প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৫৭ এএম
জাতীয় ক্রীড়া দিবস আজ;
‘ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন, শেখ হাসিনার দর্শন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা দেশে পালন হচ্ছে এবারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস। প্রতি বছরের ৬ এপ্রিল পালন করা হয় দিবসটি। ১৮৯৬ সালের আজকের এই দিনে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে আধুনিক অলিম্পিক গেমস যাত্রা করেছিল। ২০১৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় দিনটিকে ‘উন্নয়ন ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস’ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।
পরের বছর থেকে বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে দিনটি। দিবসটি উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং দেশের বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন ও সংস্থা নানা কর্মসূচির আয়োজন করছে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় বর্ণাঢ্য এক র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। র্যালিটি শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্স, পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে শুরু করে হাইকোর্ট/শিক্ষা ভবন হয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে শেষ হবে।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে দেশের সব ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়া সাংবাদিক, প্রশিক্ষক, কর্মকর্তাসহ ক্রীড়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জাতীয় ক্রীড়া দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। এক বাণীতে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, জাতীয় ক্রীড়া দিবসের যে প্রতিপাদ্যটি (ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন, শেখ হাসিনার দর্শন) নির্বাচন করা হয়েছে তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। কারণ ক্রীড়াঙ্গনের যত বড় বড় অর্জন সবই শুভসূচনা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে ক্রীড়াঙ্গনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের শুভসূচনা করেন। ক্রীড়ানুরাগী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে, অর্জন করে টেস্ট খেলার বিরল মর্যাদা। মুজিববর্ষে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে হেসেখেলে জয়লাভ করছে। নেপালে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে বাংলাদেশ রেকর্ডসংখ্যক স্বর্ণপদকসহ অন্যান্য পদক অর্জন করেছে। আর্চার রোমান সানা টোকিও অলিম্পিকে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। স্পেশাল অলিম্পিকে আমাদের খেলোয়াড়রা অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছেন। আর সব অর্জনই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক দিকনির্দেশনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বগুণে।
তিনি বলেন, খেলাধুলাকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। ক্রীড়া অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি উদীয়মান খেলোয়াড় বাছাইয়ের লক্ষ্যে ক্রীড়া পরিদপ্তর কর্তৃক প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। নিয়মিত আয়োজিত হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৭ বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, শেখ রাসেল ডেভেলপমেন্ট কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বঙ্গবন্ধু জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিকস ও সাঁতার প্রতিযোগিতা এবং শেখ রাসেল বিচ ফুটবল টুর্নামেন্ট। আয়োজিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ ও বঙ্গবন্ধু আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট। প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দেশে-বিদেশে উন্নত ও আধুনিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার’ প্রবর্তন করা হয়েছে। সেরা খেলোয়াড় ও সেরা ক্রীড়া সংগঠকদের প্রতি বছর নিয়মিত জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের যে সমীহ জাগানিয়া অবস্থান। তার নেপথ্যে রয়েছে আমাদের জাতির পিতার অবিস্মরণীয় অবদান। জাতীয় জীবনে ক্রীড়ার অপরিসীম গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের পরপরই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে হা-ডু-ডুর অন্য সংস্করণ কাবাডিকে জাতীয় খেলার স্বীকৃতি প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু গঠন করেছিলেন ক্রীড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থাÑ যেটি আজকের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। একই বছর প্রতিষ্ঠা করেন ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ অন্যান্য ক্রীড়া ফেডারেশন। শাহাদাত বরণের মাত্র ৯ দিন পূর্বে অসহায় দুস্থ অসচ্ছল ক্রীড়াসেবীদের কল্যাণে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’।