প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪ ০৫:০৬ এএম
অনুশীলনে উজ্জীবিত আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা
আর্জেন্টিনা- বিশ্বের সেরা দলের একটি। মাঠের পারফরম্যান্স তো সেটাই বলে। গত দুই বছর ধরে দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছে আলবিসেলেস্তেরা। আর ফিফা র্যাঙ্কিং বিচারে লিওনেল মেসির জন্মভূমি এখন তো ফুটবল দুনিয়ার রাজা। কেননা র্যাঙ্কিংয়ের রাজত্বটা অনেক দিন ধরেই তাদের দখলে। বিশ্বকাপ জয়ের দিক থেকে সেরা এখন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার দেশ। সর্বশেষ ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে দারুণ ছন্দে আছে এখন আকাশি নীল-সাদা জার্সিধারীরা। সে সুবাদেই র্যাঙ্কিংয়ের নাম্বার ওয়ান দল এখন তারা।
মাঠের লড়াইয়ে এখন দাপুটে পারফরম্যান্স দিয়ে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। নিজেদের গত দুই ম্যাচেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। তার মধ্যে রয়েছে চিরশত্রু ব্রাজিলকে হারানোর সুখস্মৃতি। গত নভেম্বরে দশজনের সেলেসাওদের ১-০ গোলে ধরাশায়ী করেছে আর্জেন্টিনা। আর গত শনিবার ভোরে তো যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে এল সালভাদরকে। তিন দিনের বিরতি দিয়ে আজ ফের মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা। ভেন্যু সেই যুক্তরাষ্ট্র। তবে পাল্টে গেছে মাঠের প্রতিপক্ষ। কোস্টারিকার বিরুদ্ধে আজ তাদের লড়াই শুরু সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে। এ ম্যাচ থেকেও দাপুটে জয় চান আর্জেন্টাইনরা।
অন্যদিকে মাঠের পারফরম্যান্সে ঠিক বিপরীত প্রান্তে অবস্থান করছে কোস্টারিকা। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা অধারাবাহিক। এমন এক দলের লড়াই দুরন্ত আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। নিজেদের সবশেষ ম্যাচে হন্ডুরাসকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে মধ্য আমেরিকার দেশটি। এই জয়ের সুখস্মৃতি প্রেরণা জোগাবে কোস্টারিকাকে। অঘটনের জন্ম দিতে পারে কোস্টারিকাও। সে সামর্থ্য তাদের আছে। কিন্তু আজ তাদের মাঠের ‘শত্রু’ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ফুটবল দল আর্জেন্টিনা। যারা কি না ফুটবল দুনিয়ার সেরা পাওয়ার হাউস আর পরাশক্তির একটি। আর্জেন্টিনার অস্ত্রভান্ডারে যে দুর্দান্ত সব ‘মারণাস্ত্র’ রয়েছে। তাতে করে মাঠে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যেতে পারে কোস্টারিকার ওপর দিয়ে। এ ম্যাচে নেই লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর না থাকায় আক্রমণের দায়িত্ব থাকবে তাদের সবার কাঁধে। তবে মেসি ছাড়াও আর্জেন্টিনা যে ভয়ানক সেটা তারা প্রমাণ করেছেন এল সালভাদরের বিপক্ষেই। থেকে গেছেন তারা ক্লিন শিট।
বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে কোচ লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা গোল হজম করেছেন মাত্র দুটি। সেও গত নভেম্বরে উরুগুয়ের বিপক্ষে। বিশ্ব মঞ্চ কাঁপানোর পর এটাই এখন পর্যন্ত তাদের একমাত্র হার। কাতারে বিশ্ব জয়ের পর থেকে কোনো গোল হজম না করে আর্জেন্টিনা জিতল দশ ম্যাচ। বিশ্বকাপ শেষে ১১ ম্যাচ খেলে ১০টাতেই জয় পেয়েছে তারা। এবং সেটা ক্লিন শিট থেকেই। গোল হজম করা ম্যাচটাই হেরেছে তারা কেবল। এদিকে মাত্র ছয় ম্যাচ খেলেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে আর্জেন্টিনা। কনমেবলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে এখন মেসির দল।
চলতি গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসতে যাচ্ছে কোপা আমেরিকার আসর। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা তাদের শিরোপা ধরে রাখতে চাচ্ছে। যে টুর্নামেন্টে তাদের প্রথম প্রতিপক্ষ কানাডা। কোস্টারিকাও খেলবে লাতিন আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব কেড়ে নেওয়ার মিশনে। এ আসর শেষে রয়েছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ। সব কিছু মিলিয়ে নিজেদের জয়ের ধারায় থাকতে চাচ্ছে আর্জেন্টিনা। সেটা যে করেই হোক না কেন।
ইনজুরি নিয়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন মেসি। মেসি মাঠে থাকলে তো আর্জেন্টিনা শক্তিশালী। না থাকলেও আর্জেন্টিনা কঠিন প্রতিপক্ষ। এমনটাই জানান লিভারপুলের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ম্যাক আলিস্টার, ‘লিও (মেসি) না থাকলে আমাদের আরও শক্তিশালী হতে হবে। কারণ, এর অর্থ হলো আমাদের সেই খেলোয়াড়টি নেই, ভুল হলে যে আমাদের বাঁচাতে পারে। অন্যদিকে মেসির উপস্থিতিতে আমাদের প্রতিপক্ষরা একটু বেশি ভীত হয়ে পড়ে, যা কি না স্বাভাবিকও। পাশাপাশি আমাদের এমন খেলোয়াড়ও আছে, যারা ইউরোপের বড় ক্লাবে খেলে। ফলে প্রতিপক্ষ যখন আর্জেন্টিনা দলকে দেখে, তারা জানে যে এটা সহজ ম্যাচ হবে না।’