ডিপিএল ২০২৪
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:২১ পিএম
ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন সাইফ হাসান। এরপর বল হাতেও অফস্পিনে জোড়া উইকেট শিকার করেন তিনি। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৭৩ রানে হারিয়ে দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে গত আসরের রানার্সআপরা।
শনিবার (৬ এপ্রিল) শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) নবম রাউন্ডের ম্যাচে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯২ রানের পুঁজি দাঁড় করায় শেখ জামাল। জবাবে তামিমের ফিফটির পরেও ৪৪.১ ওভারে ২১৯ গুঁটিয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট।
এদিন টসে জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার সাইফ হাসান এবং সৈকত আলীর ব্যাটে চড়ে ভালো শুরু পায় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। দুজনের সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকে দলের ইনিংস। উদ্বোধনী জুটিতে সাইফ এবং সৈকত মিলে রান তোলেন ৯১। ফিফটির খুব কাছে চলে গেলেও শেষমেশ ফিফটি না ছুঁয়েই বিদায় নিয়েছেন সৈকত। ৫৫ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান এই ওপেনার।
এরপর সাইফের সাথে জুটি বাঁধেন ফজলে রাব্বি। দারুণ ব্যাটিংয়ে সাইফ তুলে নেন ফিফটি। রাব্বি-সাইফের কার্যকরী ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকে শেখ জামালের ইনিংস। সময়ের সাথে সাথে হাত খুলে মেরেছেন সাইফ। রাব্বিও দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে রান বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন।
দারুণ খেলতে থাকা রাব্বি থেমেছেন দলের ১৮৪ রানের মাথায়। সৈকতের মত ফিফটি মিসের আফসোসে পুড়েছেন তিনিও। ৬০ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন তিনি। অন্যদিকে দারুণ ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকা সাইফ তুলে নেন অসাধারণ এক সেঞ্চুরি। মাঝে চারে নেমে দ্রুত সাজঘরে ফিরেছেন কাজী নুরুল হাসান সোহান। ১১ বলে ৭ রান করে বিদায় নেন তিনি।
সাইফ হাসান ১২০ বলে ১১৫ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে দলের ২২৬ রানের মাথায় বিদায় নেন। শেষ দিকে ঝড় তোলেন ইয়াসির আলী চৌধুরী এবং জিয়াউর রহমান। ২২ বলে ২৭ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন ইয়াসির। অন্যদিকে জিয়াউর খেলেন ৩২ বলে ৩৯ রানের টর্নেডো গতির ইনিংস। তাতে ২৯২ রানের পুঁজি দাঁড় করায় শেখ জামাল।
প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন হাসান মাহমুদ। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন রেজাউর রহমান রাজা এবং রুবেল হোসেন।
জবাব দিতে নেমে চালিয়ে খেলতে থাকেন প্রাইম ব্যাংকের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং পারভেজ হোসেন ইমন। দুজনের উদ্বোধনী জুটি থেকে রান আসে ৩২। ১৭ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন ইমন। এরপর শাহাদাত হোসেন দিপুকে সাথে নিয়ে এগোতে থাকেন তামিম। দারুণ দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকেন তামিম।
দিপু অবশ্য খুব একটা সাবলীল ছিলেন না। ২৯ বলে ১৬ রান করে দলের ৮৩ রানের মাথায় বিদায় নেন দিপু। অন্যদিকে তামিম তুলে নেন দারুণ এক ফিফটি। ফিফটি হাঁকিয়ে আরও বড় কিছুর দিকে ছুটতে থাকেন তামিম। আরেক পাশে চারে নেমে তার সাথে যোগ দেন জাকির হাসান। দারুণ খেলতে থাকা তামিম থেমেছেন দলের ১৩৫ রানের মাথায়। ৭০ বলে ৬৯ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলে বিদায় নেন তিনি।
এরপর জাকিরের সাথে যোগ দেন মোহাম্মদ মিঠুন। তবে দুজনের জুটি টেকেনি বেশিক্ষণ। জাকির ৪৫ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে দলের ১৫৪ রানের মাথায় বিদায় নেন। শেষে প্রায় একাই লড়াই চালিয়ে গেছেন মিঠুন। বাকিরা বলার মত আহামরি কিছু করে দেখাতে পারেননি। একের পর এক উইকেট হারিয়ে ৪৪.১ ওভার শেষে ২১৯ রানের মাথায় অলআউট হয়ে যান প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। ৪৮ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলেন মিঠুন। ৭৩ রানের দাপুটে জয় তুলে নেয় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
শেখ জামালের হয়ে ৪ উইকেট নেন টিপু সুলতান। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন সাইফ হাসান, রবিউল ইসলাম রবি এবং তাইবুর রহমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৯২/৬ (সাইফ হাসান ১১৫, সৈকত আলী ৪৩; হাসান মাহমুদ ৩/৬৪, রুবেল হোসেন ১/৫৩)।
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৪৪.১ ওভারে ২১৯/১০ (তামিম ইকবাল ৬৯, মোহাম্মদ মিঠুন ৪২; টিপু সুলতান ৪/৫৩, সাইফ হাসান ১/৪৪)
ফল: শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব ৭৩ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: সাইফ হাসান।