশায় ডোবান এমবাপে। ৮৯তম মিনিটে তার এ গোলেই শেষ পর্যন্ত ৪-১ ব্যবধানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অতিথি দলটি।