ডিপিএল ২০২৪
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৪৭ পিএম
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩২ পিএম
তাইবুরের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে শেখ জামাল; ছবি : সংগৃহীত
পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের ইনিংসের শুরুতে আঘাত হানেন তাইবুর রহমান। বাঁহাতি এ স্পিনার কিপটে বোলিংয়ের পাশাপাশি শিকার করেন আরও দুই উইকেট। এরপর রান তাড়ায় পাঁচ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়েছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। তবে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন ৩২ বছর বয়সি এ অলরাউন্ডার। এ জয়ে চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) পয়েন্ট তালিকায় দুইয়ে উঠে এসেছে ধানমন্ডির ক্লাবটি।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ডিপিএলের দশম রাউন্ডের ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শফিকুল ইসলাম ও তাইবুর রহমানের বোলিং তোপে ৪৮.২ ওভারে ২০৫ রানে অলআউট হয়ে যায় পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব। জবাব দিতে নেমে ১০৩ রানের মধ্যেই টপ অর্ডারের ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছিল শেখ জামালও। তবে ষষ্ঠ উইকেটে সোহান-তাইবুরের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ২৪ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর ভেড়ায় গত আসরের রানার্সআপরা।
এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৪১ রান তোলেন পারটেক্সের দুই ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ও আজমির আহমেদ। তবে ব্যাক টু ব্যাক ওভারেই এ দুই ব্যাটারকে বিদায় করেন তাইবুর। ইনিংসের ১১তম ওভারে আজমিরকে (৩৫) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাইবুর রহমান। ৩৭ বলে একটি চারের সাহায্যে ১৭ রান করেন মুনিম। এরপর অধিনায়ক মিজানুর রহমানের সঙ্গে জুটি গড়েন জাহিদুজ্জামান খান। ২০ রান করা মিজানুরকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রবিউল ইসলাম। এরপর ৪৫ রানের জুটি গড়েন তানজীর হায়দার ও জাহিদুজ্জামান খান।
দলীয় ১২৪ রানে শফিকুল ইসলামের শিকার হন জাহিদুজ্জামান। তিনি করেন ৪৯ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ৩২ রান। ইনিংস বড় করতে পারেননি তানভীর হায়দার। এরপর আহরার আমিন, রাকিবের ইনিংসে দুইশ পেরোয় পারটেক্সের ইনিংস। ২৫ বলে দুটি ছক্কার সাহায্যে ২১ রান করেন মোহাম্মদ রাকিব। অল্পতেই ফেরেন মুক্তার আলী। ইনিংস বড় হয়নি আহরারেরও। ৩৯ বলে একটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৩৫ রান করেন শফিকুল ইসলামের শিকার হন তিনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভার শেষ হওয়ার আগেই অলআউট হয়ে যায় পারটেক্স। তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০৫ রান। চার উইকেট শিকার করেন বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলাম। দশ ওভার বল করে মাত্র ১৯ রান দিয়ে তিন উইকেট শিকার করেন তাইবুর রহমান।
জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি শেখ জামালের। চার-ছক্কা হাঁকালেও বড় হয়নি সাইফের ইনিংস। দলীয় ২৩ রানে তাকে ফেরান মুক্তার আলী। ২৫ বলে দুইটি চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান করেন তিনি। ইনিংস বড় করতে পারেননি রবিউল ইসলাম। তার ও সৈকত আলীর ৪২ রানের জুটি ভাঙেন আহরার আমিন। ৩৬ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ২০ রান করেন তিনি। অল্প সময়ের মধ্যেই ফেরেন ফজলে রাব্বি ও সৈকত আলী।
শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি সৈকত আলী। ৬১ বলে চারটি চার ও দুই ছক্কায় ৪১ রান করে আহরার আমিনের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। এর আগে ফজলে রাব্বিকে মাত্র ১২ রানে ফিরিয়ে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান তিনি। মাত্র এক রানেই ইয়াসির আলীকে ফেরান তানভীর হায়দার। ফলে মাত্র ১০৩ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে শেখ জামাল।
এরপর বড় জুটি গড়েন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও তাইবুর রহমান। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সোহান। দুজনের জুটিতে বিপর্যয় সামাল দেয় শেখ জামাল। তাইবুর কিছুটা ধীরগতিতে এগোলেও সোহান এগিয়েছেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। এরই মাঝে নিজের ফিফটির দেখা পেয়ে যান সোহান। ৬০ বলে ফিফটি করেন তিনি।
শেখ জামালকে আর বিপদ হতে দেননি তারা। ইনিংসের ৪৬তম দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তারা। ৭৫ বলে আটটি চার ও দুই ছক্কায় অপরাজিত ৭৬ রান করেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ৬৩ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তাইবুর। তিন উইকেট শিকার করেন আহরার আমিন। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তাইবুর রহমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব : ৪৮.২ ওভারে ২০৫/১০ (আহরার আমিন ৩৫, জাহিদুজ্জামান খান ৩২, তানবীর হায়দার ৩০; শফিকুল ইসলাম ৪/৩২, তাইবুর রহমান ৩/১৯)।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব : ৪৬ ওভারে ২০৮/৫ (নুরুল হাসান সোহান ৭৬*, সৈকত আলী ৪১, তাইবুর রহমান ৩৯*; আহরার আমিন ৩/৪২, মুক্তার আলী ১/৩৫)।
ফল : শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : তাইবুর রহমান।